মুসলিম নারীর অবশ্যই পালনীয় কতিপয় আমল -পর্ব ২

ইসলামিক শিক্ষা May 30, 2016 983
মুসলিম নারীর অবশ্যই পালনীয় কতিপয় আমল -পর্ব ২

৩. লজ্জা : নিজকে এই বিশেষগুণে ভূষিত করুন। কারণ, উহা ঈমানের অঙ্গ। উহার মধ্যে রয়েছে সকল প্রকার ভাল আমল ও উত্তম কথার সমাহার। তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে সত্যিকারভাবেই লজ্জা করুন। তিনি যেন আপনাকে ঐ কাজ করতে না দেখেন যা তিনি অপছন্দ করেন। আর মালাইকাদেরকেও লজ্জা করুন। আর একাকী অবস্থায় কিংবা বাথরুমে যতটা না হলে নয় তার থেকে বেশী কাপড় খুলবেন না। নিজের স্বামীকে এবং পরিবারের লোকদেরকে এবং সমস্ত মানুষদের থেকে লজ্জা করতে চেষ্টা করুন। আজে বাজে কথা বলবেন না। অশ্লীল কথা যেন মুখ দিয়ে বের না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। এমন কোন কাজ করবেন না অথবা এমন কোন কথা বলবেন না যা আপনার সম্ভ্রমকে ধূলিসাৎ করে দেয়। কারণ লজ্জার সবটুকু উত্তম উহা মঙ্গল বয়ে আনে। নিজের কথা বর্তাকে সুন্দর করুন। দৃষ্টিকে হিফাযত করুন। কোন অবস্থাতেই চুল খোলা রাখবেন না। ওড়না দিয়ে সর্বদা মাথা ঢেকে রাখুন।

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ

আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। (সূরা নূর, ৩১)

হে মুমিনা! জেনে রাখুন, আপনার অবশ্যই পালনীয় কতিপয় কাজ রয়েছে। যা পালনে আপনার জীবনকে সুসংগঠিত করবে এবং এগুলি আপনাকে পূর্ণতা দান করবে। এর উপরই ভিত্তি করে গড়ে উঠবে আপনার জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ। এর দ্বারাই আপনার মধ্যে আসবে ইখলাস, আপনি হবেন সত্যবাদিনী।

নিম্নে উহাদের বিবরণ দেয়া হল। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট দুআ করি, তিনি যেন আপনাদের সঠিক জ্ঞানের অধিকারী হওয়ার তাওফীক দান করেন এবং আমল করার তাওফীক দেন। পালনীয় কাজগুলো খুবই সহজ যদি আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য উহা সহজ করে দেন। তাই এ কাজগুলি পালন করার জন্য আল্লাহর তাওফিক কামনা করুন।

এক. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত সর্বদা সঠিক সময়ে আদায় করতে চেষ্টা করুন। রুকু, ক্বিয়াম, সিজদা, জালসা বা বৈঠক সঠিকভাবে আদায় করবেন। প্রতিটি অঙ্গের মধ্যে খুশু আনতে চেষ্টা করবেন। সালাতে দাঁড়িয়ে চোখকে সিজদার স্থানে রাখবেন। সালাতের পর যে সমস্ত যিকর রয়েছে তা পাঠ করুন। উহার মধ্যে আছে তিনবার اسْتَغْفِرُاللهً আসতাগফিরুল্লাহ পাঠ করা। তারপর বলুন:

اَللَّهُمَّ أنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلَالِ وَالْإكْرَامِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু তাবারাকতা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।

অর্থ: হে আল্লাহ তুমি শান্তি দাতা, তোমার থেকেই শান্তি। হে মহাপরাক্রম ও সম্মানের অধিকারী! তুমি বরকতময়।



তার পর তিনবার নীচের দুআটি পাঠ করুন।

اَللَّهُمَّ أعِنِّيْ عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ

উচ্চারণ: আহুম্মা আ ইন্নী আলা যিকরিকা ও শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা।

অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার জিকির, শোকর ও সুন্দর পদ্ধতিতে ইবাদতের ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করো।

এর পর বলুন

لآ إلَهَ إلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيْكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَئيٍ قَدِيْرٌ.

উচ্চারণ: লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালা হুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।

অর্থ: আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই রাজত্ব আর প্রশংসা তাঁরই।

এর পর পাঠ করুন

الَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِماَ أعْطَيْتَ وَلَا مُعْطِيَ لَماَ مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الُجَدِّ مِنْكَ الُجَدُّ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা মানিয়া লিমা আতাইতা ওয়ালা মুতিয়া লিমা মানাতা ওয়ালা ইয়ান ফাউ যাল জাদ্দে মিনকাল জাদ্দু

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও, তা কেউ ঠেকাতে পারবে না। আর কেউ কোন জিনিস দিতে পারে না যদি তুমি না চাও। সৌভাগ্যর অধিকারীরা তোমা হতে ভিন্ন কিছু থেকে কিছুই লাভ করতে পারে না।

তারপর পাঠ করুন:

لآإلَهَ إلَّا الله وَلَا نَعْبُدُ إلَّا إيَّاه لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاء الُحَسَنُ الُجَمِيْلُ وُهُوَعَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া লা না বুদু ইল্লা ইয়াহু, লাহুন নিয়িমাতু ওয়া লাহুল ফাদলূ ওয়া লাহুস সানা উল হাসানুল জামিল ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।

অর্থ: আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোন মাবুদ নেই, আমরা একমাত্র তারই ইবাদত করি। সমস্ত নিয়ামতের ও প্রতিদানের মালিক তিনিই। তারই জন্য উত্তম ও সুন্দর প্রশংসাসমূহ এবং তিনি সমস্ত বস্তুর উপর ক্ষমতাবান।

তারপর ৩৩বার সুবহান্নাল্লাহ, ৩৩বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩বার আল্লাহু আকবার পাঠ করুন।