৮৬ বছর বয়সে শৃঙ্গ জয় করে গিনিস রেকর্ড!

ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস June 2, 2016 738
৮৬ বছর বয়সে শৃঙ্গ জয় করে গিনিস রেকর্ড!

৮৬ বছর বয়সে কিলিমাঞ্জারো শৃঙ্গ জয়৷ অদম্য সাহস ও মনের জোরেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন রাশিয়ার অ্যাঞ্জেলা ভোরোবেভা৷ এ ভাবেই গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলে ফেলেছেন রাশিয়ার এই প্রবীণা৷ কিলিমাঞ্জারোর শৃঙ্গে পৌঁছে অ্যাঞ্জেলা এতটাই অভিভূত, সহযাত্রীর হাত ধরে নেচেও নিয়েছেন খানিকটা৷ কি ভাবে পারলেন এই কঠিন কাজটা?


অ্যাঞ্জেলার কথায়, 'খুবই কঠিন কাজ ছিল৷ প্রথম দিন আমরা একটা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম৷ দ্বিতীয় দিন যেন মনে হল কানের মধ্যে একটা অদ্ভুত আওয়াজ হচ্ছে৷ তার পরের দিন কথাই বলতে পারছিলাম না৷ কানে ব্যথা লাগছিল৷ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমাকে ফিসফিস করে কথা বলতে হয়েছে৷


কিছু খেতেও পারিনি৷ শুধু চা আর মধু খেয়ে থেকেছি৷ সকালে যখন যাত্রা শুরু করেছি তখন রোদ ঝলমল আকাশ, তার পরই হয়তো বৃষ্টি৷ ভিজে একাকার হয়ে গিয়েছে, কিন্তু হাল ছাড়িনি৷ আমি বিশ্বাস করি, কোনও জিনিস এক বার শুরু করলে শেষ না হওয়া অবধি থামতে নেই৷


'জানালেন, বিয়ের পর বরের সঙ্গে ভালোই ঘুরেছেন, কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর ১৫ বছর ঘোরাঘুরি পুরো বন্ধ ছিল৷ তার পর মেয়ের সঙ্গে কখনও গিয়েছেন তিউনিসিয়া, কখনও আবার কেপ টাউনে গিয়ে 'টেবল মাউন্টেনে' উঠেছেন৷ মরিশাসে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটিয়েছেন অ্যাঞ্জেলা৷


আর তখন সমুদ্রের ৩৫ মিটার নিচে ডুব দিয়ে প্রবালের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ভোলেন নি৷ টাইমস অপ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ খরব জানা যায়। সিডনিতে গিয়ে ১৫০০টি সিঁড়ি টপকে উঠেছেন সিডনি হারবার ব্রিজে৷ কখনও আবার মেয়ের হাত ধরে পৌঁছে দিয়েছেন ফিজিতে৷ এক কথায় বয়সকে তোয়াক্কা না করেই পৃথিবী চষে বেরিয়েছেন এই প্রবীণা৷


ঘোরার নেশা এতটাই ছিল, দু'বছর ধরে টাকা জমাতেন তারা৷ তার পর বেরিয়ে পড়তেন অভিযানে৷ তবে, কিলিমাঞ্জারো অভিযান, এই সবের থেকে অনেক কঠিন ছিল৷ অ্যাঞ্জেলার কথায়, 'লেকে যখন প্রশ্ন করে কি ভাবে এতদূর উঠলাম, আমি তাদের বলি, এক বার যখন শুরু করেছি, আমার থামার উপায় ছিল না৷


আমি কোনও রেকর্ড ভাঙার কথা ভেবে আরোহণ শুরু করিনি৷ ইচ্ছের জোরেই এ কাজ করেছি৷ যখন আমার সাফল্য নিয়ে সবাই মাতামাতি করছিল, আমার খুব অবাক লাগছিল৷ আমার ইচ্ছে হয়েছি, আমি পর্বতারোহণ করেছি৷


তাতে লোকের এত মাতামাতি কেন? পরে যখন জানলাম রেকর্ড ভাঙতে পেরেছি, আমার নিজেরও খুব আনন্দ লাগল৷ তবে আমার ইচ্ছেপূরণ হওয়ার আনন্দই সবচেয়ে বেশি৷ '৮৬ বছর বয়সি অ্যাঞ্জেলার মতে, মানুষের ইচ্ছেশক্তিই আসল৷


কারও যদি ইচ্ছেশক্তি ও লক্ষ্যে পৌঁছনোর জেদ থাকে, তবে লক্ষ্য পূরণে কিছুই বাধা হতে পারে না৷