পেট ব্যথায় কী করবেন, অ্যাপেনডিসাইটিস নয় তো?

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস June 23, 2017 1,216
পেট ব্যথায় কী করবেন, অ্যাপেনডিসাইটিস নয় তো?

পেটের পীড়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কোনোটা মামুলি, কোনোটা ঝুঁকিপুর্ণ।


অ্যাপেনডিসাইটিস মানে অ্যাপেনডিকস নামক ক্ষুদ্র অঙ্গটির প্রদাহ। এ অ্যাপেনডিকস অঙ্গটি পেটের নাভির ডানদিকে অবস্থিত। এটি দেখতে অনেকটা ওয়ার্ম বা কৃমির মতো এবং এটা খাদ্যনালির বৃহদন্ত্রের অংশ। রোগ প্রতিরোধে এর ভূমিকা আছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এ অঙ্গহানির ফলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না।


অ্যাপেনডিসাইটিস যে কারণে হয়

বিভিন্ন কারণে অ্যাপেনডিসাইটিস হতে পারে; যেমন- যেগুলোর জন্য আপনারা অবশ্যই শৈল্য চিকিৎসকের সাহায্য নেবেন।


- ফিকুলিথ (শক্ত মলের নুড়ি) দ্বারা অ্যাপেনডিকসের প্রবেশমুখ বন্ধ হয়ে যায়।


- হজম না হওয়া খাদ্যের অংশ যেমন টমেটোর খোসা দ্বারা অ্যাপেনডিকসের প্রবেশমুখ বন্ধ হয়।


- গুঁড়া কৃমির দ্বারা এবং ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে অ্যাপেনডিসাইটিস হতে পারে।


অ্যাপেনডিসাইটিস রোগের লক্ষণ

- রোগী বলবে প্রথমে আমার ব্যথা নাভির চারপাশে অথবা পেটের উপরিভাগে শুরু হয়েছিল এবং ২/৩ ঘণ্টা পর এ ব্যথা সরে এসে নাভির ডানপাশে অবস্থান নিয়েছে। - হাঁচি, কাশি দিলে নাভির ডানপাশে ব্যথা হয়। - বমি ভাব বা ১/২ বার বমি হতে পারে। - ক্ষুধা নেই। - হালকা জ্বর ভাব। - কনস্টিপেশন এবং কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও হতে পারে। - পরীক্ষা করলে নাভির ডানদিকে চাপ দিলে ব্যথা অনুভব করবে বা ব্যথার জন্য ধরাই যাবে না। রোগীর ইতিহাস ও লক্ষণগুলো থেকেই ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ নিরূপণ করা হয়। সে সঙ্গে রক্ত, প্রস্রাব, এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাম (মেয়েদের ক্ষেত্রে) করে পেট ব্যথার অন্য কারণগুলো বাদ দিয়ে অ্যাপেনডিসাইটিস রোগ ডায়াগনসিস কনফার্ম করা হয়।


মেয়েদের ক্ষেত্রে

মেয়েদের ক্ষেত্রে এ রোগ নির্ণয় ছেলেদের তুলনায় কঠিন হয়। কারণ নাভির ডানপাশে ব্যথা মেয়েলি কারণেও হতে পারে, যেমন- ওভুলেশন পেইন, ডিম্বাশয়ের কারণে ব্যথা, টিউবাল প্রেগন্যান্সির (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) জটিলতার কারণেও প্রস্রাবে ইনফেকশন ইত্যাদির কারণে ব্যথা। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই রোগিণীর ভালোভাবে পূর্ব ইতিহাস ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। প্রয়োজন হলে লেপারোস্কোপিক পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে।


চিকিৎসা

দ্রুত অপারেশনই এ রোগের সঠিক চিকিৎসা।


- অপারেশন না করলে কী ক্ষতি হতে পারে?


- চাকা (লাম্পা) হয়ে যেতে পারে। যা কি-না ভালো হতে ২/৩ সপ্তাহ লেগে যায় এবং খরচও অপারেশনের চেয়ে বেশি হয়।


- ফোঁড়া বা এবসেস হয়ে যেতে পারে।


- গেংগ্রিন, ফুটো বা বার্স্ট হয়ে যেতে পারে এবং জীবন-মরণ সমস্যা দেখা দিতে পারে।


- ভালো হয়ে আবার বারবার দেখা দিতে পারে।


অতএব, ওপরের জটিলতাগুলো চিন্তা করে যত দ্রুত সম্ভব অপারেশন করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।