একটি স্মার্টফোন বানাতে খরচ কত? কীভাবে এর দাম নির্ধারিত হয়?

জানা অজানা April 9, 2018 2,349
একটি স্মার্টফোন বানাতে খরচ কত? কীভাবে এর দাম নির্ধারিত হয়?

স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা ও উপকারিতার কারণে মানুষের হাতে হাতে একটি করে স্মার্টফোন দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে বেশ স্বল্পমূল্যেই উন্নত স্মার্টফোন পাওয়া যায়। পাশাপাশি গুণগত মান, সফটওয়্যার, ক্যামেরা এবং অন্যান্য দিক দিয়ে একদম ভালো মানের স্মার্টফোনও পাওয়া যায়। প্রযুক্তির ভাষায় যাকে বলে লেটেস্ট অ্যান্ড গ্রেটেস্ট স্মার্টফোন।


নামীদামী মোবাইল কোম্পানিগুলো সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখেই সাধারণত তাদের ফোনগুলো বাজারজাত করে থাকে। একদম কম দাম থেকে মধ্যম দামের এবং সব দিক থেকে উন্নত বেশি দামী স্মার্টফোনও তারা বাজারজাত করে থাকে। এদিক থেকে দেখলে অ্যাপল কোম্পানি একটু আলাদা। তারা সবসময়েই সমাজের অভিজাত সদস্যদের লক্ষ্য করে বেশি দামী স্মার্টফোন তৈরি করে থাকে।


যেমন ২০১৭ সালে অ্যাপল তাদের আইফোন টেন বের করেছে। যা বিক্রি হচ্ছে রেকর্ড পরিমাণ দাম ১ হাজার মার্কিন ডলারে। বাংলাদেশে যার দাম রাখা হচ্ছে লাখ টাকার উপরে। বিগত তিন বছর থেকে স্মার্টফোনগুলোর দাম দিনদিন বেড়েই চলেছে। এখান থেকে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে স্মার্টফোনগুলো তৈরিতে খরচ কেমন হয়?


▶স্মার্টফোন প্রস্তুত করতে কত খরচ হয়?


এত টাকা দামের ফোনগুলো তৈরি করতে কোম্পানিগুলোর কত টাকা খরচ হয়? তারা কতই বা মুনাফা অর্জন করে থাকে ফোনগুলো থেকে? জেনে হয়তো অবাক হবেন কিছু কিছু স্মার্টফোন থেকে কোম্পানিগুলো প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি লাভ করে থাকে। চলুন দেখা যাক কিছু স্মার্টফোন তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয়, কত টাকায় বিক্রি করা হয় এবং কত টাকা লাভ করা হয়।


(১) আইফোন টেন (৬৪ জিবি)

তৈরিকৃত খরচ- ৩৭০.২৫ মার্কিন ডলার

বিক্রিত দাম- ৯৯৯ মার্কিন ডলার

লাভ- ৬২.৯৩%


(২) আইফোন ৮ (৬৪ জিবি)

তৈরিকৃত খরচ- ২৫৫.১৬ মার্কিন ডলার

বিক্রিত দাম- ৬৯৯ মার্কিন ডলার

লাভ- ৬৩.৪৯%


(৩) গুগল পিক্সেল এক্সএল (৩২ জিবি)

তৈরিকৃত খরচ- ২৮৫.৭৫ মার্কিন ডলার

বিক্রিত দাম- ৭৬৯ মার্কিন ডলার

লাভ- ৬২.৮৪%


(৪) স্যামসাং এস ৯ প্লাস

তৈরিকৃত খরচ- ৩৭৯ মার্কিন ডলার

বিক্রিত দাম- ৮৩৯ মার্কিন ডলার

লাভ- ৫৪.৮%


(৫) স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৮

তৈরিকৃত খরচ- ৩০৭.৫০ মার্কিন ডলার

বিক্রিত দাম- ৭২০ মার্কিন ডলার

লাভ- ৫৭.৩%


▶এই দামগুলো কীভাবে নির্ধারিত হয়?


একটি স্মার্টফোনের মূল্য সামগ্রিকভাবে সরল একটি সংখ্যা হলেও এর দাম নির্ভর করে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের উপর। যেমন ডিসপ্লে, ক্যামেরা, টাচ, চিপসেট, বডি ইত্যাদি। এ অংশগুলো আলাদাভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে এসব আলাদা যন্ত্রাংশগুলো একসাথে যুক্ত করা হয়। যাকে প্রযুক্তির ভাষায় ম্যানুফ্যাকচারিং বলা হয়।


▶স্মার্টফোনগুলি কোথায় প্রস্তুত করা হয়?


অধিকাংশ স্মার্টফোন কোম্পানি তাদের ফোনগুলোর ম্যানুফ্যাকচার করে থাকে চীনে। এর পেছনে কারণ হলো, এই কোম্পানিগুলোকে একসাথে লক্ষ লক্ষ স্মার্টফোন প্রস্তুত করতে হয়। অধিক সংখ্যক স্মার্টফোন প্রস্তুত করতে অধিক শ্রমশক্তির প্রয়োজন। চীনের শ্রম বাজার একই সাথে সস্তা এবং অভিজ্ঞ। সবদিক থেকে স্বল্প খরচে এবং ভালো মানের উৎপাদনের জন্য কোম্পানিগুলো চীনকেই বেছে নেয় সবার আগে।


চীনে প্রতিটি স্মার্টফোনের পেছনে কোম্পানিগুলোর মাত্র ৪ ডলার থেকে সর্বোচ্চ ১০ ডলার ম্যানুফ্যাকচারিং খরচ হয়। অধিক জনসংখ্যা এবং সুলভ শ্রমশক্তি থাকার কারণে বর্তমানে বড় বড় কোম্পানিগুলো ভারতেও তাদের স্মার্টফোন তৈরি করার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে।