উঠতি অভিনেত্রীরা যে কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন

বিবিধ বিনোদন March 11, 20181,380
উঠতি অভিনেত্রীরা যে কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন

গত শুক্রবার কলকাতার রিজেন্ট পার্কের একটি ফ্ল্যাট থেকে মৌমিতা সাহা নামের এক উঠতি অভিনেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করে একটি সুইসাউড নোটও। তাতে লেখা ছিল, ‘আমার আর অভিনেত্রী হওয়া হলো না।’ সুইসাউড নোটের ওই ভাষ্য থেকেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধারণা করেন, মানসিক অবসাদের জেরেই আত্মহত্যা করেছেন ২৩ বছরের অভিনেত্রী মৌমিতা।


গত কয়েক বছরে কলকাতার বেশ কয়েকজন উঠতি অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ই এম বাইপাস লাগোয়া একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় অভিনেত্রী বিতস্তা সাহার ঝুলন্ত মরদেহ। সে সসময় বিতস্তার ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা গিয়েছিল, কাজ না পেয়ে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি।


২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল বেহালার পর্ণশ্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল দিশা গঙ্গোপাধ্যায় নামে আরও এক অভিনেত্রীর মরদেহ। সে ক্ষেত্রেও তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দিশা। এছাড়াও আরও একাধিক নতুন অভিনেত্রীর মৃত্যুর ঘটনা গত দুই তিন বছরে এই কলকাতাতেই ঘটেছে।


কিন্তু উঠতি অভিনেত্রীরাই কেন বার বার আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন? এর উত্তর দিয়েছেন মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল। তার কথায়, ‘উঠতি বয়সের অভিনেত্রীরা অল্প বয়সের মধ্যেই পৃথিবীটাকে রঙিন দেখতে শুরু করেন। তাদের স্বপ্নটা বড় হলেও কঠোর বাস্তবে পৌঁছাতে হিমসিম খাওয়ার জন্যই আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘বাস্তবকে মানার মতো ধৈর্যশীল মানসিকতার অভাব থেকেই এই ধরণের ঘটনা বার বার ঘটছে।’


অন্যদিকে জয়রঞ্জন রাম নামের আরও এক মনোবিদ বলছেন, ‘সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা অভিনয় জগতে প্রবেশের ক্ষেত্রে পরিবারের সমর্থন সচরাচর পান না। একটা সময়ের পরে সাফল্য না পেলে তারা অবসাদে ভুগতে থাকেন। সেই অবসাদ থেকেই এসব উঠতি অভিনয়শিল্পীরা পরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।’


এদিকে, অভিনেত্রী মৌমিতার মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ সূত্রে খবর, টলিউডে মডেলিং ও অভিনয়ের সূত্রে দুই বছর আগে থেকে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার অশোকনগরে ভাড়া বাড়িতে একাই থাকতে শুরু করেন মৌমিতা। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে মৌমিতার পরিজনেরা তার মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পারায় রাতে বাড়ির মালিককে জানান।


রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অনেক ডাকাডাকির পরেও মৌমিতা দরজা না খোলায় প্রতিবেশীদের সাহায্যে বাড়িওয়ালা দরজা ভাঙেন। ভেতরে গলায় ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মৌমিতাকে দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


তথ্যসূত্রঃ ঢাকা টাইমস