বাংলাদেশ টিমই কি টার্গেট ছিল তাদের?

খেলাধুলার বিবিধ March 16, 2019 955
বাংলাদেশ টিমই কি টার্গেট ছিল তাদের?

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে যে নারকীয় তান্ডব এবং হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাতে পুরো বিশ্ব হতবাক! শুধু নিউজিল্যান্ড পুলিশ নয়, সারা বিশ্বের গোয়েন্দা সংস্থা এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এই ঘটনার আদ্যোপান্ত খতিয়ে দেখছে এবং এর কারণ অনুসন্ধ্যানে চেষ্টা করছে।


যদিও প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে এর কারণ হচ্ছে মুসলিম বিদ্বেষ। মুসলমানদের উপর বিদ্বেষের কারণেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অন্যান্য কার্যকারণ এবং সম্ভাবনাকেও নিউজিল্যান্ড পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না।


যে দুটি মসজিদে হামলা করা হয়েছিল, তার একটিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জুম্মার নামাজ আদায় করার কথা ছিল। দুদিন আগে থেকেই তারা যে এখানে জুম্মার নামায আদায় করবেন তা প্রচার করা হয়েছিল।


ওইদিন সকালে টিম মিটিং এবং মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের সংবাদ সম্মেলনের কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে যারা নামাজ পড়তে যাবেন তাদের মিনিট পাঁচ বিলম্ব হয়। এই সময়টা বিলম্ব না হলে এই ক্রিকেটাররা যে ঐ ঘটনার শিকার হতেন তা নি:সন্দেহে বলা যায়।


তাই নিউজিল্যান্ড পুলিশ বাংলাদেশ দলকে টার্গেট করে হামলা হয়েছিল কিনা সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তবে এখন পর্যন্ত যে তথ্য প্রমান পাওয়া গেছে, তাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে টার্গেট করে এই ঘটনা ঘটানোর তেমন কোন যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।


কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের সেখানে যাওয়ার বিষয়টি ছিল নিশ্চিত এবং নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় এতগুলো মসজিদ থাকার পরও হঠাৎ করে এই দুটি মসজিদকে টার্গেট করে কেন হামলা হলো সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


দুটির মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে হামলার ঘটনার পরে যখন বাংলাদেশি খেলোয়াররা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে তাদের টিম বসে অবস্থান নেন। তখন কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থাই তাদের ছিল না।


নিউজিল্যান্ড পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে এটাও বলেছেন, ঘটানাস্থলে যদি বাংলাদেশের খেলেয়াররা আর পাঁচ থেকে সাত মিনিট আগে যেত তাহলে তারাই হয়তো হতো সবচেয়ে বড় ভিক্টিম।


কাজেই এখানে সাদামাটাভাবে মুসলিম বিদ্বেষ বা মুসলমানদের উপর ক্ষোভ থেকে করা হয়েছে হয়েছে বলে সমীকরণ থাকলেও কয়েকটি প্রশ্ন এরিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। যেমন:


১.নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চেই কেন ঘটনা ঘটলো? নিউজিল্যান্ডের অন্য এলাকায় কেন এই ঘটনাটা ঘটলো না?


২. যে মসজিদে বাংলাদেশ টিমের যাওয়ার কথা ছিল, সেখানেই কেন আক্রমনটা করা হলো সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।


৩. বাংলাদেশ টিমের কোন নিরাপত্তা ছিল না কেন? কারণ আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী যে দল সেখানে যাবে সেখানে খেলোয়ারদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি আইসিসির কোড অব কন্ট্রাক্টে উল্লেখ আছে।


৪. বাংলাদেশ ক্রিকট দল যে হোটেলে থাকে। সেই হোটেলেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই কেন?


যদিও আপাতভাবে মনে করা হচ্ছে এই ঘটনাটি একটি বিচ্ছিন্ন উগ্রবাদী হামলা। কিন্তু এই ঘটনার পেছনে অন্যকোন উদ্দেশ্য আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এবং তারপরই এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উম্মোচিত হবে বলে নিউজিল্যান্ড পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দারা মনে করছেন।


সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার