বাটলারের অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরিতে কলকাতাকে হারালো রাজস্থান

ক্রিকেট দুনিয়া April 17, 2024 1,129
বাটলারের অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরিতে কলকাতাকে হারালো রাজস্থান

জেতার জন্য রাজস্থান রয়্যালসের দরকার ৩৬ বলে আরও ৯৬ রান । ক্রিজে ৩৩ বলে ৪২ রান করা জস বাটলার। রভম্যান পাওয়েলকে কিছু সময়ের জন্য যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পাওয়ার পর বাকি দায়িত্বটা একার কাঁধে তুলে নিলেন ইংলিশ তারকা। আলোর গতিতে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে অবিশ্বাস্য ও স্মরণীয় একটি জয় পাইয়ে দিলেন তিনি। এতে বিফলে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সুনিল নারিনের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি।


মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে স্বাগতিকদের ২ উইকেটে হারিয়েছে রাজস্থান। বাটলারের বীরত্বে ২২৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ম্যাচের একদম শেষ ডেলিভারিতে।


শুরুতে ব্যাট করতে নামা কলকাতার হারিয়ে ফেলে ফিল সল্টের উইকেট। ১৩ বলে ১০ রান করে আবেশ খানের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন তিনি। এরপর ক্রিজে এসে সুনীল নারাইনের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটি গড়েন আংক্রিশ রাঘুবংশী। তার বিদায়ের পর দ্রুত আরও দুটি উইকেট হারিয়ে ফেলে কলকাতা।


৭ বলে ১১ রান করে শ্রেয়াস আয়ার ও ১০ বলে ১৩ রান করে আন্দ্রে রাসেল আউট হয়ে যান। এসব চাপ সামলে হাত খুলে খেলতে থাকেন নারাইন। ৪৯ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। কলকাতার জার্সিতে স্রেফ তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আইপিএলে তিন অঙ্কের দেখা পান নারাইন। এর আগে ভেঙ্কাটেশ আয়ার ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ছিল এমন কীর্তি।


১৮তম ওভারে এসে ট্রেন্ড বোল্টের বলে বোল্ড হওয়ার পর নারাইনের ইনিংসের ইতি ঘটে। ১৩ চার ও ৬ ছক্কার ইনিংসে ৫৬ বলে ১০৯ রান করেন তিনি। ৯ বলে ২০ রান করে দলের রানকে আরও একটু সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে যান রিঙ্কু সিং। দুটি করে উইকেট পান আবেশ খান ও কুলদ্বীপ সেন।



বড় লক্ষ্যে নেমে ঝড়ো সূচনার বিকল্প ছিল না রাজস্থানের সামনে। প্রথম ১১ বলে ২২ রান তুলে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ১৯ রান করে বৈভব অরোরার শিকার হন যশস্বী জয়সওয়াল। হার্ষিত রানা সাঞ্জু স্যামসনকে (১২) ফিরিয়ে দেন। তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে রিয়ান পরাগ (৩৪) হার্ষিতের তৃতীয় শিকার হলে। মাত্র ১৪ বলে ক্যামিও ইনিংস খেলে রিয়ান অষ্টম ওভারেই দলকে একশর কাছাকাছি নিয়ে যান।


কিন্তু দলীয় ৯৭ রানে তার বিদায়ের পর ১৩তম ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়ে বড় ধাক্কা দেন বরুণ চক্রবর্তী। তার সঙ্গে নারিন বল হাতে মিতব্যয়ী ছিলেন। তাতে করে চাপে পড়ে রাজস্থান। ১৩তম ওভারে ১২১ রানে ৬ উইকেট পড়ে তাদের।


ক্রিজে নামেন রভম্যান পাওয়েল। ১৪ ওভারে রাজস্থানের স্কোর ৬ উইকেটে ১২৮ রান। শেষ ৩৬ বলে ৯৬ রান দরকার। বাটলার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। সঙ্গে আগ্রাসী পাওয়েল। দুজনের ব্যাটে পরের দুই ওভারে ৩৪ রান করে রাজস্থান।


পাওয়েল ফুরিয়ে যাওয়ার আগে জ্বলে ওঠেন। ১৭তম ওভারে ১৩ বলে ২৬ রান করেন নারিনের শিকার হন তিনি। ওই ওভারে রাজস্থানের বোর্ডে জমা হয় ১৬ রান।


বোল্ট ব্যাটিংয়ে নেমে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। বাটলার স্ট্রাইকের জন্য মরিয়া থাকায় দ্বিতীয় রান নিতে গেলে নিউজিল্যান্ড ব্যাটার রানআউট হন। তাতে ভালো হয়েছে। ১৮তম ওভারে ১৮ রান এনে দেন বাটলার।


পরের ওভারে ইংলিশ ব্যাটারের চার-ছক্কার বৃষ্টিতে ১৯ রান যোগ হয়। তাতে শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৯ রানে। স্লো ওভার রেটিংয়ের অপরাধে শেষ ওভারে কলকাতার ফিল্ডিংয়ে পাঁচ জনের বদলে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে ছিলেন চার জন।


সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন বাটলার। বরুণের প্রথম বলে ছক্কা মেরে ৫৫ বলে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। পরের তিন বলে ডট হলে চাপে পড়েছিল রাজস্থান। পঞ্চম বলে দুটি রান নিয়ে স্কোরে সমতা আনেন বাটলার। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ইডেন গার্ডেন্সে স্বাগতিকদের হতাশায় ভাসান তিনি। ৮ উইকেটে ২২৪ রান করে রাজস্থান।


৬০ বলে ৯ চার ও ৬ ছয়ে ১০৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা বাটলার।


৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রাজস্থান। এক ম্যাচ কম খেলে ৮ পয়েন্টে দ্বিতীয় কলকাতা।