কোরবানির মাংস সমাজের মাধ্যমে বণ্টন কি ঠিক?

ইসলামিক শিক্ষা August 26, 2017 2,091
কোরবানির মাংস সমাজের মাধ্যমে বণ্টন কি ঠিক?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’।


জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।


আপনার জিজ্ঞাসার ২০০৬তম পর্বে সম্পর্কে ফরিদপুর থেকে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন শারমিন নাজমা। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।


প্রশ্ন : আমরা জানি কোরবানির মাংস তিন ভাগ করতে হয়। এক ভাগ গরিবের, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের এবং এক ভাগ নিজের। কিন্তু গ্রামে দেখা যায় এক ভাগ সমাজে দেওয়া হয়। সমাজের এক ভাগ কোন ভাগে পড়বে, গরিবের নাকি আত্মীয়স্বজনের?


উত্তর : কোরবাণির গোশতকে তিন ভাগ করা সুন্নাহ বা মুস্তাহাব। এক ভাগ নিজেদের জন্য রাখা হয়, আর এক ভাগ আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হয়ে থাকে, আর এক ভাগ ফকির-মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। এটাই হচ্ছে মূলত সুন্নাহ।


কোনো কোনো সমাজ ফকির, মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করার জন্য তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে নেয়। দায়িত্ব নেওয়ার কারণে ফকির, মিসকিনের এই ভাগটুকুকে তাঁরা তাঁদের দায়িত্বে নিয়ে যায় এবং সম্ভবত তাঁরাই পরবর্তিতে ফকির, মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করে থাকে। তবে এই প্রক্রিয়াটাকে সামাজিকভাবে খুব ফলপ্রসূ বলে আমি মনে করি না। কারণ সেক্ষেত্রে ফকির, মিসকিনরা হয়তো মাহরূম হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আবার সেখানে পক্ষপাতের বিষয়গুলো এসে যায়। ফলে দেখা যায় যে, সেখানে সামাজিক আরেকটা রূপ বা অন্য ধরনের হস্তক্ষেপ এসে যেতে পারে। ফলে ফকির, মিসকিনরা আপনার কাছ থেকে যেভাবে সরাসরি উপকৃত হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে উপকৃত হতে পারে না। তাই উচিত হচ্ছে এইভাবে সামাজিকভাবে ব্যবস্থা না নিয়ে ফকির, মিসকিন লোকদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করা। ফলে ফকির, মিসকিনরাও সরাসরি তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পারবে এবং তাঁরাও ফকির, মিসকিনদের তাঁদের সহানুভূতি দেখাতে পারবে।


হতে পারে, এমন একজন আছে যে তাঁদের পরিচিত ফকির, মিসকিন বা আত্মীয়স্বজন, তাঁকে হয়তো একটু বেশিও দিতে পারবে। কিন্তু যদি সমাজে দিয়ে দেন, তাহলে হয়তো দেখা যাবে আপনার আত্মীয় কিন্তু সে পায়ইনি। কোরবানি হচ্ছে ব্যক্তিগত ইবাদত এবং তাই গোশত বণ্টনের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিগত বিবেচনাবোধ কাজ করতেই পারে। কোরবানি সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, সেই চেতনা সামাজিকভাবে নাও আসতে পারে।


সামাজিকভাবে সেই অনুভূতি আসার সম্ভাবনা কম। এজন্য এটাকে সামাজিক রূপ দেওয়া এটা শুদ্ধ নয়। সেসব বন্ধু সমাজের জন্য এইভাবে কোরবানির গোশত সংগ্রহ করে, আমি বলব যে, এভাবে সংগ্রহ না করে ব্যক্তিগত বিবেচনার ওপর এবং ব্যক্তিগত বণ্টনের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।


সূত্রঃ এনটিভি