ইসলাম কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম?

ইসলামিক সংবাদ December 31, 2017 3,995
ইসলাম কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম?

ইসলাম কি? ইসলাম কেনো এতোটা গুরুত্বপূর্ণ? পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়। (সূরা-আল ইমরান, আয়াত-১০২) এই আয়াতে আল্লাহ কাফেরদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন না, বরং তিনি মুসলমানদের আহ্বান করছেন এবং তাদেরকে শিয়া, সুন্নি, হানাফী, শফী ইত্যাদি হিসাবে মরতে নিষেধ করেছেন। সবাইকে শুধুমাত্র মুসলিম থাকা অবস্থায় মৃত্যুর কথা বলেছেন। আমাদেরকে আসলে একজন প্রকৃত মুসলমান হওয়া উচিত। অন্য কোনো গোষ্ঠীতে নিজেকে আলাদা করা উচিত নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মাহ ৭৩টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিভক্ত হবে যার মধ্যে থেকে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে। আর অবশিষ্ট ৭২ টি দল জাহান্নামে যাবে। যে দলটি জান্নাতে আসছে তারা কুরআন ও সহীহ হাদিসকে নিছকই অনুসরণ করবে এবং মুসলিম আমিরের অনুসরণ করবে এবং মৃত্যু পর্যন্ত তারা শুধু মুসলমান অবস্থায় থাকবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, যারা নিজেদের দীনকে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে নিঃসন্দেহে তাদের সাথে তোমার কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারে আল্লাহর ওপর ন্যাস্ত রয়েছে। তারা কি করেছে, সে কথা তিনিই তাদেরকে জানাবেন। (সূরা-আন আম, আয়াত-১৫৯) এখানে নবী (সা.)-এর মাধ্যমে আল্লাহ সত্যদীনের সকল অণুসারীকে সম্বোধন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বক্তব্যের সার নির্যাস হচ্ছে: এক আল্লাহকে ইলাহ ও রব বলে মেনে নাও। আল্লাহর সত্তা, গুণাবলী, ক্ষমতা-ইখতিয়ার ও অধিকারে কাউকে শরীক করো না। আল্লাহর সামনে নিজেকে জবাবদিহি করতে হবে মনে করে আখেরাতের প্রতি ঈমান আনো। আল্লাহ তার রসূলদের ও কিতাবসমূহের মাধ্যমে যে ব্যাপক মূলনীতি ও বিষয়ের শিক্ষা দিয়েছেন সে অনুযায়ী জীবন যাপন করো। এগুলোই চিরকাল আসল দিন হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে এবং এখনো যথার্থ দীন বলতে এগুলোকেই বুঝায়। জন্মের প্রথম দিন থেকে মানুষকে এ দীনই দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে বিভিন্ন যুগের লোকেরা তাদের নিজস্ব চিন্তা ও মানসিকতার ভ্রান্ত উদ্ভাবনী ক্ষমতার সাহায্য অথবা নিজেদের প্রবৃত্তি ও লালসার মাত্রাতিরিক্ত প্রভাবে বা ভক্তির আতিশয্যে এ আসল দীনকে বিকৃত করে বিভিন্ন প্রকার ধর্মের সৃষ্টি করেছে। এ দীনের মধ্যে তারা নতুন নতুন কথা মিশিয়ে দিয়েছে। নিজেদের কুসংস্কার, কল্পনা, বিলাসিতা, আন্দাজ-অনুমান ও নিজেদের দার্শনিক চিন্তা-ভাবনার ছাঁচে ফেলে তার আকীদা বিশ্বাসে ব্যাপক পরিবর্তণ সাধন করেছে এবং কাটাই ছাটাই এর মাধ্যমে তাকে পুরোপুরি বিকৃত করে দিয়েছে। অনেক নতুন বিষয় উদ্ভাবন করে তার বিধানসমূহের সাথে জুড়ে দিয়েছে। মনগড়া আইন রচনা করেছে। আইনের খুটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে অযথা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে। ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধ করার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করেছে। গুরুত্বপূর্ণকে গুরুত্বহীন ও গুরুত্বহীনকে গুরুত্বপূর্ণ বানিয়ে দিয়েছে। যেসব নবী-রসূল এ দীন প্রচার করেছেন এবং যেসব মহান মনীষী ও বুযর্গ এ দীনের প্রতিষ্ঠায় জীবনপাত করে গেছেন তাদের কারোর কারোর প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশের ক্ষেত্রে অত্যাধিক বাড়াবাড়ি করেছে আবার কারোর কারোর প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের প্রকাশ ঘটিয়েছে এবং তাদের বিরোধিতা করেছে। এভাবে অসংখ্য ধর্ম ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে চলেছে। এদের প্রত্যেকটি ধর্ম ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব মানব সমাজকে কলহ, বিবাদ ও পারস্পরিক সংঘর্ষে লিপ্ত করেছে। এভাবে মানব সমাজ দ্বন্দ্বমুখর দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে চলেছে। কাজেই বর্তমানে যে ব্যক্তিই আসল দীনের অনুসারী হবে, তার জন্য এসব বিভিন্ন ধর্মী সম্প্রদায় ও দলাদলি থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া এবং তাদের থেকে নিজেদের পথকে আলাদা করে নেয়াই হবে অপরিহার্য। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তোমরা যেন তাদের মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে এবং সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য হিদায়াত পাওয়ার পরও মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে। যারা এ নীতি অবলম্বন করেছে তারা সেদিন কঠিন শাস্তি পাবে। (সূরা-আল ইমরান, আয়াত-১০৫) সূত্র:[url=http://NewSmSBD.Com]NewsmsBD.Com[/url]