জেনে নিন বাবা-মা কে সবসময় খুশি রাখার উপায়।

লাইফ স্টাইল September 30, 2018 4,324
জেনে নিন বাবা-মা কে সবসময় খুশি রাখার উপায়।

নিজের গার্লফ্রেন্ড কে খুশি করতে হইতো অনেকেই অনেক কিছু করে ফেলেছেন। বন্ধু-বান্ধবের জন্মদিন থেকে শুরু করে নানা সময়ে নানা সময়ে নানা ভাবে খুশি করার চেষ্টা করে এসেছেন। কিন্তু বাবা-মাকে কইবার খুশি করার চেষ্টা করলেন?? যদি মনে করেন তা গুনে বের করা যাবে তাহলে সেটা লজ্জার ব্যাপার ই হবে বটে। যাদের জন্য আপনি এই দুনিয়ায় তাদের ই যদি খুশি রাখতে না পারেন তাহলে কি করে হবে??


বাবা মা আমাদের ছোট থেকে বড় করেছেন। সারাজীবন ও যদি প্রতিটি মূহুর্ত যদি তাদের সেবায় ব্যয় করি তবুও তাদের ঋণ শোধ হবেনা। সময়ে অসময়ে কারনে অকারনে বহুবার আমরা তাদের দুখীয়েছি, কাদিয়েছি। আমাদের খুশির কথা তারা সার্বখনিক চিন্তা করেন। তাদের খুশির কথাও তো আমাদের ভাবতে হবে তাইনা.?


কি করে বাবা মাকে খুশি করা যায় আজ আমরা তা নিয়েই আলোচনা করবঃ


১) তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়াঃ

জীবনে বাবা মার সাথে উল্টা পাল্টা ব্যবহার করে নি এমন মানুষ খুজে পাওয়া দায়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারনে আমরা তাদের কষ্ট দিয়েছি। তাদের প্রাপ্য সম্মান টুকু তাদের দিতে পারিনি। অফিসের বস কে দেখলে আমরা নমঃনম শুরু করে দেয়, কিন্তু বাবা মায়ের ক্ষেত্রে কখনোই তা হইনা। অথচ আমাদের থেকে সর্বচ্চো সম্মানটি কিন্তু তাদেরই প্রাপ্য। তাদের প্রাপ্য সম্মান তাদের দেওয়ার চেষ্টা করুন।


২) তাদের সাথে সদাচরণ করাঃ

বাবা-মাকে গালি দেওয়া অথবা তুই-তুকারি করা অনেকটাই এ যুগের ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। বলতে দ্বিধা নেই আমিও এমনটি করেছিলাম। এখন এর জন্য অনেক আফসুস হয়, নিজেকে অনেক ছোট মনে হয়। কি করে পেরেছিলাম জীবনে সব চেয়ে গুরুপ্তপূর্ন মানুষটির সাথে এমন করতে। নিজেকে শুধরানোর চেষ্টা করছি। আর যায় করুন দ্য়া করে নিজের বাবা মাকে গালি-গালাজ করবেন না। তাদের সাথে তুইতোকারি করে কথা বলবেন না। মার্জিত ভাষায় নিচু স্বরে তাদের সাথে কথা বলুন।


৩) সব সময় তাদের সাথে সত্য কথা বলুনঃ

সত্য বলা টা পৃথিবীতে কঠিনোতম কাজ গুলোর মধ্যে একটি। সবাই সত্য বলতে পারেনা, আপনি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিন। নিজে নিজে প্রতিজ্ঞা করুন নিজের বাবা মায়ের কাছে সব সময় সত্য কথা বলবেন।


৪) বিশেষ দিন গুলোর কথা মনে রাখুনঃ

বন্ধু-বান্ধব কিংবা প্রিয় মানুষটির জন্মদিন সহ অন্যান্য বিশেষ দিন গুলো আপনার ঠোটস্থ। তেমনি বাবা-মায়েরি জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী ও মনে রাখুন। তাদের কে সারপ্রাইজ দিন। দেখুন আপনার প্রতি তারা খুশি হবেন।


৫) তাদের কথার মূল্যায়ন করুনঃ

তাদের কথার সঠিক মূল্যায়ন করবেন সবসময়। যদি কোনবিষয়ে আপনাকে নিষেধ করে এবং আপনার ম্নে হয় তারা ভুল করছে তাহলে রেগে যাবেন না।হাসিমুখে তাদের কে বোঝানোর চেস্টা করুন, দেখবেন ঠিক বুঝে যাবে তারা।


৬) তাদের প্রশংসা করুনঃ

অনেকের কাছেই এটা লজ্জার ব্যাপার হতে পারে। বাবা-মায়ের প্রশংসার ব্যাপারে লজ্জা পাওয়া মোটেও ঠিকনা, তাই লজ্জা পাওয়া বন্ধ করুন এবং তাদের প্রশংসা করুন। উদাহরণ সরূপ আপনার মায়ের রান্নার প্রশংসা করতে পারেন আবার আপনার বাবার ব্যবসার উন্নতি হয়েছে দেখে তার বিচক্ষণতার প্রশংসা করতে পারেন।


৭) অপরিচিত এবং আত্মীয়-স্বজনদের সামনে তাদের লজ্জায় ফেলবেন নাঃ

বাবা মায়ের কথার ভুল ধরা অথবা তাদের কোন ভুলের জন্য সবার সামনে লজ্জায় ফেলা মোটেও ভালো কাজ নয়। তাদের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। কখনো কুরূচিপূর্ন ব্যবহার করবেন না।


৮) তাদের কে নিত্য নতুন বিষয়ে শেখানঃ

উপরের শিরোনাম টি একটু অবাক করতে পারে আপনাকে। কিন্তু এটি আপনার বাবা মাকে বেশি মাত্রায় খুশি করতে সক্ষম। আপনার বাবা মায়ের কাছে আপনি কথা বলতে শিখেছেন, লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়েছে তাদের কাছ থেকেই। তাদের মত করে কখনো আপনি তাদের কে কিছু শেখাতে পারবেন না কিন্তু নিত্য নতুন বিষয় গুলো তাদের বুজিয়ে দিলে তারা অনেক খুশি হবেন। যেমন আপনি প্রযুক্তি সম্পর্কে কে তাদের কে কিছুটা শেখাতে পারেন।


৯) তাদের কে সময় দিনঃ

সারাদিনে হাজারও কাজের মধ্যেও বাবা মায়ের জন্য সময় বের করতে হবে। তাদের সাথে খোলামেলা কথা বলুন বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করুন। অনেকেই তাদের বাবা মাকে সেকেলে মনে করেন। এটা মোটেও ঠিক নয়, আপনার যুগ অনুযায়ী সে যথেষ্ঠ না জানলেও তার যুগ অনুযায়ী তিনি যথেষ্ঠ জ্ঞানী। জিবনের বড় কোন সিদ্ধান্ত তাদের মাধ্যমে নিন। মনে রাখবেন জীবনের অভীজ্ঞতা আপনার থেকে তাদের অনেক বেশি।


১০) ধর্ম-কর্ম করুনঃ

সবার মা বাবাই চান তার ছেলে মেয়ে যেন একটু ধার্মিক হন। স্বাভাবিক কাজ কর্মের সাথে ধর্ম অনুসরন আপনার বাবা-মাকে একই সাথে গর্বিত ও খুশি করে তুলবেন।


১১) তাদের নিয়ে ঘুরতে যানঃ

সময় পেলেই বন্ধু-বান্ধবের সাথে ঘুরতে বের হওয়া আমাদের অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে, এটাকে আমি খারাপ বলছি না। তবে অবসর সময়ে কখনো কখনো বাবা-মাকে নিয়েও ঘুরতে বের হন। এতে করে আপনাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে এবং আপনার বাবা-মা ও অনেক খুশি হবেন।


১২) তাদের চাহিদা পূরন করুনঃ

তাদের কখন কি লাগে সেদিকে একটু নজর রাখতে হবে। আপনার সাদ্ধের মধ্যে থাকা তাদের ইচ্ছা গুলোকে পূরন করুন। ঈদে কিংবা পূজোই আর সবার সাথে তাদের জন্য কিছু কাপড়-চোপড় কিনুন।


১৩) সংসারের যাবতীয় কাজে তাদের সহয়তা করুনঃ

যদি সংসারের কোনো কাজে আপনার প্রয়োজন পড়ে তাহলে সর্বাত্তক সহায়তা করুন। সংসারের নানা কাজে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে এতে করে তারা অনেক বেশি খুশি হবেন।


১৪) বাবা মায়ের অপছন্দের কাজ থেকে বিরত থাকুনঃ

এমন অনেক কাজই আপনি করেন যা হইতো আপনার বাবা মায়ের পছন্দ না। সেটা হতে পারে দেরী করে বাসায় ফেরা, সিগারেট খাওয়া, অযথা টাকা নষ্ট করা, কোথায় যাচ্ছেন না যাচ্ছেন সেগুলো না জানানো ইত্যাদি। যেসকল কাজে আপনার বাবা মা অপছন্দ করেন কিংবা বিরক্ত হন সে সকল কাজ থেকে বিরত থাকুন।


১৫) আপনি কি করছেন না করছেন জানান তাদের কেঃ

আপনি কখন কি করছেন না করছেন জানান তাদের কে। সব তারা খোঁজখবর নিবে এমনটি আশা না করে নিজ থেকে সব কিছু জানানোর অভ্যাস তৈটি করুন। এটা তাদেরকে অনেক নিশ্চিত রাখবে।


পরিশেষে এতোটুকুই বলব যে বাবা মায়ের মতো আর কেউ আপনার এতটা আপন হতে পারবে না। তাই তাদের খেয়াল রাখুন।