

সর্বোচ্চ কামাই করনেওয়ালা বলিউড ফিল্ম কোনটি? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাল্টায়। তবে হাল আমলে বলিউডে সাম্রাজ্য চালানো তিন খানের একের পর এক ছবি রেকর্ডভাঙা ব্যবসা করে চমক সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি বলিউডি হিট লিস্ট ছবির টপ টেন তালিকায় দেখা যায় লাগান আর থ্রি ইডয়েটস খ্যাত পারফেকশন্সিট আমির খানের খানের তিনটি ছবি রয়েছে এতে।
কিন্তু একই তালিকায় বি-টাউনের ‘ভাইজান’ হিসেবে খ্যাত সালমান খানের রয়েছে ৪টি ছবি। বলিউড বাদশাহ হিসেবে খ্যাত শাহরুখ খানের খবর নেই এখানে যেন তাকে পাত্তাই দেননি অপর দুই খান। তবে, ভারতীয় সিনেমা হলগুলোর হিসেবে সর্বোচ্চ আয় করা দশ সিনেমার সাতটি দুই খানের দখলে থাকলেও টপটেনের শীর্ষ দুটি ছবিতে কিন্তু নেই তারা।
সেখানে যথাক্রমে অবস্থান নিয়েছে বাহুবলী২ ও বাহুবলী দ্য বিগিনিংস। শুধু অর্থ উপার্জনের দিক দিয়েই না, দর্শক-সমালোচকের প্রশংসায়ও ধন্য এসব ছবি। কালের কণ্ঠ পাঠকদের জন্য টপটেন বলিউড মুভির তালিকায় থাকা ছবিগুলো রোজগারে সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরা হলো এখানে-
১. বাহুবলি২: ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি আয় করেছে ১১ শ ১৫.৬০ কোটি রুপি। এমন মারদাঙ্গা আয়ের পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এসবের অন্যতম হলো, আগে যারা বাহুবলি১ বা বাহুবলি দ্য বিগিনিংস দেখেছেন তারা সবাই প্রবল আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন পরের কাহিনী দেখার জন্য। প্রথম ছবিটি তখন পর্যন্ত সর্বোচ্চা কামাইওয়ালা সিনেমা ছিল। তবে কাহিনীর প্রচুর আবেগ জাগানিয়া মারপ্যাঁচ আর স্পেশাল ইফেক্টের ছড়াছড়িতে দর্শককে মুগ্ধ-বিনোদিত করলেও কিছু কিছু বিষয়ে বিশাল দর্শকের মনে কিছু প্রশ্নও জাগায় এর কাহিনী। দর্শকমনে জেগে ওঠা এই প্রশ্ন আদতে এর পরবর্তী পর্বটির জন্য বোনাস হিসেবে দেখা দেয়। আর তাই বলিউডি শাহরুখ, আমির বা সালমান নয়- দক্ষিণের তারকা প্রভাস অভিনীত বাহুবলি২ যা আয় করে তা অসম্ভব এক মাইল ফলকে নিয়ে গেছে ছবিটিকে, যা অদূর ভবিষ্যতে অতিক্রম করা কঠিনই হবে ভারতীয় যে কোনো সিনেমার জন্য।
২. বাহুবলি দ্য বিগিনিংস: ২০১৫ সালে রিলিজ পায়। বাহুবলি সিরিজের প্রথম ছবি এটি। টপটেনে স্বাভাবিকভাবেই দুই নম্বরে আছে। ভারতীয় বক্স অফিসে এই ছবিটির আয় এখন পর্যন্ত ৪২০.০৫ কোটি রুপি।
৩. দঙ্গল: ২০১৬ সালের আলোচিত এই ছবিটি তৃতীয় স্থানে আছে। আমির খানের দঙ্গলের এখন পর্যন্ত রোজগার ৩৮৭.২৮ কোটি রুপি। দক্ষিণি দুই ছবির পর টপটেনে অন্য খানদের ছাড়িয়ে প্রথম স্থানে আছে আমিরের দঙ্গল।
৪. টাইগার জিন্দা হ্যায়: সালমান ও ক্যাটরিনা অভিনীত থ্রিলারধর্মী এই সিনেমাটি গত বছরের শেষদিকে রিলিজ হয়ে বছরের অন্যতম সফল প্রডাকশনের মর্যাদা পায়।.এর আগে একই জুটি অভিনীত এক থা টাইগারও ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছিল। এদিকে, এখন পর্যন্ত ভারতীয় বক্স অফিসে ৩৩৮.৯৬ রুপি আয় করে ফেলেছে টাইগার জিন্দা হ্যায়। ছবিটি অনেক জায়গায় এখনও চলছে।
৫. পিকে: ২০১৪ সালে রিলিজ পাওয় পিকে এখন পর্যন্ত ৩৩৭.৭২ রুপি আয় করেছে। টপটেনে আমির খানের দ্বিতীয় ছবিটি এটি। রাজকুমার হিরানির নির্দেশনায় এই সিনেমায় আমির খান ও আনুসকা শর্মা ছাড়া আরো ছিলেন সঞ্জয় দত্ত ও বোমান ইরানির মতো মেধাবী অভিনেতারা।
৬. বজরঙ্গি ভাইজান: টপটেন লিস্টে বলিউডের ‘ভাইজান’ সালমান খানের দ্বিতীয় হিট বজরঙ্গি ভাইজান ২০১৫ সালের সবসেরা ছবি। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে আবর্তিত এই ছবি এখন পর্যন্ত কামিয়েছে ৩১৫.৪৯ কোটি রুপি।
৭. সুলতান: টপটেনে পরের ছবিটি মানে সাত নম্বর ছবিটিও সালমান খানের। সুলতান ২০১৬ সালে মুক্তি পায়। সালমান খানের অন্যান্য সিনেমার মতোই এই ছবিটিও ঈদের সময়ে ছাড়া হয় যা এখন পর্যন্ত ৩০০.৬৭ কোটি রুপি আয় করেছে।
৮. ধূম৩: আট নম্বরে এসে ফের মি. পারফেকশনিস্ট। ২০১৩ সালে মুক্তি পায় আমির খান-ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত ধূম৩। এখন পর্যন্ত ২৭১.৬৩ কোটি রুপি আয় করেছে ধূম সিরিজের তিন নম্বর এই ছবিটি।
৯. পদ্মাবত: দীপিকা পাড়ুকোন, রনবির সিং আর শহিদ কাপুর অভিনীত এই সিনেমা নিয়ে আলোচিত নির্মাতা-পরিচালক সঞ্জয় লিলা বনসালি সীমাহীন ঝক্কি-ঝামেলার মুখে পড়েন।শেষ পর্যন্ত অনেক নাটিকীয়তার পর ছবিটি মুক্তি পায় এবং রোজগারের ভিত্তিতে এটি শীর্ষ দশের ৯নম্বরে অবস্থান করছে। এখন পর্যন্ত এর আয় ২৬৯.৫০ কোটি রুপি।
১০. কিক: শীর্ষ দশের শেষ ছবি সাল্লু মানে সালমানের কিক। এটি রিলিজ হয়েছিল ২০১৪ সালে। একই বছর আমির খানের পিকে মুক্তি পায় যা এই লিস্টে পাঁচ নম্বরে আছে। কিক ২১১.৬৩ কোটি রুপি আয় করেছে এখন পর্যন্ত।
আর্থিক সাফল্যের বিবেচনায় তৈরি বলিউডি সিনেমার টপ টেন লিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১১৬৬.৭৫ কোটি রুপি কামাই করেছে টপলিস্টে থাকা সালমান খানের ৪ ছবি টাইগার জিন্দা হ্যায়, বজরঙ্গি ভাইজান, সুলতান এবং কিক। অপরদিকে, আমির খানের তিনটি ছবি যথাক্রমে দঙ্গল, পিকে ও ধূম৩ আয় করেছে ৯৯৬.৬৩ কোটি রুপি। আর সবচেয়ে বেশি ১৫৩৫.৬৫ কোটি রুপি কামিয়েছে বাহুবলির দুটি পর্ব। -জনসত্তা.কম







