মুসলিম নারীর অবশ্যই পালনীয় কতিপয় আমল- শেষ পর্ব

ইসলামিক শিক্ষা May 30, 2016 1,028
মুসলিম নারীর অবশ্যই পালনীয় কতিপয় আমল- শেষ পর্ব

আপনি যে কোন কাজ করবেন শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলবেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমিনদের জন্য জগতের সর্বোৎকৃষ্ট আদর্শ। যখন তিনি কোন কাজ করতেন সর্বাবস্থাতেই আল্লাহর নাম পাঠ করতেন। কাজেই আল্লাহ তাআলার নাম স্মরণ করুন খাবার সময়, পান করার সময়, পোশাক পরিধান করার সময়, পবিত্রতা হাসিলের সময়, অজু করার সময় অর্থাৎ সর্বাবস্থাতেই বিসমিল্লাহ বলুন।

২.সর্বদা আপনার পোশাক পরিচ্ছদকে পরিস্কার রাখুন। আপনার শরীর, বাসস্থান, বিছানা, সমস্ত কিছুই পরিস্কার রাখতে চেষ্টা করুন। কারণ, পবিত্রতা ঈমানের অংশ। (মুসলিম) আবর্জনা ও দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস পবিত্রতার প্রতিকূল। আপনার বাচ্চাদের পোশাক পরিচ্ছদ, তাদের শরীর, মুখ মন্ডল, দাত ইত্যাদি পাক পরিস্কার রাখতে চেষ্টা করুন। কারণ, আপনার উপরই রয়েছে তাদের দেখাশুনার দায়িত্ব। আর তারা ভালভাবে গড়ে উঠবে আপনার মাধ্যমেই। তাদের জীবন হবে কল্যাণময় দু জাহানে।

৩. জামা কিংবা কামিজকে এতটা লম্বা রাখুন যেন উহা আপনার পায়ের পাতাদ্বয়কে ঢেকে রাখে এবং মাথাকে এমনভাবে কাপড় দিয়ে আবৃত করুন যেন বাহির থেকে চুল দেখা না যায়। আপনার নিজের বাড়ীতে পরিবারের লোকজনের মধ্যে মাত, পিতা, ভাই বোন ও সন্তানদের সম্মুখে এভাবেই চলাফেরা করবেন। মনে রাখবেন আপনার দেহ হতে যেন সুগন্ধি বের না হয়। আর অতিরিক্ত সাজগোছ করে বের হবেন না।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

أيُّمَا إمْرَأةٍ أَصَابَتْ بُخُوْراً فَلَا تَشْهَدَ مَعَنَا الْعِشَاءَ الأخِرَةَ

অর্থ: যে নারী সুগন্ধি ব্যবহার করেছে সে যেন এশার সালাতে অংশ গ্রহণ না করে। (মুসলিম)

৪. অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবেন না। কারণ ঘর হতে বেশী বেশী বের হওয়া কখনো প্রশংসনীয় নয় বরং ধিকৃত। এভাবে বের হওয়ার ফলে আস্তে আস্তে লাজ-শরম ও নম্রতা দূর হয়ে যায়। আর লজ্জা হলো ঈমানের অংশ। যখন লজ্জা চলে যাবে, তখন ধীরে ধীরে ঈমানও চলে যাবে।

৫. প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে যাওয়া। যেমন আত্বীয় স্বজনদের বাড়ীতে যাওয়া, উত্তম কাজ তথা ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদিতে যোগদান করা, সালাতের জন্য মসজিদে গমন করা। তখন আপনি আপনার শরীরকে মাথা হতে পায়ের পাতা পর্যন্ত উত্তমরূপে ঢেকে বের হবেন। আপনার কোন অলংকার যেন বাহির হতে দেখা না যায়। এমন কি বোরখার নীচের পোশাকও নয়। কারণ উহা মুমিনা মহিলাদের পর্দার খেলাফ। এবং শরীয়তের ও খেলাফ যা হলো সমস্ত

কল্যাণের মূল।



৬. দরজার সামনে এমনভাবে দাড়াবেন না যেন বাইরের লোক আপনাকে দেখতে পায়, এমনকি ছাদে কিংবা বারান্দায় দাড়াবেন না। কারণ এর ফলে নানা রকম অসুবিধার সৃষ্টি হয়, শান্তির বিঘ্ন ঘটে এবং বিপদেরও সম্মুখীন হতে হয়। কাজেই আপনার রবকে খুশী করার জন্য আনন্দ চিত্তে ঘরে থাকতে অভ্যস্ত হউন। তিনি আপনাকে যা দিচ্ছেন তাতেই যন্তুষ্ট থাকুন।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে যে সমস্ত আদেশ উল্লেখ করেছেন তা পরিপূর্ণভাবে মেনে চলুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীগণ হলেন, মুমিনদের মা এবং জগতের সবচেয়ে উত্তম নারী। তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলেন:

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآَتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ

আর তোমরা নিজগৃহে অবস্থান করো, প্রাচীন জাহিলী যুগের মত নিজদেরকে প্রদর্শন করো না। এবং তোমরা সালাত কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য থাক। (সূরা আহযাব, ৩৩)

৭. যদি কোন কারণে রাহিরে যেতে হয় তা হলে রাস্তার একপাশ দিয়ে চলুন। আর চলার পথে রাস্তা ঘাটে বাজারে জনসম্মুখে খাবেন না। যাত্রা কালে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলবেন না। কারণ উহা আপনার সম্ভ্রমকে নীচু করে। আপনার দ্বীনের জন্য ও ক্ষতিকর। পথে ঘাটে দেখবেন অনেক নারী খাবার খাচ্ছে, গল্প করছে, আড্ডা দিচ্ছে তাদের দেখে ধোকায় পড়বেন না। কারণ তারা অমুসলিম নারীদেরকে তাদের আদর্শ বানিয়েছে। আপনি সর্বদা নিজের মুসলিম পরিচয়কে বুকে ধারণ করুন। এতে আপনি সকল ফিৎনা হতে রাক্ষা পাবেন।