শিরোপা জেতার মত দল গড়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

বিপিএল ২০২২ নিউজ December 28, 2021 4,774
শিরোপা জেতার মত দল গড়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

ড্রাফটের আগে মোস্তাফিজুর রহমানকে দলে নিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ড্রাফটে প্রথম ডাকের সুযোগ পেয়েই তারা দলে নেয় লিটন দাসকে। শুরুতেই তারা বুঝিয়ে দেয় দেশের ক্রিকেটের সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রতি তাদের কোন আগ্রহ নেই । বিদেশি ক্রিকেটার বাছাইয়েও সবার চেয়ে এগিয়ে কুমিল্লা। এবার বিপিএল বিদেশি সবচেয়ে বড় তিন তারকাই তাদের দলে। দলটি জানিয়েছে পুরো আসরেই খেলবেন ফাফ দু প্লেসি, সুনিল নারাইন ও মঈন আলি।


সোমবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের লটারি ভাগ্যে শুরুতেই কথা বলে কুমিল্লার হয়ে। ড্রাফট থেকে যেকোনো একজন দেশি ক্রিকেটার দলে নেওয়ার সুযোগ পায় তারা। তাদের সুযোগ ছিল তামিম ইকবাল, মাশরাফি মর্তুজাদের দলে নেওয়ার। কিন্তু প্রথম ডাকে কুমিল্লা পছন্দ করে লিটনকে।


ডানহাতি ওপেনার লিটনও দেশের ক্রিকেটে বড় নাম। কিন্তু সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি বাদ পড়েন টি-টোয়েন্টি দল থেকে। টেস্টে নেমেই অবশ্য করেন সেঞ্চুরি, সিরিজে করেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান। যদিও খেলাটা যখন টি-টোয়েন্টি, ওই সংস্করণের ছন্দেই আসতে পারত বিবেচনায়। তবে টি-টোয়েন্টিতে লিটনের বাজে ফর্ম সত্ত্বেও তার উপর আস্থা রেখেছে কুমিল্লা। এর আগেও কুমিল্লার হয়ে খেলে ঝলক দেখিয়েছেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই দাপুটে ব্যাটসম্যান লিটন হতে পারেন কুমিল্লার ট্রাম্পকার্ড।


লিটনের সঙ্গী হিসেবে অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েসকে ওপেনিংয়ে রেখেছে কুমিল্লা। ইমরুলও কুমিল্লার পুরনো কাণ্ডারি। সর্বশেষ কাপ জেতায় কুমিল্লার নেতৃত্বও দেন ইমরুল। বিপিএলে বেশিরভাগ খেলা হবে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই ধরনের মন্থর উইকেটে ইমরুল হতে পারেন কার্যকর। এই দুজনের ব্যাকআপ হিসেবে তরুণ পারভেজ হোসেন ইমনকে রেখেছে কুমিল্লা। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ইমন। বিস্ময়করভাবে ড্রাফটে তার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছিল না কোন দল। একদম শেষ দিকে গিয়ে কুমিল্লা ইমনকে দলে টানে। নিঃসন্দেহে এটি ভালো পছন্দ। আগ্রাসী মানসিকতার ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে জুতসই ব্যাটসম্যান এই বাঁহাতি।


ব্যাটিং অর্ডারে কুমিল্লার সবচেয়ে বড় নাম দু প্লেসি। দক্ষিণ আফ্রিকান এই অভিজ্ঞ তারকা পেতে পারেন দলটির নেতৃত্বও। পরিস্থিতি অনুযায়ী ধরে খেলা, বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে রান বাড়ানোর দুই কাজই করতে পারেন তিনি। অলরাউন্ডার মঈন আলি চার ওভার অফ স্পিনের সঙ্গে তাকে যেকোনো পজিশনে ব্যাট করতে পাঠানো যাবে। তেড়েফুঁড়ে মারার ক্ষমতা আছে মঈনের। একইরকম ইউটিলিট ক্রিকেটার নারাইনও। প্রয়োজনে নারাইনকে নামানো হতে পারে ওপেনিংয়ে। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বড় এই তারকা কুমিল্লার একাদশের সমন্বয় আনতে রাখবেন বড় ভূমিকা।


বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে তরুণ মাহমুদুল হাসান জয় ও অভিজ্ঞ মুমিনুল হককে রেখে ভারসাম্য এনেছে কুমিল্লা।


দু প্লেসির ব্যাকআপও বেশ জুতসই কুমিল্লার। শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিসকে নিয়েছে তারা। উপমহাদেশীয় উইকেটে যিনি হতে পারেন ভীষণ কার্যকর।


ব্যাটিং বিবেচনায় কুমিল্লার বোলিং আক্রমণও পিছিয়ে নেই। দেশ সেরা পেসার মোস্তাফিজ আছেন তাদের দলেই। পেস বোলার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওশান টমাসকে নিয়েছে কুমিল্লা। টমাসের গতি প্রতিপক্ষের জন্য হতে পারে ভোগান্তির কারণ। তবে একাদশে সর্বোচ্চ তিন বিদেশি খেলার সুযোগ থাকায় টমাসকে বেঞ্চেই সময় কাটাতে হবে বেশি। দেশিদের মধ্যে আছেন আবু হায়দার রনি, শহিদুল ইসলাম, সুমন খান। তরুণ পেসার মেহেদী হাসানকেও রেখেছে তারা। এরমধ্যে রনি বেশ অভিজ্ঞ। সুমনের পারফরম্যান্স জুতসই। শহিদুল ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে বেশ কার্যকর।


বিশেষজ্ঞ স্পিন অপশনে কিছুটা ভুগতে হতে পারে কুমিল্লাকে। বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার। কিন্তু এখনো বড় কোন আসরে নিজেকে চেনানো হয়নি তার। নাহিদুল ইসলাম থাকবেন নারাইনের ব্যাকআপ হিসেবে।


বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স স্কোয়াড:



সরাসরি: মোস্তাফিজুর রহমান, সুনীল নারাইন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), ফাফ ডু প্লেসি (দক্ষিণ আফ্রিকা), মঈন আলী (ইংল্যান্ড)।


ড্রাফট থেকে দেশি: লিটন দাস, শহিদুল ইসলাম, ইমরুল কায়েস, তানভীর ইসলাম, আরিফুল হক, নাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, সুমন খান, মুমিনুল হক, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, পারভেজ হোসেন ইমন, আবু হায়দার রনি ও মেহেদী হাসান।


ড্রাফট থেকে বিদেশি: কুশল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা), ওশানে টমাস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।