ডিজিটাল ইশপের গল্প

মজার সবকিছু April 18, 2016 844

‘‘আনস্মার্ট’ ফোনে ফেসবুক চালাতে চালাতে বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছিল এক তরুণ ফেসবুকার। সাঁকোর ওপারে ঘন গাছপালা, সেখানে বসে কিছুক্ষণ প্রেমিকার সঙ্গে একান্তে চ্যাট করবে, এটাই তার উদ্দেশ্য। সাঁকো পার হওয়ার আগেই অসাবধানতাবশত তার হাতের ‘আনস্মার্ট’ ফোনটি পড়ে গেল পানিতে। মুহূর্তেই সেটা গায়েব হয়ে গেল ছোট্ট নদীটির বুকে।


হতভম্ব তরুণ সাঁকো পার হয়ে গাছের ধারে গিয়ে বসে পড়ল ধপ করে। অন্ধের যষ্টি ফোন ও প্রেমিকার কথা ভেবে তার কান্না পেতে লাগল। শব্দ করে কেঁদেও ফেলল একসময়। তার কান্না শুনে নদী থেকে উঠে এল এক জলপরি। জানতে চাইল তার কান্নার কারণ। ডিজিটাল যুগে জলপরি দেখে তরুণ আরও হতভম্ব। তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিল সে। সব শুনে জলপরি আবার নদীর পানিতে ডুব দিল।


কিছুক্ষণ পর একটা আইফোন সিক্স প্লাস নিয়ে এসে বলল, ‘এটাই কি তোমার হারিয়ে যাওয়া ফোন?’ সহজ-সরল তরুণ ফেসবুকার আইফোন দেখেও সত্য কথা বলল, ‘না, এটা আমার ফোন নয়।’


জলপরি আবার ডুব দিল, নিয়ে এল এইসটিসির স্মার্টফোন। তরুণ ফেসবুকার এবারও সত্য কথা বলল। জলপরি তখন আবার ডুব দিয়ে তরুণ ফেসবুকারের ‘আনস্মার্ট’ ফোনটিই নিয়ে এল। হারিয়ে যাওয়া মুঠোফোন পেয়ে খুশিতে চিৎকার করে উঠল তরুণ। তার সততায় মুগ্ধ হয়ে জলপরি তিনটি মুঠোফোন তো দিলই, পাশাপাশি ফেসবুকারের স্ট্যাটাস আর ছবিতে অনেক অনেক লাইক, কমেন্টসের ব্যবস্থাও করে দিল।


তরুণ ফেসবুকার রাতারাতি ফেসবুক সেলিব্রিটি হয়ে উঠল। তা দেখে হিংসায় গা জ্বলে যেতে লাগল আরেক পাতি ফেসবুক সেলিব্রিটির। সে ওই তরুণের কাছ থেকে সব ঘটনা শুনে চলে গেল সেই সাঁকোর কাছে। হাতে বেশ দামি একটা ট্যাব। সাঁকোর মাঝামাঝি গিয়ে হাতের ট্যাবটা টুপ করে ফেলে দিল নদীতে। ফেলে দিয়েই চলে গেল সাঁকোর ওপারে, গিয়েই শুরু করল তুমুল কান্নাকাটি! যথারীতি এবারও জলপরি এল, সব শুনে পানিতে ডুব দিল। প্রথমে নিয়ে এল একটা আইফোন সিক্স প্লাস। সেটা দেখে পাতি ফেসবুক সেলিব্রিটি লোভ দমিয়ে রাখতে পারল না।


জলপরিকে বলল, ‘হ্যাঁ, এটাই আমার হারিয়ে যাওয়া মুঠোফোন।’ জলপরি পাতি সেলিব্রিটির অসততায় রেগে গিয়ে সেই যে ডুব দিল, আর ফিরে এল না। জলপরির অভিশাপে পাতি সেলিব্রিটির স্ট্যাটাস আর ছবিতে এখন ৮-১০টার বেশি লাইক, কমেন্ট পড়ে না।


নীতিবাক্য: যার যা লাইক ও কমেন্ট আছে, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা উচিত।