পৃথিবীর রহস্যঘেরা জায়গা সম্পর্কে ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য...

জানা অজানা May 15, 2016 2,097
পৃথিবীর রহস্যঘেরা জায়গা সম্পর্কে ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য...

পৃথিবীতে বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের মত এমন আরো অজস্র রহস্যঘেরা জায়গা আছে যা হয়তো অনেকেরই অজানা! আজ এরকমই দশটি জায়গা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। পৃথিবীরই একটি অংশ কিন্তু আজও এসব জায়গার রহস্য ভেদ করা সম্ভব হয়নি।


১. বিগোলো রেঞ্চ (Bigelow Ranch)

এটি ৪৮০ একরের একটি প্রাইভেত প্রপার্টি। আমেরিকার ইউটাহ রাজ্যের উত্তরে। এই জায়গার নামে অসংখ্য রিপোর্ট আছে যে এখানে অনেক UFO ভা ভিনগ্রহের যান, অদ্ভুত সমপ্রানী আর সুপারন্যাচারাল সব ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। যদিও ১৯৫০ সাল থেকেই এই জায়গাতে সব আজীব ঘটনা ঘটতে শুরু করে, কিন্তু সবচেয়ে রহস্যময়ী ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৪ সালে।


প্রথমদিন, যেদিন টেরি এবং গেইন এই জায়গায় মুভ করে কেনার পরে। ঐ দিন তারা এক বিশাল ভাল্লুক দেখতে পায়। প্রথমে তারা সেই ভাল্লুককে পোষ মানাতে চেয়েছিল দেখার পরে। কিন্তু ভাল্লুকটি ছিল আক্রমনাত্মক। যখন টেরি তার বন্দুক দিয়ে ভাল্লুকটিকে গুলি করেছিল, ভাল্লুকের কোনো খবরই হয়নি। অনেকটা সেই বন্দুকের গুলি ভাল্লুকের ক্ষতিই করতে পারেনি! কিন্তু পরে ভাল্লুকটি সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যায়। পয়েন্ট ব্ল্যাং রেঞ্জ থেকে শটগান দিয়ে গুলি করে একটা ভাল্লুকের শরীরে কোন ধরনের দাগ পর্যন্ত ফেলতে পারেনি টেরি। এটি কেমন প্রজাতির ভাল্লুক ছিল?


২. কুসংস্কারের পর্বতমালা

এই পর্বতমালা আমেরিকার ফিনিক্সে-এর পূর্ব দিকে অবস্থিত। আর নামেই বুঝা যাচ্ছে এই পর্বতের বৈশিষ্ট্য। স্থানীয় নাম Superstition Mountain। স্থানীয় ইতিহাসে ১৮০০ শতাব্দীতে জ্যাকব ওয়াল্ট্জ নামের এক লোক একটি অনেক বড় স্বর্নের খনি আবিস্কার করেন এই পর্বতমালায়। সে থেকে এই পর্বতের একটা নামকরন হয় Lost Dutchman’s Goldmine. সে তার মৃত্যশয্যা পর্যন্ত এই সোনাল খনির কথা গোপন রেখেছিল।


এরপরে যখন এই ব্যাপারটা জানাজানি হয়েছিল তখন অনেক মানুষ ওখানে সোনার খনির সন্ধানে গিয়ে মারা পড়েছে। সে থেকে শোনা যায় এসব নিহত হওয়া মানুষদের আত্মা নাকি এখনও ঘুরে বেড়ায় এই পর্বত শ্রেনীতে। অনেকেই বলেন, এই সোনার খনিকে পাহাড়া দেয় Tuar-Tums নামের এক ধরনের প্রাণী যারা বসবাস করে সেই পর্বতের নীচে থাকা অজস্র টানেলে। এপাচি গোত্রের লোকজনরা বলেন এই পাহাড়শ্রেনী নাকি দোযখের মুল দরজা।


৩. ব্রিগওয়েটার ট্রায়াঙ্গাল

এটি আমেরিকার ম্যাসাচুসটেস রাজ্য থেকে ২০০ কিমি দক্ষিন-পশ্চিমে, বোস্টনের দক্ষিণে অবস্থিত। আর এই জায়গাটা হলো সুপার ন্যাচারাল কাজ কারবারের ভান্ডার!


১৯৭০ সাল থেকে এই জায়গা দেখা যায়নি এমন আজীব জিনিষের সংখ্যা মনে হয় খুব কমই আছে। যেমন বড় লোম আর লম্বা পা-ওয়ালা মানুষ-আর বানরের মত দেখতে কিছু প্রাণী, থান্ডারবাডর নামের বিশাল আকারের কিছু পাখি, আর নানা রকম হিংস্র জন্তু জানোয়ার। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই জায়গাটি হলো UFO দেখা যাবার গুজবের কারখানা। মানে, এই জায়গায় UFO দেখা যাওয়ার গুজব সবচেয়ে বেশী শোনা যায়। ১৭৬০ সাল থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত এই জায়গায় ঘটেনি এমন অদ্ভুত ঘটনা খুব কমই আছে।


৪. আঞ্জকুনি লেক

এই লেকের নাম হয়তো আপনারা কখনও শুনেন নি? ১৯৩০ সালে এই লেকের পাশের একটা গ্রাম থেকে সব মানুষ উধাও হয়ে গিয়েছিল? একেবারে কর্পুরের মত হাওয়া – যেন বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছিল সবাই। ইতিহাস বলে এই গ্রামে কম করে হলেও ২০০০ লোক বসবাস করত। গ্রামে অনেক দোকান-পাট, রাইফেল বা অস্ত্র-সস্ত্র এবং ঘরবাড়ি ছিল – কিন্তু কোনো গ্রামবাসীকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। লাবাল্লি নামের এক ভদ্রলোক এই ঘটনার তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর একটা তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে ঐ গ্রামের যে কবসস্থান ছিল তার কবরগুলোর মধ্যে একটি কবরস্থান খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়। এবং এটাও নিশ্চিত করা হয় যে কোন প্রাণী এটি খুড়েনি বা প্রাকৃতিক ভাবেও খুলে যায়নি। গ্রামের ৩০০ ফিট দুরত্বে অনেক পোষা কুকুরের মৃতদেহও পাওয়া যায় যারা অদ্ভুত কোনো কারণে মরে গিয়েছিল।


৫. শয়তানের সমুদ্র

Devil’S Sea বা শয়তানের সমুদ্র (Dragon’s Triangle) – শুনেছেন এর কথা? এর কাজ-কারবার অনেকটা বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের মত। জাপানের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত এই আজীব জায়গায় হাজার হাজার ঘটনা রেকর্ড করা হয় যার কোনো ব্যাখ্যা নেই।


এই জায়গায় জাহাজ, প্লেন এমনকি মানুষও নাকি হাওয়ায় গায়েব হয়ে গেছে অনেকবার। জাপানিজ ফিশিং অথরিটি এই জায়গাকে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছিল অনেক আগেই। ১৯৫২ সালে জাপানী সরকার ৩১জন গবেষকসহ একটি জাহাজ পাঠিয়েছিল এই জায়গায়– আর বলাবাহুল্য সেই জাহাজ আর মানুষগুলোকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই জায়গাকে সবাই ভিনগ্রহবাসীর আস্তানা বলে। আবার অনেকেই বলে আটলান্টিকের হারানো সভ্যতা।