ইমরুল কায়েসের আসল বাড়ি বাংলাদেশে নয়!

খেলাধুলার বিবিধ November 4, 2018 1,881
ইমরুল কায়েসের আসল বাড়ি বাংলাদেশে নয়!

বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেস্ট ওপেনার ইমরুল কায়েসের জন্মস্থান মেহেরপুর। সেই হিসেবে তিনি খুলনা বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়ে থাকেনে। দেশের অধিকাংশ জনগণ তার বাড়ি খুলনা বিভাগে বলেই জানেন।


কিন্তু আপনি কি জানেন এই ইমরুল কায়েসেরই গ্রামের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার সাহেবপাড়া গ্রামে। ইমরুলের খুব কাছের মানুষ ছাড়া বাকীদের একথা জানার কথাও নয়।


সুতরাং মেহেরপুরে জন্মগ্রহণ করলেও ভারতের নদিয়ার সাহেবপাড়া গ্রামে তার বাপ-দাদার ভিটে। ছোটবেলায় অনেক গল্প শুনেছেন সে গ্রামের। বেশ কয়েকবার ভারত গেলেও আগে কখনো গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়নি তার।


‘শিকড়ের টানে ইন্ডিয়ার বাড়িতে বাংলাদেশি ওপেনার’ শিরোনামে সংবাদ এসেছে ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায়। যেখানে ইমরুল কায়েস সম্পর্কে বলা হয়, বাপ-দাদার মুখে ‘ইন্ডিয়ার বাড়ির কত যে গল্প শুনেছেন, তার ইয়ত্তা নেই।


সেই গল্প শুনতে শুনতে যেন চোখের সামনে দেখতে পেতেন সবুজে ঘেরা ছোট্ট গ্রাম, গ্রামের পুকুরপাড়, খেলার মাঠ। কিন্তু বেশ কয়েকবার ভারতে এলেও নদীয়ার করিমপুর ২ ব্লকের সাহেবপাড়া গ্রামের সেই বাড়িটায় যাওয়া হয়নি বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের বাঁহাতি ওপেনিং ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের। অবশেষে মিটল সে সাধ। বাবা, মা ও এক বন্ধুকে নিয়ে গ্রাম ঘুরে গেলেন ইমরুল।


১১ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার মায়ের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসেন বাংলাদেশের ২৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেট-তারকা। মায়ের চিকিৎসার পরে কলকাতা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে সপরিবার সাহেবপাড়ায় যান তিনি। ইমরুলের দাদা কায়েম বিশ্বাসের জন্ম সাহেবপাড়াতেই।


পাঁচের দশকে কায়েম চলে যান পূর্ব পাকিস্তানের মেহেরপুরে। ইমরুলের বাবা বানি বিশ্বাসের জন্ম অবশ্য পূর্ব পাকিস্তানে। কিন্তু ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধকালে কায়েম বিশ্বাস সপরিবারে ফিরে আসেন সাহেবপাড়ায়। বছরখানেক বাদে পরিবারটি ফেরে বাংলাদেশে। তারপর থেকে বাংলাদেশেই।


সাহেবপাড়াতেই থাকেন ইমরুলের কাকা বজলু রহমান বিশ্বাস। বজলু বলেন, ‘কলকাতায় এসে সাগর (ইমরুলের ডাকনাম) ফোনে বলল গ্রামে আসতে চায়। ’ সেইমতো বৃহস্পতিবার বাড়িতে হইচই শুরু হয়ে যায়। বিশেষ পদ বলতে দেশি মুরগির মাংস আর শেষ পাতে রসগোল্লা।


কিন্তু ইমরুল একটি রুটি, সামান্য মাংস ছাড়া আর কিছুই খাননি। রাতেও তাই। তিনটি টেস্ট সেঞ্চুরির মালিকের এত কম খাওয়া নিয়ে হতাশ স্বজনরা। তাদের কথায়- ‘অত বড় মাপের খেলোয়াড়। অথচ খাওয়ার বেলায় লবডঙ্কা!’ তবে চা খেয়েছেন খুব।


অন্যদিকে ইমরুলের আসার খবর শুনে সকাল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে বজলু রহমানের বাড়ির সামনে। করিমপুর জামতলা নবারুণ সঙ্ঘের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রেগুলেটেড মার্কেটের মাঠে ব্যাট হাতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলতেও নেমে পড়েন তিনি। বেশ কিছু পরামর্শও দেন।


ইমরুলের ভাষ্য, ‘সেই ছেলেবেলা থেকে করিমপুর, সাহেবপাড়ার নাম শুনে আসছি। এই প্রথম এখানে আসার সুযোগ হলো। দাদু বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন। এই এলাকার মানুষের আন্তরিকতা, ক্রিকেট নিয়ে এমন উন্মাদনার কথা আমারও মনে থাকবে। ’ দুপুরেই ইমরুল সপরিবার বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন। যাওয়ার আগে কথা দিয়েছেন, আবার আসবেন।


সূত্রঃ অনলাইন