ধোনি যে কারণে মাঠ ছেড়েছিলেন

মজার সবকিছু April 18, 2016 1,467

ভারতীয় বোলারদের একেবারে ময়দার মতো পিষে ফেলছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। এর থেকে ধোবিঘাটে কাপড় কাঁচার দৃশ্য অনেক সুন্দর ধোনির কাছে। তাই কয়েকবার মাঠ থেকে পালাতেও চাইলেন মনে মনে। চক্ষুলজ্জার কারণে ইচ্ছেটা গিলে ফেলতে হলো। তবে খেলার মাঝপথেই হঠাৎ ধোনির মাথার ওপর ‘দিমাগ কা বাত্তি’ জ্বলে উঠল! বিরাট কোহলির হাতে কিপিং এবং অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে গেলেন তক্ষুনি। সোজা গিয়ে ঢুকলেন ড্রেসিংরুমে। ত্রস্ত হাতে লকার খুলে নিজের বড় ব্যাগটা বের করলেন। তারপর ব্যাগ থেকে বের করলেন ছোট্ট একটা প্রদীপ। সেটা নিয়ে লকার বন্ধ করে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলেন ভারতের অধিনায়ক। আশপাশে কেউ নেই। শুধু গ্যালারি থেকে ভেসে আসছে হাজার হাজার বাঘের গর্জন! খুব সাবধানে প্রদীপে তিনবার ঘষা দিলেন ধোনি। মুহূর্তেই ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ভরে উঠল ওয়াশরুম! হ্যাঁ, দৈত্য চলে এসেছে! তবে দৈত্যের চেহারার সঙ্গে আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ডের কেমন যেন মিল! ধোনির মেজাজটা বিগড়ে গেল। দৈত্যের চেহারা-সুরত হবে ভয়ংকর, সমীহ জাগানো। তার বদলে এই দৈত্যের চেহারায় বিগলিতভাব।


‘হুকুম করুন, ক্যাপ্টেন! আপনি বললেই আমি নো বল ডাকব, চাইলেই ছক্কা হয়ে যাবে আউট!’ মোলায়েম কণ্ঠে বলল দৈত্য।

ধোনির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, ‘আরে রাখো তোমার দুই নম্বুরি বুদ্ধি! বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আমাদের পিটিয়ে তুলাধোনা করছে। ওদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে আমার পাওয়ার দরকার, পাওয়ার!’


: দুঃখিত জনাব, এমন পাওয়ার দেওয়া আমার সাধ্যের বাইরে! তবে বাংলাদেশের টাইগারদের থাবা থেকে বাঁচার একটা পদ্ধতি বাতলে দিতে পারি আপনাকে!


: কী পদ্ধতি?

: আপনি মাঠে না ফিরে এক্ষুনি দেশে পালিয়ে যান!

: এত এত ক্যামেরা আর গার্ড বাঁচিয়ে এখান থেকে পালানোই তো অসম্ভব!


: অসম্ভবকে সম্ভব করাই আমার কাজ, জনাব! এই নিন আশ্চর্য মলম। এটার খানিকটা ঘাড়ে মাখুন...

মলমটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখে ধোনি বললেন, ‘এটা মাখলে কী হবে? আমার স্কিনে কোনো সমস্যা নাই!’

দৈত্য ফিকফিক করে হেসে ফেলল, ‘জনাব, এই মলম ঘাড়ে মাখলে আপনি এক নিমেষে ছাদ ফুঁড়ে চলে যাবেন একদম বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে। সেখানে গেলে সীমান্তরক্ষীরা তো আপনাকে চিনবেই। বাকি কাজ তারাই করবে!’

অনেকক্ষণ পর ধোনির মুখে হাসি ফুটল, ‘বাহ্, তোমার চেহারা পছন্দ না হলেও কাজকর্ম পছন্দ হয়েছে!’


‘তবে ক্যাপ্টেন, সাবধান! কোনোভাবে কেউ যদি আপনার ঘাড়ে হাত দেয়, আপনি কিন্তু আবার এখানেই ফিরে আসবেন! বিদায়!’ বলেই হাওয়ায় মিলিয়ে গেল দৈত্য। ধোনি কিছুক্ষণ চোখ পিটপিট করে মলমটা ঘাড়ে মেখে নিলেন। যা আছে কপালে!


‘কৌন হে? কৌন হে উধার? গোলি মারদুঙ্গা ব্যাক সাইডমে!’ হঠাৎ হুটোপুটির শব্দে মেজাজ বিগড়ে গেল সীমান্তরক্ষীর। হিন্দি! হিন্দি ভাষা শুনেই ধোনির কানটা জুড়িয়ে গেল। যাক বাবা, দৈত্যের মলম তাহলে ঠিকমতোই কাজ করেছে। মুখে চওড়া হাসি ঝুলিয়ে যেদিক থেকে শব্দ ভেসে এসেছিল, সেদিকে এগিয়ে গেলেন ধোনি। দেখলেন, সামনেই ইউনিফর্ম পরা, রাইফেল হাতে একজন দাঁড়িয়ে। দুহাত বাড়িয়ে এগিয়ে গেলেন তার দিকে। ধোনিকে দেখেই সীমান্তরক্ষী চোখ গরম করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কৌন হে তু?’

ধোনি হাসিমুখে বললেন, ‘সেপাইজি, মে ধোনি হু, ধোনি! ইন্ডিয়া কি ক্যাপ্টেন!’


গগনবিদারী হাসি দিয়ে দুটো প্যাঁচার ঘুম ভাঙাল সীমান্তরক্ষী, ‘হাহাহাহাহাহা! তু ধোনি হে? ধোনি আভি বাংলাদেশকে সাথ মিরপুর মে খেল রাহা হে। মে খেলকা কমেন্ট্রি শুনাহে!’ বলতে না বলতেই ক্যাঁক করে ধোনির ঘাড়টা চেপে ধরল সীমান্তরক্ষী। দাঁত কিড়মিড় করে যা বলল তার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘ব্যাটা, গরু পাচারকারী, ভারতের জার্সি পরলেই তুই ধোনি হয়ে যাবি ভেবেছিস! আয়, দুইটা ঠ্যাঙানি খেলেই ধোনি হওয়ার সাধ তোর মিটবে।’


ধোনি তখন কী করেন! এমন ভয়ংকর অবস্থায় পড়ার কথা জানলে কী মলমটা মাখতেন! তবে কপালটা তাঁর বেশ ভালো। সীমান্তরক্ষী তাঁর ঘাড়ে হাত দেওয়ায় মলম পুরোপুরি উঠে গেল। আর তারপর একটা ঘূর্ণিঝড়ের মতো কিছু! পরক্ষণেই কানে ভেসে এল রবি শাস্ত্রীর কণ্ঠ, ‘আরে ধোনি, ওয়াশরুমে এসে ঘুমিয়ে গেলে নাকি? সময় নষ্ট না করে জলদি মাঠে ফিরে যাও!’


ঠিক সে সময় গ্যালারি থেকে ভেসে এল হাজারো বাঘের গর্জন, ‘হালুউউউম!’