সবচেয়ে ধনী ও স্মার্ট লোকদের ১০টি কমন বৈশিষ্ট্য

লাইফ স্টাইল October 30, 2017 2,330
সবচেয়ে ধনী ও স্মার্ট লোকদের ১০টি কমন বৈশিষ্ট্য

ইতিহাসে লাখ লাখ স্মার্ট লোক আছে যারা দুনিয়াকে বদলে দিয়েছিলেন। মানুষ হিসেবে প্রায় প্রত্যেকেই অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে অভ্যস্ত। কিন্তু সমস্যা হলো যখন আমরা অন্য একজন স্বাস্থ্যবান, সম্পদশালী এবং সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তির সঙ্গে নিজের তুলনা করি তখন আমরা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ি বা অস্বস্তি বোধ করি এবং হীনমন্যতায় ভুগি। কিন্তু সত্য হলো সকলেই এই দুনিয়ায় প্রতিভা এবং ভালো ব্যাংক ব্যালেন্স জন্মসূত্রেই নিয়ে আসেন না।


গবেষকরা ইতিহাসের লাখ লাখ ধনী ও স্মার্ট মানুষদের থেকে মাত্র ১০০০ জনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে সক্ষম হয়েছেন। আর তা থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং সবচেয়ে স্মার্টলোকদের সবার মধ্যেই আছে এমন বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি তালিকা তৈরি করেছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী সেই বৈশিষ্ট্যগুলো।


১. নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খুবই যত্নবান

হ্যাঁ, সময় হলো অর্থ। কিন্তু আপনি কিছুই অর্জন করতে পারবেন না যদি আপনার স্বাস্থ্য ভালো না হয়। আর দিন শেষে অর্থের চেয়ে স্বাস্থ্যই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেয়। বিশ্বের বেশিরভাগ স্মার্ট এবং সম্পদশালী মানুষেরা প্রতিদিন নিজের স্বাস্থ্যের দেখভাল করাকে প্রথম এবং প্রধান কাজ হিসেবে গণ্য করেন। এর ফলে তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারেন এবং যে কোনো কাজে ভালোও করতে পারেন।


২. দানশীলতা

গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট লোকদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য দানশীলতা। বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালীরা তাদের সম্পদের এক ভাগের ১০ ভাগই গরীবদেরকে বা কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করে দেন। বুদ্ধিমানরা জানেন, শুধু একটি হাসি বা একটি হ্যালো বলেই একজন মানুষের জীবনে বিশাল পরিবর্তন ঘটানো যায়।


৩. ব্যর্থতার ভয়ে ভীত নন

একজন বিজয়ী এমন এক ব্যক্তি যিনি অতীতে বহুবার হেরেছেন! স্মার্ট মানুষরা হেরে যাওয়ার এবং পরে বিজয়ী হিসেবে বিকশিত হওয়ার মূল্য জানেন। তারা হেরে যাওয়ার ভয়ে ভীত নন। এমনকি প্রকৃত পক্ষে তারা ব্যর্থতাকেই জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষক হিসেবে গণ্য করেন। জ্ঞান এবং তথ্য খুবই শক্তিশালী। আর আপনার যদি তা থাকে তাহলে কেউই আপনাকে হারিয়ে দিতে পারবে না। আপনার যদি যথেষ্ট জ্ঞান থাকে তাহলে নিজের সীমা অতিক্রম করে স্বপ্ন দেখতেও এবং সেই স্বপ্নের পিছু তাড়া করতেও কোনো সমস্যা নেই।


৪. সঠিক লোককে বাছাই করা

আপনার সঙ্গে কাজ করার জন্য সবার সেরা লোককে প্রয়োজন নেই আপনার। বরং সঠিক লোকটিতে বাছাই করতে হবে। বিশ্বব্যাপী স্মার্ট লোকরা ধনী হয়েছেন মূলত তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য সঠিক লোকটিকে বাছাই করতে পারার মধ্য দিয়ে। আপনার জন্য সঠিক লোকটি আপনার সঙ্গে থাকলে আপনি নিজের দূর্বলতাগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য স্থাপন করতে পারবেন। এবং সঠিক লোকটি আপনার শক্তি হিসেবে গণ্য হবে।


৫. সঠিক কাজটি প্রথমে করা

ধনী এবং সফল হতে চাইলে সঠিক কাজটি প্রথমে করতে হবে। শক্তিশালী লোকদেরকে অন্যরা লাইনচ্যুত করতে পারে না। তারা প্রথমে সঠিক কাজটি করেন, এরপর পরের কাজটি করেন। আপনার জন্য কোনটা জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ সেটি বাছাই করুন আগে। আর বাকীটা পরের দিনের জন্য রেখে দিন। জীবনে কোনো কিছু অর্জন করতে চাইলে মনোযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


৬. নিজের শক্তি কী তা জানুন এবং দূর্বলতা মেনে নিন

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষরা তাদের নিজেদের দূর্বলতা কী তা জানেন এবং শক্তি নিয়ে খেলা করেন। আপনাকেও নিজের দূর্বলতার প্রতি চোখ বন্ধ করে রেখে শক্তির জায়গাগুলিকে আরো শক্তিশালী করায় মনোযোগ দিতে হবে। জীবনে কোনো সমস্যা মোকাবিলার সময় নিজের দূর্বলতার চেয়ে শক্তির জায়গাগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।


৭. নিজের জন্য একান্ত সময় ব্যয়

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং স্মার্ট মানুষরা সবসময়ই নিজের জন্য একান্তে কিছুটা সময় কাটানোর ওপর গুরুত্ব দেন। তারা নিজেদের জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করা এবং কিছুটা সময় আয়েশ করে কাটানোর ওপর জোর দেন। আত্ম-উপলব্ধি এবং আত্ম-উন্নয়নের জন্য নিজের জন্য একান্তে সময় কাটানোও জরুরি।


৮. নিজেই নিজের জন্য কাজ করা

কোনো সমস্যা মোকাবিলায় বিশ্বের সবচেয়ে ধনী, স্মার্ট এবং সফল মানুষরা সবার আগে নিজেই নিজের জন্য কাজ করেন। বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ধনীরা সবসময়ই সবার আগে নিজের জন্য নিজেই কাজ করতে চান এবং নিজেকেই শীর্ষে দেখতে পান! তবে কখনো যদি তারা বুঝতে পারেন নিজের জন্য নিজে কাজ করতে পারবেন না তখন তারা সঠিক লোকটিকে বাছাই করেন তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য।


৯. অপেক্ষা করেন না

স্মার্ট লোকরা স্রোতের বিপরীতে কাজ করেন। বিশ্বের শীর্ষ ধনীরা হয়তো অন্যদের চেয়ে আলাদা মানুষ নন কিন্তু তারা অন্যদের চেয়ে আলাদা কাজ করেন। তারা কখনোই সঠিক সুযোগের জন্য অপেক্ষা করেন না। বরং তারা নিজেরাই নিজেদের জন্য সুযোগ তৈরি করে নেন।


১০. তারা নিয়মিতভাবেই প্রচুর ব্যর্থ হন

প্রতিটি মানুষের জীবনেই উত্থান-পতন থাকে। আর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং বুদ্ধিমান লোকদের মধ্যেও এই বিষয়টি আছে। তারা প্রায়-প্রায়ই ব্যর্থ হন। তারা নিজের একটি ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সেই ভুলটি আর দ্বিতীয়বার করেন না।