পিঁপড়ার চেয়ে কয়েক কোটি গুণ ছোট ইঞ্জিন!

নতুন প্রযুক্তি May 10, 2016 1,015
পিঁপড়ার চেয়ে কয়েক কোটি গুণ ছোট ইঞ্জিন!

পিঁপড়ার চেয়েও কয়েক কোটি গুণ ছোট আকৃতির যন্ত্র তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক। তাঁরা বলেছেন, বিশ্বের ক্ষুদ্রতম এই যন্ত্র বা ইঞ্জিনটি এতটাই ছোট যে তা খুব সহজেই জীবকোষের ভেতরের কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে।


কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্ভাবিত এ যন্ত্রের দৈর্ঘ্য ১ মিটারের কয়েক শ কোটি ভাগের এক ভাগ। পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হচ্ছে ‘ন্যানো-ইঞ্জিন’। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যান্ট’ (এএনটি)। এই অ্যান্ট মানে পিঁপড়া নয়। অ্যাকচুয়েটিং ন্যানো-ট্রান্সডিউসারের সংক্ষিপ্ত রূপ ‘অ্যান্ট’। আলো থেকে শক্তি উৎপাদন করতে পারে এবং অত্যন্ত ক্ষুদ্র বলেই যন্ত্রটির এমন নামকরণ। শুধু তাই নয়, এটি চলাফেরাও করতে পারে। আর সেটাও নিয়ন্ত্রণ করা যায় আলোর মাধ্যমেই।


গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কেমব্রিজের ক্যাভেনডিশ ল্যাবরেটরির গবেষক অধ্যাপক জেরেমি বমবার্গ। তিনি বলেছেন, ক্ষুদ্রতর এ ইঞ্জিনটি নিজের ওজনের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করতে পারে। পিঁপড়া যেমন নিজের ওজনের চেয়ে বেশি ওজনের বস্তু বহনে সক্ষম, এ ক্ষেত্রে অনেকটা তেমনই ঘটে।


জেরেমি বলেন, ‘এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত ইঞ্জিনগুলোর ক্ষেত্রে (জেট ইঞ্জিন থেকে শুরু করে আণবিক যন্ত্র পর্যন্ত) তাদের সক্ষমতার তুলনায় কম শক্তি পাওয়া গেছে। কিন্তু ন্যানো-ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টোটা। এর প্রতি একক ওজন থেকে ১০ ন্যানো-নিউটন পর্যন্ত বল পাওয়া সম্ভব, যা এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত ইঞ্জিনগুলোর প্রতি একক থেকে প্রাপ্ত বলের তুলনায় ১০ থেকে ১০০ গুণ বেশি।’


অনেকগুলো সোনার কণা দিয়ে ন্যানো-ইঞ্জিনটি তৈরি করা হয়েছে। সোনার কণাগুলোকে একে অপরের সঙ্গে বাঁধা হয়েছে তাপসংবেদী পলিমার দিয়ে। লেজার রশ্মির মাধ্যমে ইঞ্জিনটি উত্তপ্ত করলে এর কণাগুলো শক্তি সঞ্চয় করে পরস্পরের সঙ্গে আগের চেয়ে আরও দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ হয়। আবার শীতল হলে সোনার এ ক্ষুদ্র কণাগুলো খুব দ্রুত পরস্পর থেকে দূরে সরে যায়।


ক্যাভেনডিশ ল্যাবরেটরির গবেষক তাও ডিং বলেন, ‘এ যেন এক বিস্ফোরণ। ইঞ্জিনটি ঠান্ডা করতে পানি দেওয়ার পর জলীয় কণাগুলো পলিমারগুলোকে ঘিরে ধরামাত্র প্রবল গতিতে সোনার কণাগুলোকে উড়তে দেখলাম আমরা। এক সেকেন্ডের কয়েক লাখ ভাগের এক ভাগ সময়ে ঘটে গেল ঘটনাটা।’


গবেষক জেরেমি বমবার্গ বলেন, ‘ইঞ্জিনটি থেকে আমরা যে বল পাচ্ছি, তা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের সামনে এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো বলগুলোকে একমুখী করা। অনেকটা বাষ্পীয় ইঞ্জিনে পিস্টন যেভাবে কাজ করে, বলগুলোকে একমুখী করতে পারলে ক্ষুদ্রতর এ ইঞ্জিনটিও সেভাবে কাজ করবে।’