দেহের এই সিগনালগুলো যেকোনো মূল্যে কখনোই অগ্রাহ্য করা যাবে না

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস September 11, 2017 998
দেহের এই সিগনালগুলো যেকোনো মূল্যে কখনোই অগ্রাহ্য করা যাবে না

মানবদেহ সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল জিনিস। ভেতরে কোনো খুঁত থাকলে বা সমস্যা ঘটলেই এটি আমাদেরকে অনবরত সিগনাল দিতে থাকে। আমাদের ভেতরগত অঙ্গগুলো এবং সিস্টেম সম্পর্কেও তথ্য সরবরাহ করে আমাদের দেহ।


কিন্তু আমরা প্রায়ই আমাদের দেহটি আমাদেরকে কী বলতে চায় তা শুনতে চাই না। আর এটাই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সবচেয়ে বড় ভুল কাজটি যা আমরা প্রায়ই করি।


এমন বিশেষ কিছু উদ্বেগজনক সিগনাল আছে যেসব আমাদের দেহ লক্ষণ হিসেবে আমাদেরকে জানান দেয়। যে কোনো মূল্যে সেসবকে অগ্রাহ্য না করাটাই হবে আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এসব উপসর্গ বিশ্লেষণ করে হয়তো আমরা বেশ কিছু অজানা স্বাস্থ্যগত সমস্যা সনাক্ত করতে পারব। যা তাদের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে।


আমরা অনেক সময় ছোটোখাটো অনেক স্বাস্থ্যগত সমস্যা অগ্রাহ্য করি। কিন্তু এমন কিছু উপসর্গ আছে যেগুলোর ব্যাপারে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই লেখায় এমন কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করা হলো যেগুলো কোনোভাবেই অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না।


১. চোখের নিচের কালো দাগ

যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমাতে না পারলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার হয়। তবে রক্তশূন্যতার কারণেও চোখের নিচে কালি পড়তে পারে। দেহে যথেষ্ট পরিমাণে লাল রক্ত কোষ উৎপাদিত না হলে চোখের নিচের ত্বকে কালি পড়ে।


২. আঙুলের রং পরিবর্তিত হওয়া

আপনার আঙুলের ত্বকের রং যদি প্রায়ই পরিবর্তিত হয় তাহলে এর পেছনে কোনো গুরুতর কারণ আছে। এটি রায়নাড সিনড্রমে আক্রান্ত হওয়ার একটি লক্ষণ। নিম্ন তাপমাত্রার কারণে রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোতে খিঁচুনি হলে এমনটা ঘটে। এই লক্ষণটি কোনোভাবেই অগ্রাহ্য করা যাবে না। এমনটি হলে সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।


৩. ঝাপসা দৃষ্টি

আপনার চোখদুটো খুবই ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার পর যদি আপনি দেখেনে যে আপনি আপনার কাছের মানুষ বা বস্তুও দেখতে পাচ্ছেন না। তাহলে বুঝতে হবে আপনার মায়োপিয়া নামের দৃষ্টিসংক্রান্ত চোখের রোগ হয়েছে।


৪. চোখের সামনে কোনো দাগ

ছোট্ট বিন্দু বা রেখার মতো করেও এসবের আবির্ভাব ঘটতে পারে। হঠাৎ করেই এসবের আবির্ভাব ঘটে এবং অনেকে সময় উজ্জ্বল আলোতেও দেখা যায়। এই লক্ষণটি হতে পারে চোখে ছানি পড়া বা অন্য কোনো গুরুতর দৃষ্টিসংক্রান্ত সমস্যার পূর্ব লক্ষণ।


৫. পেটের ভেতরে সংগীত

সধারণত অন্ত্রের ভেতর চলমান প্রক্রিয়ার কারণে অনেক সময় পেটে গুড়গুড় আওয়াজ হয়। যদি কদাচিৎ এমন আওয়াজ শোনা যায় তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। কিন্তু প্রতিনিয়তই এমন আওয়াজ শোনো গেলে এবং সঙ্গে ব্যথাও হলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।


৬. ত্বকের খোসা ওঠা

দেহে ভিটামিনের অভাব হলে এমনটা ঘটে। ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসই পারে ত্বকের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে। খোসা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে যদি চুলকানিও থাকে তাহলে দ্রুতই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।


৭. ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষয় হওয়ার ফলে ঘ্রাণশক্তি কমে যেতে পারে। কিন্তু যদি তরুণ বয়সেই আপনার ঘ্রাণশক্তি কমে যেতে থাকে তাহলে তো বিপদেরই কথা। এমনটা হলে দ্রুতই ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করুন। শক্তিশালী ঠাণ্ডা বা অন্য কোনো ভাইরাল ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে এটি।


৮. চোখের পাতা দপদপ করা

চোখের পাতা দীর্ঘক্ষণ ধরে দপদপ করা মানে হলো আপনার চোখের পরিশ্রম বেশি হয়ে গেছে। এমনটা হলে কটন প্যাড ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করুন। কিন্তু এরপরও তা ভালো না হলে চিকিৎসকের মাধ্যমে চোখের পরীক্ষা করাতে হবে। কারণ স্নায়ুতন্ত্রের গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে এটি।


সূত্র : বোল্ডস্কাই