তোদের ফাঁসিতে ঝোলাব

আইন আদালত January 22, 2018 3,634
তোদের ফাঁসিতে ঝোলাব

মন্টুর বাপ তখন বয়োবৃদ্ধ। জজকোর্টে জব্বর এক মামলা চলছে। মামলায় সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছে তাকে। তবে বয়োবৃদ্ধ হলেও তখনও কথাবার্তায় বেশ টনটনে তিনি। বাদীপক্ষের দুঁদে উকিল শফি মণ্ডল বুড়োটাকে ঘাবড়ে দেবার জন্য প্রথমেই বাজখাঁই গলায় জিজ্ঞাসা করলেন, আমাকে চেনেন?


মন্টুর বাপ : কয় কি ভাতিজা। চিনব না মানে? তুমি-ই তো সেই মণ্ডল। তোমাকে ন্যাংটো বয়স থেকেই চিনি। পুরাই বখাটে কিসিমের ছিলা। মিথ্যায় চ্যাম্পিয়ন। ঠগবাজি-বাটপারিতে ডিগ্রি পাওয়া ওস্তাদ ছিলে। তোমার সব কীর্তি একদিনে বইলা শেষ করা কঠিন, বাবা। নিজেকে মস্ত বড় ব্যারিস্টার ভাব, আসলে উকিলের মুহুরি হবার যোগ্য না তুমি! আর তুমি আমাকে বলছ তোমায় চিনি কি-না?


মণ্ডল উকিলকে কেউ ঠাস করে চড় মারলেও এত স্তম্ভিত হতেন না। ঘোর কাটতেই বিবাদীপক্ষের উকিলকে দেখিয়ে দ্বিতীয় প্রশ্ন করলেন : আমার সম্পর্কে অনেক বেশি জানেন মনে হচ্ছে। সেটা পরে দেখছি। এখন বলেন উনাকে চেনেন?


মন্টুর বাপ : হেরে না চেনার কী আছে? ও তো পাতলা খান লেনের একসময়ের ভাদাইম্যা জসিম। একদম কমিনার কমিনা। হাড়ে হাড়ে শয়তান, মিচকা শয়তান। পাঁড় মাতাল। এই শহরের সবচেয়ে পিশাচ উকিল। বউয়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে একসঙ্গে তিনটে ছুঁড়ির সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করে যাচ্ছে। ওই তিনজনের মধ্যে তোমার বউ রুপালি একনম্বরে আছে। ওরে সবাই চেনে।


এ সময় বিবাদীপক্ষের উকিলের মাথা ঘুরতে লাগল। পরিস্থিতি সামাল দিতে জজসাহেব টেবিলে হাতুড়ি পিটিয়ে বললেন : অর্ডার অর্ডার।


আদালতে পিনপতন নীরবতা। জজসাহেব ইশারায় দুই উকিলকেই কাছে ডাকলেন :


এবার ফিসফিসিয়ে জজ বললেন : দুই গাধার একজনও যদি এখন মন্টু মিয়াকে প্রশ্ন করিস যে আমায় চেনে কি-না- তাইলে তোদের আমি ফাঁসিতে ঝোলাব, নিজ হাতে।


দুই উকিল মাথা নিচু করে আদালত থেকে বের হয়ে গেলেন। জজসাহেব আদালত মুলতবি ঘোষণা করলেন।