যেসব দেশের জাতীয় সংগীতে কথা নেই

জানা অজানা April 22, 2016 1,222
যেসব দেশের জাতীয় সংগীতে কথা নেই

সংগীত বলতে আমরা সাধারণ ধ্বনি, সুর ও তালের সমন্বয়ে সৃষ্ট এক প্রকারের সুসংবদ্ধ শব্দমালাবেক বুঝি। পৃথিবীতে মূলত সংগীতের সৃষ্টি হয় স্বর এবং ধ্বনির সমন্বয়ে। এরপর সময়ে সময়ে সংগীতে এসেছে নতুনত্ব। কিন্তু মূলের সেই স্বরলিপি সবসময়ই প্রয়োজন ছিল সংগীতে। বিভিন্ন ভাষায় তাই এ পর্যন্ত রচিত হয়েছে একাধিক সংগীত।


কিন্তু যদি কথা ছাড়া সংগীতের সন্ধান পান তাহলে কি অবাক হবেন? অবাক হবারই কথা। তবে তা কোনো সাধারণ সংগীত নয়, পৃথিবীর চারটি দেশের জাতীয় সংগীত এমনই, যেগুলোর কোন কথা নেই, রয়েছে শুধু সুর। আর সেসব সুর তৈরি করা হয়েছে দেশীয় সব বাদ্যযন্ত্র দিয়ে। দেশগুলো হলো স্পেন, সান মারিনো, কসোভো এবং বসনিয়া-হার্জেগোভিনা।

★ চলুন জেনে নেওয়া যাক এই চারটি দেশের জাতীয় সংগীত নিয়ে বেশ কিছু তথ্য....


স্পেন : স্পেনের জাতীয় সংগীত ‘মার্সা রিয়েল’ নামে বহুল পরিচিত। ধারণা করা হয় বর্তমান জার্মানির অন্তর্গত প্রাশিয়ার রাজ্যের রাজা ফ্রেডেরিক দ্বিতীয় এই সংগীতটির রচয়িতা। ১৮৬১ সালে সংগীতটি সর্বপ্রথম পুরুশিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পর ১৮৬৪ সালের দিকে প্রাশিয়ায় বিশাল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সে সময় স্পেনের রাজা চার্লস তৃতীয়, দ্বিতীয় ফ্রেডেরিকের সেনাবাহিনীর দ্বারা উন্নত সামরিক কৌশল শিখতে একবার জুয়ান মার্টিন নামে এক ব্যাক্তিকে পাঠান। এরপর জুয়ানকে ফেরত পাঠানোর সময় পুরস্কারসরূপ ফ্রেডেরিক চার্লস কে মার্সা রিয়েলের সুরকৌশল লিখে দেন। এরপর ১৯০৮ সালে স্পেনে প্রকাশিত এনসাইক্লোপেডিয়া এস্পানা তে সংগীতটি সংযুক্ত করা হয় সঙ্গীটি। মুলত সেখান থেকেই রাণী ইসাবেলা দ্বিতীয়, সংগীতটিকে প্রথমবারের মতো স্পেনের জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করেন।


এরপর অনেকদিন বাদে ২০০৭ সালে স্পেনে এই সংগীতটির জন্য লিরিক্সের আহ্বান করা হলে অনেক লিরিক্স জমা পড়ে। কিন্তু সেখান থেকে কোনো লিরিক্স স্পেন সরকারের পছন্দ না হওয়ায় এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কথাহীন এই সংগীতটিই স্পেনের জাতীয় সংগীত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।


সান মারিনো : স্থানীয় ভাষায় সান মারিনোর জাতীয় সংগীতকে ডাকা হয় ‘ইন্নো নোজিওনালে’ নামে। বিখ্যাত ইতালিয়ান বেহালাবাদক ফেদেরিকো কনসোলো রচিত এই সংগীতটি ১৮৯৪ সালে সান মারিনোর জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রচলিত হয়। এই সংগীতের কোনো অফিশিয়াল লিরিক্স না থাকলেও স্থানীয়ভাবে এর বেশকিছু লিরিক্স প্রচলিত রয়েছে।


কসোভো : কসোভোর জাতীয় সংগীত ইউরোপে ‘হিমনি আই রিপাব্লিকাস সি কসোভোস’ নামে বেশ পরিচিত। আর এর লিরিক্স না থাকায় একটু বেশিই আলোচিত ছিল প্রথম থেকেই। তবে ২০০৮ সালের জুন মাসে কসোভোর বিখ্যাত শহর প্রিস্টিনায় এর লিরিক্সের জন্য খোলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কসোভোর জাতীয় পরিষদ। আর সেখান থেকে পাওয়া লিরিক্স বর্তমানে কসোভোর জাতীয় সংগীতের লিরিক্স হিসেবে স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা হয়।


বসনিয়া-হার্জেগোভিনা : দক্ষিণপূর্ব ইউরোপে অবস্থিত বসনিয়া- হার্জেগোভিনা দেশটি বসনিয়া নামেই বহুল প্রচলিত। এই দেশের জাতীয় সংগীতেও নির্দিষ্ট কোন লিরিক্স নেই। তবে স্থানীয়ভাবে বেশ কিছু লিরিক্স প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে যে জাতীয় সংগীতটি প্রচারিত হয় সেটিতে কোনো ধরনের লিরিক্স নেই। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী সরকারিভাবে কথাহীন এই সংগীতটি বসনিয়ার পূর্বের জাতীয় সংগীত ‘জেদনা সি জেদিনা’র স্থলাভিষিক্ত হয়।