ছন্দহীন মুস্তাফিজ, পাথিরানা ঝলকে মুম্বাইকে হারালো চেন্নাই

ক্রিকেট দুনিয়া April 15, 2024 15,667
ছন্দহীন মুস্তাফিজ, পাথিরানা ঝলকে মুম্বাইকে হারালো চেন্নাই

মুম্বাইয়ের বিপক্ষে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান যেন ছিলেন বড্ড অচেনা। ম্যাচে চেন্নাইয়ের হয়ে বল হাতে ১ উইকেট পেলেও বেশ খরুচে ছিলেন বাংলাদেশের এই পেসার। তবে লঙ্কান পেসার মাথিশা পাথিরানার দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয় তুলে নিয়েছে চেন্নাই। আগে ব্যাটিং করে ৪ উইকেটে ২০৬ রানের বড় স্কোর পায় চেন্নাই। জবাবে মুম্বাই ৬ উইকেটে ১৮৬ রানেই থেমে যায়। এতে হাইস্কোরিং ম্যাচে ২০ রানের জয় পায় চেন্নাই।


ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রাতের খেলায় টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চেন্নাই ৪ উইকেটে ২০৬ রানের বড় স্কোর পায়। জবাবে মুম্বাই ৬ উইকেটে ১৮৬ রানেই থেমে যায়।


ঘরের মাঠে ২০৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় মুম্বাইকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত শর্মা ও ঈশান কিষাণ। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তারা দলকে ৬৩ রান এনে দেন। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে মোস্তাফিজুর রহমান দেন ৮ রান। কাটার মাস্টার পঞ্চম ওভারে আবারো বোলিংয়ে এসে হন আরও ব্যয়বহুল, দিয়ে বসেন ১৮ রান।


মাথিশা পাথিরানা অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসেই হানেন জোড়া আঘাত। প্রথম বলেই শার্দূল ঠাকুরের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ১৫ বলে ২৩ রান করা কিষাণ।


দুই বল পরেই বাউন্ডারি লাইনে মোস্তাফিজের চোখ ধাঁধানো ক্যাচে রানের খাতা না খুলে বিদায় নেন সূর্যকুমার যাদব। লঙ্কান পেসার পাথিরানার বাউন্সার ডিপ থার্ডম্যানের উপর দিয়ে সূর্যকুমার উড়িয়ে মারতে যান। বাউন্ডারির কাছে থাকা দ্য ফিজ দুই হাতে বল ধরেন। শরীর সীমানা দড়ির বাইরে যাওয়ার আগের বল শূন্যে ভাসিয়ে দেন। পরে সীমানা দড়ির ভেতরে ঢুকে বল তালুবন্দি করেন।


রোহিত অবশ্য আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যান, তুলে নেন ফিফটি। তিলক ভার্মাকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন। তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৬০ রানের জুটি।


পাথিরানা ১৪তম ওভারে এসে আবারো পান উইকেট। তিলক ২০ বলে ৫ চারে ৩১ রানে শার্দূলকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। জয়ের জন্য তখন মুম্বাইয়ের দরকার ছিল ৩৭ বলে ৭৭ রান।


একপর্যায়ে কমতে থাকে স্বাগতিকদের রানের গতি। ১৫তম ওভারে শার্দূল মাত্র দুই রান ব্যয় করেন। সমীকরণ তখন দাঁড়ায় ৩০ বলে ৭৫ রান।

পরের ওভারে তুষার দেশপান্ডে তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়ার উইকেট, খরচ করেন তিন রান।


মোস্তাফিজ ১৭তম ওভারে এসেই টিম ডেভিডের কাছে দুই ছক্কা হজম করেন। তৃতীয় বলে অবশ্য ডেভিডকে ড্রেসিংরুমে ফেরান টাইগার পেসার। লং অফে ক্যাচ নিতে ভুল করেননি রাচীন। যদিও খরুচে মোস্তাফিজ ওভারটিতে ১৯ রান দিয়ে বসেন।


ঝলসে ওঠা পাথিরানা ১৮তম ওভারে রোমারিও শেফার্ডকে বোল্ড করে চতুর্থ উইকেটের দেখা পান। পরের ওভারে আবারো বোলিং আক্রমণে এসে আরও ১৩ রান খরচ করে। চার ওভারে এক উইকেট পেলেও প্রতিপক্ষকে দেন ৫৫ রান।


পাথিরানা ম্যাচের শেষ ওভারে বল হাতে নেন। তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন রোহিত। আইপিএলে এটি তার দ্বিতীয় শতক। অভিজ্ঞ এ ব্যাটার ৬৩ বলে ১১ চার ও ৫ ছক্কায় ১০৫ রানে অপরাজিত থাকলেও দলকে জেতাতে পারেননি।


চেন্নাইয়ের হয়ে বল হাতে দুরন্ত পাথিরানা ২৮ রান খরচায় পান ৪ উইকেট।


এর আগে দলীয় আট রানে আজিঙ্কা রাহানের উইকেট হারালেও চেন্নাইয়ের বাকি টপ অর্ডার ব্যাটাররা রানের দেখা পান। দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রান যোগ করেন রাচীন রবীন্দ্র ও অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। ২১ রান করা রাচীন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে জুটি ভাঙে।


ঋতুরাজ ও শিভম দুবে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৯০ রানের জুটি। দুজনই ফিফটির দেখা পান। ৪০ বলে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলে মোহাম্মদ নবির হাতে ধরা পড়েন ঋতুরাজ।


চতুর্থ উইকেটে ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে আরও ৩৬ রান যোগ করেন দুবে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হইয়ে ১৭ রানে ফেরেন মিচেল। এরপর মহেন্দ্র সিং ধোনি টানা তিন বলে মারেন ছক্কা। ইনিংসের শেষ বলে দৌড়ে দেন দুই রান। দুবে ৩৮ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৬৬ ও ভারতের সাবেক অধিনায়ক ধোনি ৪ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন।


হার্দিক পান্ডিয়া দুই উইকেট পেলেও চার ওভারে খরচ করেন ৪৩ রান।


আইপিএলের টেবিলের তিন নম্বর স্থান ধরে রাখা চেন্নাইয়ের ৬ ম্যাচে পয়েন্ট ৮। হারের পর এক ধাপ নিচে নেমে আটে মুম্বাই ৪ পয়েন্টেই রয়েছে। ছয় খেলায় ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রাজস্থান রয়্যালস।