আঙুল তার ২৪টি, গুপ্তধনের লোভে বলি চড়াতে প্রস্তুত আত্মীয়রা!

সাধারন অন্যরকম খবর September 4, 2018 2,498
আঙুল তার ২৪টি, গুপ্তধনের লোভে বলি চড়াতে প্রস্তুত আত্মীয়রা!

দুই হাতে পাঁচ পাঁচ করে দশ আর দুই পায়ে পাঁচ পাঁচ করে দশ- এভাবে মোট বিশটি আঙুল থাকে একজন মানুষের। কোনো অস্বাভাবিকতা বা দুর্ঘটনার ঘটনা না থাকলে, একজন মানুষ তা সে শিশু হোক বা বয়স্ক কিংবা তরুণ বা হোক বৃদ্ধ- আঙুল মোট বিশটিই থাকে।


কিন্তু ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরের এক বালকের চার হাত পায়ে ছয়টি করে মোট চব্বিশটি আঙুল রয়েছে। আর এই কারণে আত্মীয়রা তাকে বলি দিতে চায়! ঘটনা জানিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তার আতঙ্কিত বাবা।


সোমবার হিন্দি সংবাদমাধ্যম জনসত্তা.কম জানায়, প্রদেশের বারাবংকি জেলার গুরি নামক গ্রামের বাসিন্দা ফুন্নিলাল। সম্প্রতি তিনি তার পুত্র শিবানন্দনের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ, গায়েবি সম্পদের লোভে যে কোনো সময় নিজের আত্মীয়রা তাকে ধরে নিয়ে বলি চড়িয়ে দিতে পারে।


২৪ আঙুলওয়ালা ‘অদ্ভূত বালক’ শিবানন্দনের কথা জানাজানি হওয়ার পর কিছু তান্ত্রিক তার আত্মীয়দের জানায়- এই বিশেষ ছেলেটিকে বলি দিতে পারলে মিলবে গুপ্তধন, প্রভূত ধন-সম্পদের মালিক বনে যাবে তারা। এমন কথায় লোভে চকচক করে ওঠে কুসংস্কারাচ্ছন্ন আত্মীয়দের চোখ। তারা শিবাকে পশুর মতো বলি দেতে প্রস্তুতি নিতে থাকে।


এই খবর শিবার পিতার কানে যেতেই আতঙ্কে কলজে উড়ে যাওয়ার দশা হয় তার। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ছেলের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। শুধু তাই নয়- নিজের কাজকর্ম ফেলে দিনমান বাড়িতেই থাকছেন ছেলের সঙ্গে সঙ্গে। কারণ, কখন কোন অশুভ ঘটনা ঘটে যায় কে জানে!


একজন আত্মীয় পুলিশকে জানায়, এরইমধ্যে একদিন শিবানন্দনকে তার প্রভাবশালী আত্মীয়রা ধরে নিয়ে যায় এক বাগিচায়। সেখানে বিশেষ পূজা-পাঠের আয়োজন করা হয়। এর শেষে তাকে বলি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।


কিন্তু সেবার সে বেঁচে যায় একটি কারণে- ওই দিনটি ছিল শুক্রবার। কালোযাদুওয়ালা তান্ত্রিকদের মতে মোক্ষ তথা ধন-সম্পদ লাভের জন্য শিবানন্দনকে বলি দিতে হবে বৃহস্পতিবারে। অতি লোভী স্বজনরা এই বিষয়টি ভুলে গিয়েছিল। তাই ঠাণ্ডা মাথায় খুনের হাত থেকে বেঁচে যায় সে।


পরে তারা শিবাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেয় এবং সময় মতো ছেলেটিকে তারা ঠিকই বলি চড়াবে বলে জানায়। এর বিরোধিতা না করতে তার পরিবারকে শাসিয়েও আসে।


স্থানীয় পুলিশের সার্কেল অফিসার উমাশংকর সিং জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন তিনি। তার মতে, ফুন্নিলাল খুব দরিদ্র। তাই তিনি যতদিন সেখানে দায়িত্বরত থাকবেন, ততদিন শিবানন্দনের পড়ালেখার খরচ তিনি-ই চালাবেন। -কালের কন্ঠ