সাহারা মরুভূমির জানা-অজানা!

জানা অজানা May 1, 2016 2,243
সাহারা মরুভূমির জানা-অজানা!

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মরুভূমি সাহারা। আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত সাহারার বিস্তৃতি ৯৪ লাখ বর্গ কিলোমিটার। উত্তর আফ্রিকার পুরোটা জুড়েই এর বিস্তার। মিসর, মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া, লিবিয়া, সুদান, নাইজার, মালি পর্যন্ত সাহারা মরুভূমি বিস্তৃতি।


সাহারাজুড়ে রয়েছে পাহাড়, মালভূমি, বালি ও অনুর্বর ভূমি। বেশ কিছু মরূদ্যানও আছে সাহারায়। এসব মরূদ্যানে সাহারার বেশির ভাগ লোক বাস করলেও কিছু কিছু যাযাবর উপজাতি বাস করে আরো দুর্গম অঞ্চলে।


সব মিলে সাহারাজুড়ে লোকসংখ্যা ২০ লাখর বেশি নয়। এদের মূল জীবিকা ছাগল, ভেড়া ও উট পালন আর খেজুর, গম, বার্লি ইত্যাদি চাষাবাদ করা। সাহারার পানির উৎস হচ্ছে মরূদ্যান, কূপ ও কিছু প্রস্রবণ।


কিন্তু যাযাবররা যেহেতু নির্দিষ্ট এক জায়গায় থাকে না, তাই তাদের আরো একটি কাজ হচ্ছে বিভিন্ন পানির উৎস খুঁজে বের করা। মরুভূমি বলেই যে সাহারাতে মূল্যবান কিছু নেই, তা কিন্তু নয়। নানা ধরনের মূল্যবান খনিজ পদার্থ রয়েছে সাহারাতে; বিশেষ করে লিবিয়া ও আলজেরিয়া অংশে রয়েছে প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ।


তাছাড়া তামা, লোহা, ফসফেট ইত্যাদি অনেক খনিজ পদার্থ রয়েছে সাহারাজুড়ে। সাহারার আবহাওয়া মাত্রাতিরিক্ত গরম ও শুষ্ক। অবশ্য এ গরম শুধু দিনে; রাতে কিন্তু বেশ ঠাণ্ডা পড়ে। এমনকি কখনো কখনো পাহাড়ের চূড়ায় বরফও জমতে দেখা যায়। শীত ও গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ১০ থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত ওঠা-নামা করে।


সাহারায় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২০ সেন্টিমিটারের মতো। কখনো কখনো হানা দেয় ভীষণ ধূলিঝড়। সাহারায় গাছ যে শুধু মরূদ্যানেই জšে§, তা কিন্তু নয়। দেখা যায় মরূদ্যান ছাড়াও মরুভূমির কোনো কোনো জায়গায় ঘাস, গুল্ম ও ছোট ছোট গাছ জšে§। এসব গাছ তাদের প্রয়োজনীয় পানির সন্ধানে তাদের শিকড় বালি বা মাটির খুব গভীর পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।


আবার অনেক ক্ষেত্রেই গাছগুলো বাতাস থেকে পাতার মাধ্যমে পানি সংগ্রহ করে। সাহারা মরুভূমি যেমন জনবিরল, তেমনই অন্য প্রাণীপ্রজাতির সংখ্যাও খুব বেশি সেখানে নেই। সেখানকার প্রাণীদের মধ্যে উট, সাপ, গিরগিটি, শেয়াল, অ্যাডেক্স অ্যান্টিলোপ, উট পাখি, গাজলা হরিণ, মরুছাগল ইত্যাদি নাম উল্লেখ করা যায়।


তবে প্রতœতাত্ত্বিকদের মতে দশ হাজার বছর আগে সাহারার আবহাওয়া এখনকার মতো এতটা খারাপ ছিল না; বরং অনেকটাই ভালো ছিল। তখন সাহারাতে ছিল হ্রদ ও ছোট নদীর অস্তিত্ব। সে সময় সাহারাজুড়ে চড়ে বেড়াত হাতি, জিরাফসহ বিভিন্ন প্রাণী।