

বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার ছিলেন শ্রীদেবী। ২৪ ফেব্রুয়ারি হঠাৎই তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। দুবাইয়ের একটি হোটেলের বাথরুম থেকে উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হার্ট অ্যাটাকই মৃত্যুর কারণ। ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যায়, দুর্ঘটনাবশত পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
বাথটবের জলে ভাসমান অবস্থায় দেহটি প্রথম দেখেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর। কী ঘটেছিল সেদিন? শ্রীদেবীর মৃত্যুর প্রায় এক সপ্তাহ পর মুখ খুললেন বনি। জানালেন সেই রাতের কথা। কয়েকদিন আগেই দুবাইয়ে এক আত্মীয়র বিয়েতে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। সঙ্গে ছিলেন স্বামী বনি কাপুর ও ছোট মেয়ে খুশি। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে দেশে ফিরে যান বাবা-মেয়ে।
কিন্তু, থেকে যান শ্রীদেবী। বড় মেয়ে জাহ্নবীর জন্য কিছু কেনাকাটা করবেন, এমনই পরিকল্পনা ছিল তাঁর। মৃত্যুর দিন সকালে অর্থাৎ ২৪ তারিখ স্বামীকে মেসেজ করেন শ্রীদেবী। লেখেন, পাপা(বনি কাপুরকে এই নামেই ডাকতেন শ্রীদেবী), তোমাকে খুব মিস করছি। এরপর স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দিতে ফের দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করেন বনি।
বিমানবন্দরে পৌঁছে শ্রীদেবীকে ফোন করে বনি জানান, একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে তিনি ব্যস্ত থাকবেন। তাই, কয়েক ঘণ্টা তাঁর ফোন বন্ধ থাকতে পারে। শ্রীদেবীর রুমের ডুপ্লিকেট চাবি ছিল বনির কাছে। হোটেলে পৌঁছে ঘর খুলে ভেতরে ঢোকেন তিনি। স্বামীকে দেখেই জড়িয়ে ধরেন শ্রীদেবী। কারণ, আগে থেকেই তিনি কিছুটা আন্দাজ করেছিলেন, বনি তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য দুবাই আসতে পারেন।
মাকে সারপ্রাইজ দিতে বাবা যে দুবাই যাচ্ছে তা জানত শ্রীদেবীর বড় মেয়ে জাহ্নবী। এর আগে শ্রীদেবী কোনওদিন একা বিদেশে থাকেননি। তাই, বনির যাওয়ার খবরে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয় জাহ্নবী। কারণ, একা বিদেশ থেকে ফিরতে গেলে মা কিছু না কিছু হারাতে পারে এমনই আশঙ্কা ছিল তার।
দুবাইয়ের হোটেলের ঘরে এরপর শ্রীদেবীকে রোমান্টিক ডেটে যাওয়ার প্রস্তাব দেন বনি কাপুর। আর বলেন, পরদিন রাতে তাঁরা দেশে ফিরবেন। তাতে রাজিও হন শ্রীদেবী।
ডিনারে যাওয়ার জন্য গোসল করে তৈরি হতে বাথরুমে ঢোকেন শ্রীদেবী। সে সময় বনি একটা ক্রিকেট ম্যাচ দেখছিলেন। এভাবে ১৫-২০ মিনিট কেটে যায়। বনি দেখেন আটটা বাজে। আর বেশি রাত হলে দুবাইয়ের কোনও হোটেলে খাবার পেতে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই, কিছুটা অধৈর্য হয়েই স্ত্রীকে ডাকাডাকি শুরু করেন তিনি। বাথরুমের কাছে গিয়ে 'জান,জান' বলে চিৎকারও করেন। কিন্তু, ভিতর থেকে কোনও সাড়া পাননি।
বাথরুমের দরজা খোলাই ছিল। সাড়া না পেয়ে বেশ চিন্তায় পড়ে যান বনি। ঠিক করেন, দরজা খুলবেন। বাথরুমের দরজা খুলে ভিতরে যেতেই বাথটবের পানিতে ডুবে থাকা শ্রীদেবীকে দেখতে পান। তাড়াতাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে বাঁচানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু, কাছে যেতেই বুঝতে পারেন শ্রীদেবীর দেহে কোনও সাড়া নেই। আরও ভয় পেয়ে যান বনি। স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। সেখানেই শ্রীদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
বনি আরও জানান, বাথটবে শ্রীদেবীর দেহটি ডুবে থাকলেও আশপাশে ছিটে আসা পানির কোনও চিহ্ন ছিল না। এটা কীভাবে সম্ভব? আর সে সময় কী ঘটেছিল? এখনও এইসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন বনি কাপুর। কিন্তু, এর উত্তর একমাত্র যিনি দিতে পারতেন, আজ তিনি এসব থেকে অনেক অনেক দূরে।







