শারীরিক সম্পর্কের উপকারিতার কথা জানলে চোখ কপালে উঠে যাবে!

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস February 3, 2018 1,995
শারীরিক সম্পর্কের উপকারিতার কথা জানলে চোখ কপালে উঠে যাবে!

পরিসংখ্যান বলছে আজকাল নাকি ডিভোর্স খুব বেড়ে গেছে! কিন্তু কেউ কখনও ভেবে দেখেছেন কেন এমনটা হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে নতুন প্রজন্মের স্বামী-স্ত্রীরা নিজেদের মধ্যে সেই গভীর সম্পর্ক তৈরি করে উঠতে পারছেন না। এর মূল কারণ সময়ের অভাব এবং অবশ্যই শারীরিক সম্পর্কের প্রতি অনিহা। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, এক্ষেত্রে শরীরিক সম্পর্কের ভূমিকা কোথায়?


এই প্রবন্ধটিতে একবার চোখ রাখুন, তাহলেই বুঝে যাবেন যে জিনিসটি নিয়ে আমরা লোক সমাজে কথা বলতে এত লজ্জা পাই, সেই শারীরিক সম্পর্ক বা দৈহিক মিলনের কত উপকারিতা রয়েছে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল যে আমাদের শরীর এবং মনকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখতে শারীরিত সম্পর্কের কোনও বিরল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল...


১. নিমেষে মাথা যন্ত্রণা কমে যায়:

একেবারেই ঠিক শুনেছেন! শারীরিক মিলনের সময় শারীরে অক্সিটসিন সহ একাধিক 'ফিল-গুড হরমোনের' ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে শুধু মাথা যন্ত্রণা নয়, যে কোনও ধরনের ব্যথাই কমে যায়।


২. ওজন হ্রাস পায়:

সপ্তাহে ২ বার টানা ৩০ মিনিট শরারিক মিলন করলে বছরে প্রায় ৫০০০ ক্যালোরি বার্ন হয়। ফলে ওজন হ্রাসের পথ আরও প্রশস্ত হয়। এবার বুঝতে পারছেন তো শারীরিক মিলন কতটা কার্যকরি।


৩. হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে:

একটা নয়, একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে প্রায় প্রতিদিন শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা চোখে পরার মতো হ্রাস পায়। কুইউ ইউনিভার্সিটির প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে, যারা সপ্তাহে কম করে ৩ বার সেক্স করেন, তাদের হার্টের স্বাস্থ্যের দারুন উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।


৪. স্পার্ম কাউন্টের উন্নতি ঘটবে:

২১ শতকে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পরছে একটি বিশেষ রোগ, যা আমরা চিনেছি বন্ধাত্ব বা নির্ফাটিলিটি নামে। এমন সমস্যা হওয়ার পিছনে অনেক কারণ দায়ি থাকে, যার মধ্যে অন্য়তম হল 'খারাপ স্পার্ম কাউন্ট'। আসলে আজকের জেটযুগে স্ট্রেস লেভেল এতটাই বেড়ে গেছে যে তার সরাসরি প্রভাব পরছে স্পার্মের উপরও। ফলে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও শারীরিক সম্পর্ক দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন যদি স্বামী-স্ত্রী শারিরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন, তাহলে স্বামীর স্বার্ম কাউন্টে দারুন উন্নতি ঘটে। তাই আপনি যদি বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে সপ্তাহে কম করে ২ বার অবশ্যই শারীরিত সম্পর্ক করুন। এমনটা করলে দেখবেন বাচ্চা নিতে আর কোনও সমস্যাই হবে না।


৫. মহিলাদের একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে:

শারীরিক মিলনের সময় মেয়েদের পেলভিক মাসল শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে প্রস্রাব সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে ইউরিন লিকেজ এবং প্রস্রাবের সময় হওয়া নানাবিধ অসুবিধাও কমতে শুরু করে দেয়।


৬. আয়ু বেড়ে যায়:

বহু বছর সুস্থভাবে বাঁচতে চান কি? তাহলে আজ থেকেই সপ্তাহে ২-৩ বার শারীরিক মিলনে লিপ্ত হওয়ার পরিকল্পনা নিন। কেন এমন কথা বলছি জানেন? কারণ সম্প্রতি একদল অষ্ট্রেলিয়ান গবেষক প্রমাণ করেছেন যে যারা সপ্তাহে কম করে ৩ বার সেক্স করেন, তাদের কোনও রোগের কারণে মৃত্য়ুর সম্ভাবনা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়।


৭. ভাইরাল ফিবার দূরে পালাবে:

সপ্তাহে ১-২ বার শরারিকভাবে মিলিত হলে শরীরে 'ইমিউনোগ্লোবিউলিন-এ' নামে এক ধরনের অ্যান্টিবডির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, যা ভাইরাল ফিবার, সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশি প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমিয়ে দেয়। প্রসঙ্গত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা সপ্তাহে ২ বারের বেশি সেক্স করেন তাদের শরীরে বিশেষ এই অ্যান্টিবডির সংখ্যা বাকিদের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।


৮. শরীর রোগ মুক্ত হয়:

শরীরিক মিলনের সময় আমাদের শরীরে একাধিক 'অ্যান্টি-এজিং হরমোন' বা ডি এইচ ই এ- এর ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা শরীরকে ফিট রাখার পাশাপাশি একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে অনের রকম রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে শূন্যে এসে দাঁড়ায়।


৯. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়:

গবেষণা বলছে, যত শারীরিক সম্পর্ক করবেন তত শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে ত্বকে বেশি বেশি করে কোষের জন্ম হতে শুরু করবে। আর এমনটা যত হবে, তত ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।


১০. রক্তচাপ একেবারে স্বাভাবিক থাকে:

যারা রক্ত চাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা সপ্তাহে ২-৩ বার সেক্স করা শুরু করুন। দেখবেন ফল পাবেন একেবারে হাতে নাতে। কারণ শারীরিক মিলনের সময় শরীরে একাধিক পরিবর্তন হয়ে থাকে, যে কারণে রক্তচাপ একেবারে স্বাভাবিক লেভেলে চলে আসে। প্রসঙ্গত, স্ট্রেস কমাতেও শারীরিক মিলনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।


১১. ঘুম না আসার সমস্যা একেবারে কমে যায়:

যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে শারীরিক সম্পর্কের সময় শরীরে অক্সিটসিন হরমোনের ক্ষরণ খুব বেড়ে যায়। এই হরমোনের যখন রক্তে মেশে তখন ঘুম আসতে শুরু করে। ফলে যাদের রাতের বেলা ঘুম না হওয়ার মতো সমস্যা রয়েছে তারা এই পদ্ধতিতে এই রোগ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারেন। -বোল্ডস্কাই