সুবাহানাল্লাহ, যে ব্যক্তি রজব মাসে ছোট্ট এ দোয়াটি পাঠ করবেন তার জন্যে বেহেশতে ১শ'টি শহর নির্মাণ করা হবে!

ইসলামিক শিক্ষা April 23, 2016 2,635
সুবাহানাল্লাহ, যে ব্যক্তি রজব মাসে ছোট্ট এ দোয়াটি পাঠ করবেন তার জন্যে বেহেশতে ১শ'টি শহর নির্মাণ করা হবে!

বিশেষ গুরুত্ববহ পবিত্র মাস ‘রজব’। এ মাসের কথা বহু রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। মহানবী (স.) বলেছেন, “রজব মাস হচ্ছে মহান আল্লাহর কাছে অত্যন্ত গুরুত্ববহ একটি মাস, ফজিলতের দিক থেকে কোনো মাস এর সমপর্যায়ের নয়। এ মাসে কাফেরদের সঙ্গেও যুদ্ধ করা হারাম।


রজব মাস আল্লাহর মাস, শাবান মাস আমার মাস এবং রমজান মাস হচ্ছে আমার উম্মতের মাস। যে ব্যক্তি রজব মাসের একটি দিন রোজা রাখে, মহান আল্লাহ্ তার উপর সন্তুষ্ট হন, তার প্রতি মহান আল্লাহর ক্রোধ দূর হয়ে যায় এবং জাহান্নামের একটি দরজা তার জন্য বন্ধ হয়ে যায়।”


হযরত মুসা ইবনে জাফর (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসের একটি দিন রোজা রাখে, জাহান্নামের আগুন এক বছরের জন্য তার থেকে দূর হয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি ৩ দিন রোজা রাখে তার উপর জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়’।


তিনি আরো বলেছেন : ‘রজব হচ্ছে বেহেশতের একটি ঝর্ণাধারার নাম; যার (পানি হচ্ছে) দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়ে মিষ্টি। যে ব্যক্তি এ মাসের একটি দিন রোজা রাখে সে অবশ্যই এ ঝর্ণাধারা হতে পানি পান করবে।


ইমাম সাদিক (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, মহানবী (স.) বলেছেন : ‘রজব মাস হচ্ছে আমার উম্মতের ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনার মাস। অতএব, এ মাসে অত্যধিক ক্ষমা প্রার্থনা কর, কেননা মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু। রজব মাসকে (ﺃﺻﻞ ) বলা হয়, কারণ এ মাসে আমার উম্মতের উপর আল্লাহর অত্যধিক রহমত বর্ষিত হয়, অতএব, ( ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻪُ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔَ ) (আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আসআলুহুত তাওবাহ) –এ যিকরটি অত্যধিক পড়।


সালেম হতে ইবনে বাবাওয়াইহ বর্ণনা করেছেন : রজব মাস শেষ হতে কয়েকদিন বাকি ছিল, আমি ইমাম সাদিক (আ.) এর সাক্ষাতে গেলাম। যখন তাঁর দৃষ্টি আমার উপর পড়লো, আমাকে জিজ্ঞেস করলেন : এ মাসে রোজা রেখেছো? আমি বললাম : না, হে আল্লাহর রাসূলের সন্তান।


তিনি বললেন : এতটা সওয়াব তোমার হাতছাড়া হয়েছে যার পরিমাণ মহান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা। নিশ্চয়ই এটা হচ্ছে মহান আল্লাহর মাস। মহান আল্লাহ্ একে অন্যান্য মাসের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন, এ মাসের মর্যাদাকে অত্যধিক বৃদ্ধি করেছেন এবং এ মাসে রোজাদারদের সম্মানিত করণকে নিজের জন্য আবশ্যক করে নিয়েছেন।


অতঃপর আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসূল (স.), যদি আমি এ মাসের অবশিষ্ট দিনগুলিতে রোজা রাখি তবে কি ঐ সওয়াব প্রাপ্ত হব? তিনি বললেন : হে সালেম! যে ব্যক্তি এ মাসের শেষ দিনগুলির একদিন রোজা রাখে মহান আল্লাহ্ তাকে মৃত্যুপূর্ব যন্ত্রণা, মৃত্যুর পর ভয় এবং কবরের আযাব হতে নিরাপত্তা দান করেন।


আর যে ব্যক্তি এ মাসের শেষের দিনগুলির দু’টিতে রোজা রাখে সে পুল সিরাত সহজেই অতিক্রম করবে। যে ব্যক্তি এ মাসের শেষ দিনগুলির ৩ দিন রোজা রাখবে সে কেয়ামত দিবসের বৃহত ভয়, সেদিনের তীব্র আতংক হতে নিরাপদ থাকবে... জেনে রাখো, রজব মাসের রোজার জন্য অত্যধিক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এমনও বর্ণিত হয়েছে যে, যদি কেউ এ মাসে রোজা রাখতে সক্ষম না হয় তবে


( ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟْﺈِﻟَﻪِ ﺍﻟْﺠَﻠِﯿﻞِ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﻣَﻦْ ﻻ ﯾَﻨْﺒَﻐِﻰ ﺍﻟﺘَّﺴْﺒِﯿﺢُ ﺇِﻻ ﻟَﻪُ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟْﺄَﻋَﺰِّ ﺍﻟْﺄَﻛْﺮَﻡِ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﻣَﻦْ ﻟَﺒِﺲَ ﺍﻟْﻌِﺰََّ ﻭَ ﻫُﻮَ ﻟَﻪُ ﺃَﻫْﻞٌ )


[উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহিল জালিল, সুবহানা মান লা ইয়ম্বাগীতাসবীহ ইল্লালাহু, সুবহানাল আয়াজ্জিল আকরাম, সুবহানা মান লাইসাল ইজ্জা ওয়া হুওয়া লাহু আহলুন]–এ তসবিহ পাঠ করবে, যাতে সে রোজার সওয়াব লাভ করে।


পবিত্র রজব মাসের বিভিন্ন দোয়া ও ফজিলত :


(১) মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে একশত বার


ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﻟَّﺬِﻯ ﻻ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻ ﻫُﻮَ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻻ ﺷَﺮِﯾﻚَ ﻟَﻪُ ﻭَ ﺃَﺗُﻮﺏُ ﺇِﻟَﯿْﻪِ


-এ দোয়াটি পাঠ করবে এবং সদকা প্রদানের মাধ্যমে


দোয়া শেষ করবে (দোয়া শেষে সদকা প্রদান করবে)। তার উপর মহান আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত (বর্ষিত হবে), আর যে ব্যক্তি ৪০০ বার পড়বে তাকে ১ শত শহীদের সওয়াব দান করবেন।


(২) আল্লাহর নবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে : ‘যে ব্যক্তি রজব মাসে এক হাজার বার (( ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ )) [লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্] বলবে, মহান আল্লাহ্ তাকে ১ লক্ষ নেকি দান করবেন এবং তার জন্য বেহেশতে ১ শত শহর নির্মাণ করবেন।


(৩) সাইয়্যেদ ইবনে তাউস তার গ্রন্থে মহানবী (স.) হতে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, (এ মাসে) সূরা ইখলাস পাঠের বিষয়ে তিনি (স.) ব্যাপক ফজিলতের কথা উল্লেখ করেছেন যে, এ মাসে ১০ হাজার বার বা ১ হাজার বার বা ১ শত বার সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করা (অতি উত্তম)। এছাড়া আরো বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের শুক্রবার দিন ১ শত বার সূরা তওহিদ তেলাওয়াত করবে, কেয়ামতের দিন একটি নূর তাকে বেহেশতের দিকে নিয়ে যাবে।


(৪) সাইয়্যেদ ইবনে তাউস মহানবী (স.) হতে বর্ণনা করেছেন : যদি কোন ব্যক্তি রজব মাসে শুক্রবার দিন যোহর ও আছরের নামাযের মাঝে (দুই রাকাত করে) ৪ রাকাত নামায আদায় করে এবং প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ৭ বার আয়াতুল কুরসি ও ৫ বার সূরা ইখলাস পাঠ করে, অতঃপর ১০ বার (( ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠﻪَ ﺍﻟَّﺬِﻯ ﻻ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻ ﻫُﻮَ ﻭَ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻪُ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔَ ))


-এ যিকর পাঠ করে, যেদিন হতে সে এ নামায পড়েছে সে দিন হতে তার মৃত্যুর দিন অবধি মহান আল্লাহ্ প্রতিদিন ১ হাজার নেকি প্রদান করবেন, যে সকল আয়াত সে তেলাওয়াত করেছে তার প্রতিটি আয়াতের পরিবর্তে বেহেশতে একটি করে লাল রুবি পাথরের শহর, প্রতিটি অক্ষরের জন্য বেহেশতে একটি করে সাদা পাথরের প্রাসাদ নির্মাণ করবেন, হুরুল আইনের সাথে তার বিবাহ দিবেন এবং তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন।


(৫) পবিত্র রজব মাসের প্রতিদিন এ দোয়া পাঠ করা, দোয়াটি ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.)ও পাঠ করতেন :


" ﯾَﺎ ﻣَﻦْ ﯾَﻤْﻠِﻚُ ﺣَﻮَﺍﺋِﺞَ ﺍﻟﺴَّﺎﺋِﻠِﯿﻦَ ﻭَ ﯾَﻌْﻠَﻢُ ﺿَﻤِﯿﺮَ ﺍﻟﺼَّﺎﻣِﺘِﯿﻦَ ﻟِﻜُﻞِّ ﻣَﺴْﺄَﻟَﺔٍ ﻣِﻨْﻚَ ﺳَﻤْﻊٌ ﺣَﺎﺿِﺮٌ ﻭَ ﺟَﻮَﺍﺏٌ ﻋَﺘِﯿﺪٌ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻭَ ﻣَﻮَﺍﻋِﯿﺪُﻙَ ﺍﻟﺼَّﺎﺩِﻗَﺔُ ﻭَ ﺃَﯾَﺎﺩِﯾﻚَ ﺍﻟْﻔَﺎﺿِﻠَﺔُ ﻭَ ﺭَﺣْﻤَﺘُﻚَ ﺍﻟْﻮَﺍﺳِﻌَﺔُ ﻓَﺄَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺃَﻥْ ﺗُﺼَﻠِّﻰَ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَ ﺃَﻥْ ﺗَﻘﻀِﻰَ

ﺣَﻮَﺍﺋِﺠِﻰ ﻟِﻠﺪُّﻧْﯿَﺎ ﻭَ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﺷَﻰْﺀٍ ﻗَﺪِﯾﺮٌ ."


উচ্চারণ : ‘ইয়া মান ইয়ামলিকু হাওয়ায়েজাস সায়িলিন, ওয়া ইয়া’লামু দ্বামিরাস সামিতীন, লিকুল্লি মাসআলাতিন মিনকা সামউন হাদ্বিরুন ওয়া জাওয়াবুন আতিদ, আল্লাহুম্মা ওয়া মাওয়ায়িদুকাস সাদিকাহ, ওয়া আইয়াদিকাল ফাদ্বিলাহ, ওয়া রাহমাতুকাল ওয়াসিয়াহ, ফাআসআলুকা আন তুসাল্লিয়া আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাদ, ওয়া আন তাক্বদ্বিয়া হাওয়ায়িজী লিদ-দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ, ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর’।


(৬) ইমাম সাদিক (আ.) হতে নিম্নোক্ত দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে :


« ﺧَﺎﺏَ ﺍﻟْﻮَﺍﻓِﺪُﻭﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﻏَﯿْﺮِﻙَ ﻭَ ﺧَﺴِﺮَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻌَﺮِّﺿُﻮﻥَ ﺇِﻻ ﻟَﻚَ ﻭَ ﺿَﺎﻉَ ﺍﻟْﻤُﻠِﻤُّﻮﻥَ ﺇِﻻ ﺑِﻚَ ﻭَ ﺃَﺟْﺪَﺏَ ﺍﻟْﻤُﻨْﺘَﺠِﻌُﻮﻥَ ﺇِﻻ ﻣَﻦِ ﺍﻧْﺘَﺠَﻊَ ﻓَﻀْﻠَﻚَ ﺑَﺎﺑُﻚَ ﻣَﻔْﺘُﻮﺡٌ ﻟِﻠﺮَّﺍﻏِﺒِﯿﻦَ ﻭَ ﺧَﯿْﺮُﻙَ ﻣَﺒْﺬُﻭﻝٌ ﻟِﻠﻄَّﺎﻟِﺒِﯿﻦَ ﻭَ ﻓَﻀْﻠُﻚَ ﻣُﺒَﺎﺡٌ ﻟِﻠﺴَّﺎﺋِﻠِﯿﻦَ ﻭَ ﻧَﯿْﻠُﻚَ ﻣُﺘَﺎﺡٌ ﻟِﻠْﺂﻣِﻠِﯿﻦَ ﻭَ ﺭِﺯْﻗُﻚَ ﻣَﺒْﺴُﻮﻁٌ ﻟِﻤَﻦْ ﻋَﺼَﺎﻙَ ﻭَ ﺣِﻠْﻤُﻚَ ﻣُﻌْﺘَﺮِﺽٌ ﻟِﻤَﻦْ ﻧَﺎﻭَﺍﻙَ ﻋَﺎﺩَﺗُﻚَ ﺍﻟْﺈِﺣْﺴَﺎﻥُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻤُﺴِﯿﺌِﯿﻦَ ﻭَ ﺳَﺒِﯿﻠُﻚَ ﺍﻟْﺈِﺑْﻘَﺎﺀُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﯾﻦَ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻓَﺎﻫْﺪِﻧِﻰ ﻫُﺪَﻯ ﺍﻟْﻤُﻬْﺘَﺪِﯾﻦَ ﻭَ ﺍﺭْﺯُﻗْﻨِﻰ ﺍﺟْﺘِﻬَﺎﺩَ ﺍﻟْﻤُﺠْﺘَﻬِﺪِﯾﻦَ ﻭَﻻ ﺗَﺠْﻌَﻠْﻨِﻰ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻐَﺎﻓِﻠِﯿﻦَ ﺍﻟْﻤُﺒْﻌَﺪِﯾﻦَ ﻭَ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻰ ﯾَﻮْﻡَ


ﺍﻟﺪِّﯾﻦِ


(৭) ইমাম সাদিক (আ.) হতে এ দোয়াটিও বর্ণিত হয়েছে :


« ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻰ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺻَﺒْﺮَ ﺍﻟﺸَّﺎﻛِﺮِﯾﻦَ ﻟَﻚَ ﻭَ ﻋَﻤَﻞَ ﺍﻟْﺨَﺎﺋِﻔِﯿﻦَ ﻣِﻨْﻚَ ﻭَ ﯾَﻘِﯿﻦَ ﺍﻟْﻌَﺎﺑِﺪِﯾﻦَ ﻟَﻚَ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻰُّ ﺍﻟْﻌَﻈِﯿﻢُ ﻭَ ﺃَﻧَﺎ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﺍﻟْﺒَﺎﺋِﺲُ ﺍﻟْﻔَﻘِﯿﺮُ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻐَﻨِﻰُّ ﺍﻟْﺤَﻤِﯿﺪُ ﻭَ ﺃَﻧَﺎ ﺍﻟْﻌَﺒْﺪُ ﺍﻟﺬَّﻟِﯿﻞُ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَ ﺁﻟِﻪِ ﻭَ ﺍﻣْﻨُﻦْ ﺑِﻐِﻨَﺎﻙَ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﻘْﺮِﻯ ﻭَ ﺑِﺤِﻠْﻤِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻬْﻠِﻰ ﻭَ ﺑِﻘُﻮَّﺗِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﺿَﻌْﻔِﻰ ﯾَﺎ ﻗَﻮِﻯُّ ﯾَﺎ ﻋَﺰِﯾﺰُ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَ ﺁﻟِﻪِ ﺍﻟْﺄَﻭْﺻِﯿَﺎﺀِ ﺍﻟْﻤَﺮْﺿِﯿِّﯿﻦَ ﻭَ ﺍﻛْﻔِﻨِﻰ ﻣَﺎ ﺃَﻫَﻤَّﻨِﻰ ﻣِﻦْ ﺃَﻣْﺮِ ﺍﻟﺪُّﻧْﯿَﺎ ﻭَ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ ﯾَﺎ ﺃَﺭْﺣَﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺣِﻤِﯿﻦَ.»


উল্লেখ্য, পবিত্র রজব মাসে বহু দোয়া বর্ণিত হয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশ ‘মাফাতিহুল জিনান’ গ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে।


(৮) হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের সকালে ৭০ বার ও রাতে ৭০ বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ্ ওয়া আতুবু ইলাইহি’ বলে এবং যিক্র শেষ হওয়ার পর হাত উঁচু করে বলে : হে আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার তওবা গ্রহণ করে নাও’; যদি সে রজব মাসে মারা যায় তবে মহান আল্লাহ্ তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন এবং পবিত্র রজব মাসের বরকতে (জাহান্নামের) আগুন তাকে স্পর্শ করবে না।


(৯) এ মাসে সর্বমোট এক হাজার বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহা যুল জালালি ওয়াল ইকরামি মিন জামিয়ীয যুনুবি ওয়াল আসনাম’ বলা, যাতে পরম করুণাময় মহান আল্লাহ্ গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দেন।


(১০) এ মাসের তিনদিন; বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রোজা রাখা। রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি হারাম মাসসমূহের যে কোন একটিতে এ তিনদিন রোজা রাখে মহান আল্লাহ্ তার জন্য ৯০০ বছরের ইবাদতের সওয়াব লেখেন।


(১১) মহানবী (স.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের রাতসমূহের একটিতে (দুই রাকাত করে) ১০ রাকাত নামায আদায় করে –এ পদ্ধতিতে : প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১ বার সূরা কাফিরুন এবং ৩ বার সূরা ইখলাস- মহান আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেন।



রজব মাসের দিন ও রাতের আমলসমূহ :


প্রথম রাতের আমল :


(১) চাঁদ দেখার পর নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়া :


ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻫِﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﯿْﻨَﺎ ﺑِﺎﻟْﺄَﻣْﻦِ ﻭَ ﺍﻟْﺈِﯾﻤَﺎﻥِ ﻭَ ﺍﻟﺴَّﻼﻣَﺔِ ﻭَ ﺍﻟْﺈِﺳْﻼﻡِ ﺭَﺑِّﻰ ﻭَ ﺭَﺑُّﻚَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﺰَّ ﻭَ ﺟَﻞَّ .


বর্ণিত হয়েছে, রজব মাসের চাঁদ দেখার পর আল্লাহর রাসূল (স.) নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেন :


ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟَﻨَﺎ ﻓِﻰ ﺭَﺟَﺐٍ ﻭَ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻭَ ﺑَﻠِّﻐْﻨَﺎ ﺷَﻬْﺮَ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻭَ ﺃَﻋِﻨَّﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼِّﯿَﺎﻡِ ﻭَ ﺍﻟْﻘِﯿَﺎﻡِ ﻭَ ﺣِﻔْﻆِ ﺍﻟﻠِّﺴَﺎﻥِ ﻭَ ﻏَﺾِّ

ﺍﻟْﺒَﺼَﺮِ ﻭَﻻ ﺗَﺠْﻌَﻞْ ﺣَﻈَّﻨَﺎ ﻣِﻨْﻪُ ﺍﻟْﺠُﻮﻉَ ﻭَ ﺍﻟْﻌَﻄَﺶَ .



(২) গোসল করা : মহানবী (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রজব মাসকে অনুধাবন করে এবং এর প্রথম ও মাঝ এবং শেষের দিনগুলিতে গোসল করে তার সমস্ত গুনাহ তেমনভাবে মুছে ফেলা হয় যেমনভাবে সে মায়ের গর্ভ হতে জন্মলাভ করার সময় ছিল।


(৩) ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারত পড়া।


(৪) মাগরিব ও এশার নামাযের পর ২০ রাকাত নামায আদায় করা; -১০টি দুই রাকাত বিশিষ্ট নামায-। এর মাধ্যমে সে নিজে, তার সম্পদ-সম্পত্তি এবং সন্তানাদি রক্ষিত থাকবে এবং সে কবরে আযাব থেকে মুক্তি পাবে।


(৫) মাগরিব ও এশার নামাযের পর দুই রাকাত নামায আদায় করা। নিয়ম হল : প্রথম রাকাতে সূরা হামদের পর একবার সূরা ইনশিরাহ (আ-লাম নাশরাহ) পাঠ করা এবং সালামের মাধ্যমে নামায শেষ করার পর ৩০ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা ও ৩০ বার দরুদ পাঠ করা। যাতে মহান আল্লাহ্ তার গুনাহসমূহকে তেমনভাবে মুছে ফেলেন যেভাবে সে তার মায়ের গর্ভ হতে জন্ম লাভ করেছে।



রজব মাসের প্রথম দিনের আমল :


(১) রোজা রাখা।

বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত নুহ (আ.) এ দিন নৌকায় আরোহন করেছিলেন এবং তার সাথে থাকা সকলকে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যে ব্যক্তি এ দিন রোজা রাখবে জাহান্নামের আগুন এক বছর তার হতে দূরে সরে যাবে।


(২) গোসল করা।


(৩) ইমাম হুসাইন (আ.) এর যিয়ারত পড়া।


ইমাম সাদিক (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের প্রথম দিনে ইমাম হুসাইন (আ.) এর যেয়ারতে যাবে মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন। (দূর হতেও যেয়ারত পাঠ গ্রহণযোগ্য হবে ইনশা আল্লাহ)