জেনে নিন জনপ্রিয় কার্টুন সিরিজ মোটু-পাতলুর গল্প

জানা অজানা September 17, 2018 2,711
জেনে নিন জনপ্রিয় কার্টুন সিরিজ মোটু-পাতলুর গল্প

মোটু-পাতলু! নামটা শুনেই অনেকের ঠোঁটের ফাঁকে একচিলতে হাসি জমা হয়ে গেছে। এখনই না জানি ওদের কোনো হাস্যকর কাণ্ড, নয়তো কোনো অদ্ভুতুড়ে অভিযানের গল্প শোনা যাবে-মোটু-পাতলু এমনই মজার আর এতই জনপ্রিয়। আর জনপ্রিয় হবেই বা না কেন! একটা মোটকা লোক আর একটা শুঁটকো লোকের বন্ধুত্ব দেখলেই তো হাসি পায়। তার ওপর ওরা যেসব অদ্ভুত আর মজার সব কীর্তি করে!


মোটু-পাতলু বানানো হয়েছে নিকলোডিয়ান চ্যানেলের জন্য। সিজিআই এনিমেশনে বানানো এই কার্টুন সিরিজ অবশ্য কোনো গল্প থেকে না, বানানো হয়েছে একটা কমিক স্ট্রিপ থেকে। সেই স্ট্রিপের কৃতিত্ব, মানে মোটু-পাতলুর স্রষ্টা কৃপা শঙ্কর ভরদ্বাজ। একই নামের সেই কমিক স্ট্রিপ ছাপা হতো লটপট নামের কমিকস ম্যাগাজিনে। অদ্ভুত নামের এই ম্যাগাজিন ভারতে বেশ বিখ্যাত। মায়াপুরী গ্রুপ এই ম্যাগাজিন প্রথম বের করে ১৯৬৯ সালে। তখন থেকেই নিয়মিত বের হচ্ছে ম্যাগাজিনটি। কোনো বিরতি দূরে থাক, পাক্ষিক হিসেবে শুরু হওয়া ম্যাগাজিনটি পরে উল্টো আরো সপ্তাহে সপ্তাহে বের হতে শুরু করে। ম্যাগাজিনটির আরেকটি কমিক স্ট্রিপ অবশ্য আরো আগে থেকেই আমাদের দেশে তুমুল জনপ্রিয়-চাচা চৌধুরী।



অবশ্য সেই কমিক স্ট্রিপের সঙ্গে কার্টুন মোটু-পাতলুর কিছু পার্থক্যও আছে। যেমন, কমিক স্ট্রিপে ওরা ছিল দুই ভাই। আর কার্টুনে এসে ওরা হয়ে গেছে দুই জানের দোস্ত। ব্রাত্য হয়ে গেছে চেলা রাম, ঢেলা রাম আর আঙ্গুথানন্দ চরিত্রগুলো। এই কার্টুন সিরিজের পরিচালনা করেছেন সুহাস কেদার। আর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, মানে আঁকাআঁকিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন রণজয় চক্রবর্তী। কার্টুনের গানটি কম্পোজ করেছেন সন্দেশ সান্দিল্য, গেয়েছেন সুখীন্দর সিং।



কমিক স্ট্রিপ থেকে কার্টুন হিসেবে মোটু-পাতলু আত্মপ্রকাশ করে ২০১২ সালে। সে বছরের ১৬ অক্টোবর নিকলোডিয়ানে প্রচারিত হয় মোটু-পাতলুর প্রথম পর্ব 'জন বানেঙ্গা ডন'। এর পর থেকে প্রতিবছরই আত্মপ্রকাশ করেছে মোটু-পাতলুর নতুন নতুন সিজন। এ পর্যন্ত চার বছরে চার সিজনে মোটু-পাতলুর মোট ২০৮টি পর্ব প্রচারিত হয়েছে। কার্টুনটি মূলত হিন্দিতে বানানো হলেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে আরো ছয়টি ভাষায়-বাংলা, ইংরেজি, তামিল, তেলেগু, সিংহলিজ আর ইন্দোনেশীয়।



এনিমেশন বলে কার্টুনটিতে সবচেয়ে গুরুতর কাজগুলো ছিল ক্রিয়েটিভ টিমেরই। অভিনেতাদের অভিনয়টভিনয় করতে হয়নি, কেবল কণ্ঠ দিয়েই তারা কাজ সেরেছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছ সৌরভ চক্রবর্তী। সে একাই কণ্ঠ দিয়েছে মোটু-পাতলু, ঘষেটি রাম, চিঙ্গাম আর জনের হয়ে। অমি শর্মা কণ্ঠ দিয়েছে ড. ঝাটকার, করণ ত্রিবেদী দিয়েছে হেরা আর ফেরির, সংকল্প রাস্তোগি দিয়েছে চাওয়ালা আর নাম্বার ওয়ানের এবং রেণু শারদা কণ্ঠ দিয়েছে সবজিওয়ালির হয়ে। প্রথম দুই সিজনে নাম্বার টুর হয়ে কণ্ঠ দিয়েছিল ব্রায়ান ডি কস্তা। পরের দুই সিজনে তার বদলে কাজ করেছে রাজা।