সাঙ্গাকারার কারণেই আইপিএলে খেলতে পেরেছিলেন মাশরাফি!

ক্রিকেট দুনিয়া May 30, 2020 7,887
সাঙ্গাকারার কারণেই আইপিএলে খেলতে পেরেছিলেন মাশরাফি!

মাশরাফির ক্যারিয়ারের সেরা সময় কোনটা ছিল – এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্যই বলতে হবে ২০০৯ সালের কথা। একের পর এক ম্যাচে টানা উইকেট শিকারের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে যাচ্ছিলেন ঐসময়টাতে। তাঁর এই আগুন ঝরা বোলিংয়ের তোপে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো ফাইনালে প্রায় জিতেই গিয়েছিল বাংলাদেশ, যদি কিনা শেষ মুহূর্তে মুরালিধরনের ব্যাট সেভাবে জ্বলে না উঠত।


তবে সে ম্যাচে ১০ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৮ রান দিয়েছিলেন তখনকার গতিদানব মাশরাফি। একইসঙ্গে ১টি উইকেটও শিকার করেছিলেন। ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ম্যাচটিতে হেরে গেলেও শ্রীলঙ্কান গ্রেট কুমার সাঙ্গাকারার নজরে এসে পড়ে তাঁর ওপর। পরবর্তিতে এই সাঙ্গাকারাই তাঁকে আইপিএলে খেলার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।


সম্প্রতি জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ‘বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের’ লাইভ আড্ডায় নিজের একমাত্র আইপিএল অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলার সময় এমনটি জানান নড়াইল এক্সপ্রেস নামে খ্যাত এই তারকা ক্রিকেটার।


তিনি বলেন, ‘ঐ সময় আমি সেরা ফর্মে বলতে পারেন, খুব ভালো অবস্থানে ছিলাম। ফাইনালে (ত্রিদেশীয় সিরিজের) আমি আর নাজমুল স্ট্রাইক বোলিং করেছিলাম। আমি ১৫১ (আসলে ১৫২ রান) সম্ভবত করেছিলাম। ওদেরও ৫ রানে ৩-৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল (আসলে ৬ রানে ৫ উইকেট)। ঐ ম্যাচেও আমি ১০ ওভারে ১৮ রান দিয়েছিলাম।’


তিনি আরো বলতে থাকলেন, ‘ঐ পুরো টুর্নামেন্ট আমি ভালো বোলিং করেছি। তার আগেও আমি ভালো বোলিং করেছি, ক্লাব ক্রিকেটেও ভালো বোলিং করেছি। আমি খুব ভালো ছন্দে ছিলাম। ফাইনাল শেষে রাতে যখন ডিনারে গেলাম, সাঙ্গাকারা আমাকে বলছিল, “সি ইউ সুন।” আমি ভাবতেছিলাম, তাদের সঙ্গে তো সম্প্রতি আমাদের কোনো সিরিজ নেই। তাহলে ‘সি ইউ সুন’ কেন বলল? ভাবলাম, “আচ্ছা, বলার দরকার তাই হয়তো বলেছে।” ’


সাঙ্গাকারার সেই কথার অর্থটা অবশ্য মাশরাফি পরে আইপিএলে খেলতে গিয়ে জানতে পেরেছিলেন। সেসময় তাঁর বন্ধু যুবরাজ সিং তাকে পুরো ঘটনাটি বলে শোনান। যুবরাজ তাঁকে জানান, ঐদিন মাশরাফির বোলিংয়ে সাঙ্গাকারা এতোটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি নিজেই পরে আইপিএলের নিলামের জন্য নিজের দল পাঞ্জাবে মাশরাফিকে নেওয়ার জন্য টিম কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেন। যুবরাজও তখন খেলতেন পাঞ্জাবের হয়ে।


কিন্তু মাশরাফিকে নিলামের জন্য নিয়ে আসলেও পরবর্তিতে তাঁকে নিজেদের করে নিতে পারেনি পাঞ্জাব। কারণ আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজি কোলকাতার নজরও ছিল তাঁর ওপর। আর তাঁকে পাওয়ার জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটি প্রচুর টাকা ঢালতেও রাজি ছিল। ফলে মাত্র ৫০ হাজার ডলারের মাশরাফিকে পরে শাহরুখ খানের কোলকাতা ৬ লাখ ডলারে কিনে নিয়েছিল।


এব্যাপারে ম্যাশের বক্তব্য, ‘পরে আমাকে যখন আইপিএলে পিক করে, আমি সাউথ আফ্রিকায় যাই খেলতে। যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক, এখনো আছে। তো (যুবরাজ) আমাকে বলতেছিল, ‘‘তোর ব্যাপারে সাঙ্গাকারা আমাকে বাংলাদেশ থেকে ফোন করেছিল যে, তোমরা যদি চাও তাহলে মাশরাফিকে নিতে পারো।’’ এটা আসলে পরে (যুবরাজের কথা শুনে) বুঝতে পেরেছি আরকি।’


তবে এতো টাকা খরচ করে মাশরাফিকে কিনেও খু্ব একটা লাভ করতে পারেনি কোলকাতা। আইপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচেই চার ওভার বোলিং করে বিনা উইকেটে ৫৮ রান দিয়ে বসেছিলেন ম্যাশ। যেকারণে বাকি দুুইটি মাস তাঁকে সাইড বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয়েছিল। এছাড়া এরপর আর কখনোই ভারত থেকে ডাক পাননি নড়াইল এক্সপ্রেস।


সূত্রঃ স্পোর্টসজোন২৪