দীর্ঘজীবী হতে চাইলে নিয়মিত খেতে হবে এই ৮টি ভেষজ খাদ্য

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস October 21, 2017 997
দীর্ঘজীবী হতে চাইলে নিয়মিত খেতে হবে এই ৮টি ভেষজ খাদ্য

দীর্ঘজীবী হতে কে না চায়? কিন্তু বাধ সাধে নানান শারীরিক সমস্যা। হাতে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, মাথায় ব্যথা থেকে শুরু করে চোখের সমস্যা, হার্টের সমস্যা আরও কত কী? আসলে বর্তমানে অসুস্থ হতে কোনও বয়সের দরকার পড়ে না। যে কোনও বয়সেই এখন যে কেউ সাধারণ থেকে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।


এর পেছনে মূল কারণ যেমন আমাদের অতি আধুনিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা, তেমনই পরিবেশের হঠাৎ পরিবর্তনও। তবে, নানা রকম শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদের পরিবেশের ওপর ভরসা করতেই হবে।


আর ঠিক এই কারণেই আমাদের বেশ কিছু পুরনো পদ্ধতি নিয়মিত মেনে চলতে হবে। যাতে জীবনের অনেকগুলি দিন আমরা সুস্থভাবে কাটাতে পারি। এক্ষেত্রে কতগুলি খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখাটা আবশ্যক!


১. আমলকি

আমলকী একটি অতি পরিচিত নাম। বহু প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশ সহ সমগ্র ভারতবর্ষে আমলকি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভারতের হাজার বছর ধরে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, আমলকি আমাদের শরীরে তিনটি দোষ, অর্থাৎ বায়ু, পিত্ত এবং কফের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আমলকির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকা ভিটামিন সি নানারকম রোগ এবং জীবাণুর হাত থেকে আমদের রক্ষা করতে পারে। এছাড়াও আমলকির মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে অকাল বার্ধক্যের সমস্যা দূর হয়। এতে মানুষকে দীর্ঘজীবী করার উপাদান উপস্থিত রয়েছে।


২. আদা

আদার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। মনে করা হয় যে, আদাতে প্রায় ২৫ ধরণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি নানারকম রোগ নির্মূল করতে সাহায্য করে। এছাড়াও হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাড়ের সমস্যা এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে।


৩. এলাচ

চীনে এলাচ চায়ের বেশ কদর। কারণ ওই দেশে বিশ্বাস করা হয় যে, এলাচ চা পান করলে দীর্ঘজীবী হওয়া যায়। আদতে, এলাচ আমাদের শরীরের ভিতর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রসঙ্গত, এলাচের মধ্যে এক ধরণের তেল থাকে, যা আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে, রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে, রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং এনার্জি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।


৪. আজোয়ান

আজোয়ান হৃদযন্ত্রের জন্য দারুণ উপকারি। কারণ আজোয়ানের মধ্যে নিয়াসিন এবং থাইমল উপস্থিত থাকে, যা হৃদয় সুস্থ রাখে। এছাড়াও আজোয়ান খুবই উপকারি একটি অ্যান্টিবায়োটিক।


৫. মৌরি

পেটের যে কোনও সমস্যা দূর করতে মৌরি দারুণ কাজে দেয়। মৌরিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফাইবার থাকে। সেই সঙ্গে এই প্রকৃতিক উপাদানটি পাচকরস তৈরি হতে সাহায্য করে এবং স্নায়ুকে ঠিক মতো কাজ করতে সাহায্য করে। বলা হয় যে মৌরি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে, সেই পানি সকালে পান করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সারাদিন খুব ভাল ভাবে থাকা যায়।


৬. লবঙ্গ

লবঙ্গ হাজারো গুনে সমৃদ্ধ। যেমন এর মধ্যে জীবাণুনাশক, ছত্রাকনাশক, অ্যালার্জি নিরোধক এবং ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই তো দৈনন্দিন জীবনে লবঙ্গের ব্যবহার খুবই অপরিহার্য। লবঙ্গের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।


৭. গোলমরিচ

যে কোনও রান্নাতেই এই মশলাটির ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র রান্নায় মশলা হিসাবে নয়, গোলমরিচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভেষজ গুণ ও খনিজ গুণ রয়েছে। গোলমরিচের আরও একটি গুণ আছে, এটি হলুদের সঙ্গে মিশে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে হলুদ মেশানো দুধে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও গোলমরিচ হজম প্রক্রিয়া দৃঢ় করতে সাহায্য করে।


৮. মধু

মধুর গুণ নিয়ে আলাদা কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। রূপচর্চা থেকে শুরু করে শরীরের যত্ন, সবকিছুতেই দশে দশ দেওয়া যায় মধুকে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন মধু খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।


সূত্র: এনডিটিভি