কিডনিতে পাথর! কিভাবে বুঝবেন?

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস October 9, 2017 906
কিডনিতে পাথর! কিভাবে বুঝবেন?

ধীরে ধীরে রোগ বাড়তে থাকে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া সত্ত্বেও রোগ ধরা পড়তে দেরি হয়ে যায়। শেষমেশ যখন ধরা পড়ে, চূড়ান্ত অবস্থা। কিছুই আর করার থাকে না। আবার, কিডনি জটিল অবস্থায় না-পৌঁছলে, অনেক ক্ষেত্রেই আগাম লক্ষণ দেখা যায় না। নিচে ১০টি লক্ষণের উল্লেখ করা হলো। দু-তিনটে লক্ষণ যদি একসঙ্গে মিলে যায়, চেপে না-রেখে ডাক্তারের কাছে যান। কিডনিতে পাথর হলেও, এমনটা হতে পারে।


১. বারবার প্রস্রাব পাচ্ছে? প্রসাব পরিষ্কার হচ্ছে না?

হঠাত্‍‌ করে যদি এমন পরিবর্তন আসে, আগে থাকতেই সতর্ক হোন। ঘনঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব করতে গিয়ে আটকে আটকে যাওয়া, এসবই কিডনির সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ।


২. ঘনঘন শ্বাস

কিডনির সমস্যা তৈরি হলেই অতিরিক্ত ফ্লুইড গিয়ে ফুসফুসে জমা হয়। যে কারণে শ্বাসের কষ্ট হয়। ঘনঘন শ্বাস পড়ে। একটু ছুটোছুটিতেই হাঁফ ধরে যায়।


৩. প্রসাবের সঙ্গে রক্ত বেরোচ্ছে কি না, খেয়াল করেছেন?

যদি প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়ে, দেরি না-করে ডাক্তারের কাছে যান। কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে এটা বড় লক্ষণ।


৪. প্রস্রাবে ফেনা হচ্ছে?

এটা কিন্তু একদম স্বাভাবিক লক্ষণ নয়। কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে এমনটা হয়। শরীর থেকে প্রোটিন গিয়ে মূত্রে মেশে বলেই ফেনা তৈরি হয়।


৫. পা ফুলছে না তো?

টক্সিন, বর্জ্য ছাড়াও শরীর থেকে অতিরিক্ত ফ্লুইড বের করে দেয়ার দায়িত্ব হল কিডনির। যখন কিডনি সেটা পারে না, ফ্লুইড-সহ সমস্তটাই শরীরে জমে থাকে। যে কারণে পা ফুলে যায়। মুখ ভার ভার লাগে।


৬. সামান্য পরিশ্রমেই খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন?

কিডনি থেকে নির্গত হয় এরিথ্রোপোয়েটিন হরমোন। এই হরমোন লোহিত রক্তকণিকাকে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিডনি ঠিকভাবে কাজ না-করলে, সেক্ষেত্রে এরিথ্রোপোয়েটিনের পরিমাণ কমে আসে। ফলে রক্তাল্পতার লক্ষণ দেখা যায়। শরীর দুর্বল লাগে। অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তি চেপে ধরে।


৭. মাঝমধ্যে মাথা ঘুরছে?

মনঃসংযোগ করতে পারছেন না? অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার ক্ষেত্রেও এমন লক্ষণ দেখা যায়। তবে, কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলো আরো প্রকট। মস্তিষ্কে কম অক্সিজেন যাওয়ার কারণেই হঠাৎ‌ হঠাৎ‌ মাথা ঘুরে যায়। মনঃসংযোগের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে।


৮. গরমেও ঠান্ডা বোধ করছেন?

চার পাশে গরম থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি শীত অনুভব করেন এবং এটা যদি বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকে, দেরি না-করে ডাক্তার দেখানো উচিত। নিশ্চিতভাবেই এটা কিডনির সমস্যার একটা লক্ষণ।


৯. ফুসকুড়ি ও চুলকুনিতে নাজেহাল?

কিডনিতে গোলযোগ শুরু হলে, গায়ে ঘনঘন ফুসকুড়ি বা র‌্যাশ বেরোয়। ত্বকে চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা যায়। অ্যালার্জি বলে ধরে নিয়ে প্রায় সময়ই আমরা গুরুত্ব দিই না। কিন্তু, ভুললে চলবে না কিডনির কোনো অসুখ হলে বা কিডনি একদম কাজ না-করলেও এমনটা হতে পারে।


১০. বমি বমি ভাব আছে?

নানা কারণে গা গুলিয়ে উঠতে পারে। তবে কিডনির অসুখের ক্ষেত্রে এটা কিন্তু চূড়ান্ত লক্ষণ বলে ধরে নিতে পারেন। রক্তে অতিরিক্ত বর্জ্য পদার্থ মিশে গেলে, শরীর আর তখন নিতে পারে না। ফলে খাবার দেখলেই গা গুলিয়ে ওঠে। সবসময় বমি বমি ভাব থাকে। মাঝেমধ্যে বমিও হয়।


অতএব, সাবধান। যদি কয়েকটা লক্ষণ মিলে যায়, ভয় না-পেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সাবধানের মার নেই।