যেসব পুরুষকে বিয়ে করা উচিত নয়

লাইফ স্টাইল December 30, 2017 3,041
যেসব পুরুষকে বিয়ে করা উচিত নয়

স্বপ্নের পুরুষকে খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে অবশেষে বানরের গলায় দিলাম মুক্তোর হার—বিয়ের কয়েক দিন যেতে না-যেতেই এমন আক্ষেপে পোড়েন অনেক নারী। তবে বিয়ে করে নারীদের যেন আক্ষেপে পুড়তে না হয়, এ জন্য পুরুষদের একটি তালিকা তৈরি করেছেন অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত পাদ্রি ও বিয়ে-বিশেষজ্ঞ প্যাট কনর। ‘যেসব পুরুষকে বিয়ে করতে নেই’ শিরোনাম দিয়ে আটটি বিশেষ গুণসম্পন্ন (!) পুরুষদের এই তালিকায় জায়গা দিয়েছেন কনর।


মার্কিন সাময়িকী গ্ল্যামার জানিয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে বসবাসরত প্যাট কনর ৪০ বছর ধরে দম্পতিদের নানা বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তিনি এ পর্যন্ত ২০০টির বেশি বিয়ে পড়িয়েছেন। বিয়ে-পূর্ব পরামর্শ দানের সঙ্গেও তিনি জড়িত।


ক্যাথলিক মতাবলম্বী এই পাদ্রি ‘ভুল’ লোককে বিয়ে করার কুফল সম্পর্কে স্থানীয় বিভিন্ন উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন। কনর বিশ্বাস করেন, ‘প্রাণের বন্ধু’ বলে কেউ নেই। শুধু প্রেমিকদের সঙ্গেই অঙ্গীকার করা যায়।


নারীরা সাবধান। ভুল করেও কনরের তালিকায় থাকা আটটি গুণ ভুলবেন না। গুণগুলো হলো মায়ের আঁঁচল ধরে থাকা ছেলে; যেসব পুরুষ ঠিকভাবে অর্থকড়ির ব্যবস্থা করতে পারেন না; যাঁদের কোনো বন্ধু নেই; যেসব পুরুষ লোকজনের মধ্যে প্রেমিকাকে একা ছেড়ে যান; রেস্তোরাঁ বা ক্যাফেতে ওয়েটারদের সঙ্গে যাঁরা খারাপ আচরণ করেন; যেসব পুরুষ নিজেদের উপহাস করতে পারেন না; যাঁরা কর্তৃত্ব ভাগাভাগি করতে পারেন না এবং যেসব পুরুষ প্রেমিকার চাহিদার বিপরীতে কখনোই নিজের চাহিদার কথা জানান না।


বিয়ে করার সেরা সময় কখন?


‘দাওয়াত পাচ্ছি না কেন’—একটি নির্দিষ্ট বয়স পেরোলেই তরুণ-তরুণীদের দিকে ছুটে যায় এমন ইঙ্গিতপূর্ণ জিজ্ঞাসা। অতটা ভণিতা না করে কেউ সরাসরিই জিজ্ঞেস করেন, ‘বিয়ে করছ কবে?’ এমন সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব কঠিন কাজ। ‘একটু গুছিয়ে নিই’, ‘আরে বয়স তো এখনো আছে’ বলে পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলে। কিন্তু আসলেই কোন বয়সে বিয়ে করা উচিত? জীবনের কোন পর্যায়ে থাকলে বিয়ে করার সময়টাকে সবচেয়ে উপযুক্ত মনে হয়?


শুধু বয়স নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আরও কিছু ব্যাপার। যিনি বিয়ে করছেন, সেই ছেলে বা মেয়েটি শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত কি না, জীবনের এত বড় দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে উপযুক্ত ভাবছেন কি না, ক্যারিয়ারের কোন পর্যায়ে আছেন…এমন অনেক বিষয় কাজ করে। আবার এও ঠিক, এসব নিয়ে বেশি বেশি ভাবতে গিয়ে বা দুশ্চিন্তা করতে গিয়ে অনেকে সঠিক সময়ে বিয়েটাই করে উঠতে পারেন না।


একটি নির্দিষ্ট বয়স নিশ্চয়ই আছে, যে বয়সটা সংসার গুছিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে ভালো। গুহামানবদের যুগ থেকেই এ বিষয়টি ধ্রুবসত্য! ১৩-১৪ বছর বয়সে বয়ঃপ্রাপ্ত হলেও বিবাহিত জীবন বা পারিবারিক জীবনে তারা ঢুকত আরও পরে। যখন তারা নিশ্চিত হতো শিকার করে সঙ্গী ও সন্তানদের বাঁচানোর ক্ষমতা রাখছে, তখনই পারিবারিক জীবনে ঢুকত পুরুষ। নারীরাও সন্তান পালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেই পারিবারিক জীবনে আগ্রহী হতো।


আধুনিক সমাজও এটা মেনে চলে। এ নিয়ে ২০১৫ সালে একটি গবেষণা চালিয়েছে ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষক নিকোলাস উলফফিঙ্গার দাবি করেন, বিয়ের আদর্শ সময় খুঁজে পেয়েছেন তিনি। বিবাহিত জীবন দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য সবাইকে ২৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে বিয়ে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উলফফিঙ্গার লিখেছেন, ‘বয়স বিশের শেষভাগে পৌঁছালে বিয়েতে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা কমতে থাকে। তবে বয়স যখনই মধ্যত্রিশ পার হয়ে যায়, ততই সে ঝুঁকি আবার ফিরে আসে।’ এ গবেষণা শুধু পশ্চিমা বিশ্বের জন্য নয়, সব দেশ ও সংস্কৃতির জন্যই সঠিক বলে দাবি উলফফিঙ্গারের।


আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে চাইলে, এই বয়সটাতেই (২৮-৩২) কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সারা জীবন কাটানোর পক্ষে সঠিক যুক্তি খুঁজে পায় মানুষ। এই বয়সেই পরিণতবোধ আসে। তারুণ্যের অস্থিরতা কাটতে থাকে। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। জীবনের এ পর্যায়ে এসে বুঝতে পারে, আসলেই এ মানুষটা তাঁর যোগ্য কি না। কর্মজীবনেও এই বয়সে এসে স্থিতি আসে মানুষের জীবনে।


তাই ২৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের মধ্যেই বিয়েটা সেরে ফেলা ভালো। সন্তান নেওয়া ও তাকে একটা পর্যায় পর্যন্ত অভিভাবকের ছায়া দেওয়ার জন্যও ভালো সময় পাওয়া যায়।


তবে এই বয়সে পড়েছেন বলেই বিয়ে করে ফেলতেই হবে, তাও নয়। বিশেষ করে এসব কারণে কখনোই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেবেন না—