ব্রণ থেকে সুরক্ষার ১৩ ঘরোয়া উপায়

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস July 8, 2018 2,029
ব্রণ থেকে সুরক্ষার ১৩ ঘরোয়া উপায়

ত্বক অপরিষ্কার থাকলে বা তৈলাক্তভাব দেখা দিলেই মুখে ব্রণ উঠতে শুরু করে। আর এই অসহ্যকর ব্রণ দূর করতে বাজারের বিভিন্ন কেমিক্যালের তৈরি কসমেটিক্স ব্যবহার করে থাকি যা ত্বকের জন্য মারাত্বক ক্ষতি। তাই ব্রণ থেকে বাঁচতে ঘরোয়া প্রাকৃতিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন যা ত্বকের জন্য নিরাপদ হবে।


১) পাকা পেঁপে চটকে নিন এক কাপের মতো। এর সঙ্গে মেশান এক চামচ পাতিলেবুর রস এবং প্রয়োজন মতো চালের গুঁড়ো। মিশ্রণটি মুখসহ গোটা শরীরেও লাগাতে পারেন। ২০-২৫ মিনিট মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। পেঁপে ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারীর রস। এতে ব্রণ উঠা কমে যাবে।


২) পুদিনা পাতা ত্বকের অতিরিক্ত তেল এবং ব্রণের সংক্রমণ কমাতে খুবই উপকারী। টাটকা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। কিংবা রস করে নিয়ে সেটা দিয়ে আইস কিউব তৈরি করুন। ফুসকুড়ি ও ব্রণের এই আইস কিউব ঘষুন ১০-১৫ মিনিট। এতে ফুসকুড়ি ও ব্রণের সংক্রমণ তো কমবেই সঙ্গে ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাবও দূর হবে।


৩) লবঙ্গ মূলত মসলা হিসেবে পরিচিত হলেও ব্রণ সারাতে এটি খুবই কার্যকর। লবঙ্গের তেল দিয়ে ত্বক মাসাজ করা খুবই উপকারী। ত্বকে ব্রণের সংক্রমণ বেড়ে গেলে লবঙ্গ গুঁড়ো করে তাতে গোলাপ জল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। ব্রণের জায়গাগুলোতে মিশ্রণের মোটা প্রলেপ দিন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন অনেকটা কমে গেছে।


৪) ত্বকে অতিরিক্ত তেল তেল ভাবের ফলে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। এ ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে মুখে মুলতানি মাটি পানি দিয়ে পেস্ট করে লাগাতে পারেন। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করতে সাহায্য করে।


৫) টক স্বাদের কদবেল খেতে অনেকেই ভালবাসেন। কাঁচা কদবেলের রস ব্রণের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা কদবেলের রস তুলাতে ভিজিয়ে ব্রণ আক্রান্ত জায়গাগুলোতে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।


৬) কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর দুটো উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণমত পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণ দূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।


৭) যাদের ব্রণর পরিমাণ অত্যধিক বেশি তারা পাতিলেবুর রস দিনে দু’তিনবার ব্রণের জায়গাগুলোতে লাগান। তবে একটানা দশ মিনিটের বেশি রাখবেন না। দশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।


৮) নিমপাতা খুব ভাল জীবাণুনাশক। তাই ব্রণ সারাতে জাতি নিমপাতা খুবই উপকারী। নিমপাতা বেটে সঙ্গে চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।


৯) ধনেপাতাও ব্রণ সারাতে খুবই কার্যকর। ধনেপাতা বেটে তাতে কয়েক চিমটি হলুদ গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাবেন।


১০) গোলাপ জলের নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ কমে যায়। দারুচিনি গুঁড়োর সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ব্রণের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, চুলকানি এবং ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।


১১) এক লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম টাটকা নিমপাতা জ্বাল দিন। পানির পরিমাণ অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন। এই পানি ছেঁকে ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পানি পান করলে ব্রণ হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।


১২) শশার রসের সঙ্গে গোলাপ জল বা লেবুর রস মিশিয়ে একটি বোতলে ভরে রাখুন এবং দিনে ৩-৪ বার তুলা ভিজিয়ে তা দিয়ে মুখ মুছে নিন। শুকনো তুলসী পাতা এক কাপ গরম পানিতে ১০ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ঠাণ্ডা করে সেই পানিতে তুলা ভিজিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন।


১৩) কমলা লেবুর খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। মসুরির ডাল আর চাল ভিজিয়ে ভালো করে পিষে নিন। ঐ পেস্টের মধ্যে চন্দন পাউডার, মুলতানি মাটি, কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মিলিয়ে নিন। এই মিশ্রণের মধ্যে দুই চামচ দুধও মিশিয়ে নিতে পারেন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে নিন। এই প্যাকটা নিয়মিত মুখে লাগান। ত্বকের জেল্লা বাড়বে। ব্রণের দাগও দূর হয়ে যাবে।


সূত্র : বোল্ডস্কাই