ইফতারে অসাধারণ আপেল

ফলের যত গুন June 18, 2017 1,016
ইফতারে অসাধারণ আপেল

বৃষ্টি হলেও গরম ভাব কিন্তু সহ্য করতে হচ্ছে। দিনটাও কত লম্বা! এই দীর্ঘ সংযমের পর ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া না খাওয়াই ভালো। বরং বুদ্ধিমানের কাজ হবে ফলমূলে মনোযোগী হওয়া। তাই রমজানজুড়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ। আজ প্রিয় ও পরিচিত আপেলের কথা থাকছে-


পুষ্টি-ভিটামিন : বাড়তি খনিজ, পুষ্টি, ভিটামিন আর অর্গানিক উপাদান পেতে আপেলের তুলনাই চলে না। ভিটামিন সি, কে, বি৬ আর রিবোফ্ল্যাভিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। পটাসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ মিলবে। ভক্ষণযোগ্য ফাইবারের তো অভাব নেই। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন যে পরিমাণ ফাইবার দরকার হয়, তার ১২ শতাংশের সরবরাহ মেলে একটামাত্র আপেল থেকেই।


হজম : ফাইবারে পূর্ণ বলে হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করে। নিয়মিত যদি ইফতারে খেতে পারেন, তাহলে পেটের পীড়া বলতে কিছু থাকবে না। পাকস্থলীর বেশ কয়েক ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে পরিত্রাণ মিলবে। ফাইবার হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এতে মল বৃদ্ধি পায়। বর্জ্য বের করে দিতে অন্ত্রনালিকে যেভাবে কার্যক্রম চালাতে হয়, ফাইবার সে কাজে সহায়তা দেয়।


ক্যান্সার : এই প্রাণঘাতী রোগ সামলাতে শক্ত ঢাল হিসেবে ভরসা আনতে পারেন আপেলে। গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে যে নিয়মিত আপেল খেলে স্তন ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে। আর ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এটা তো রীতিমতো জাদু দেখাতে সক্ষম। বেশির ভাগ ফল ও সবজিতেই ক্যান্সার প্রতিরোধের ব্যবস্থা থাকে। এগুলোর মধ্যে আপেল শীর্ষস্থানীয়, অন্যগুলো থেকে অনেক এগিয়ে। কোষে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার হার ঠেকাতেও পটু আপেল।


রক্তস্বল্পতা : আধুনিক ছেলে-মেয়েদের রক্তস্বল্পতার সমস্যা প্রকট আকারে দেখা যায়। তাদের জন্য শুভবার্তা দিতে পারে আপেল। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। রক্তে হিমোগ্লোবিনের অভাবে অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। লোহিত রক্ত কণিকার সুষ্ঠু বিপাকক্রিয়ার এক অন্যতম শর্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ হিমোগ্লোবিন। এই অনন্য উপাদানটির সরবরাহ বৃদ্ধিতে দরকার আয়রন। পুরোটাই দিতে পারে আপেল।


দুর্বলতা : হঠাৎ করেই অবসাদ আর ক্লান্তি ভর করে দেহ-মন-প্রাণজুড়ে। এই অবস্থা দূর করতে পারে আপেল। দেহে ত্বরিত বল আনতে আপেল এক বিখ্যাত ফল। যাঁরা ওজন বাড়াতে তত্পর, তাঁরা দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় আপেল যোগ করুন। আর প্রতিদিনের ইফতারে তো থাকবেই। দেহের যাবতীয় বিষাক্ত উপাদান ঝেটিয়ে বিদায় করতেও আপেল অতুলনীয়। তবে চাঙ্গা ভাব আনতে এবং পেশিকে সতেজ করতে আপেল এক অব্যর্থ টোটকা।


ডায়াবেটিস : কোন মানুষটা এখন ডায়াবেটিসকে ভয় করে না? তাদের ভয় কমাতে পারে আপেল। আর যারা আক্রান্ত হয়ে রয়েছে, ডায়াবেটিস সামলাতে তারাও আপেলে মনোযোগ দিতে পারে নিশ্চিন্তে। এর পলিফেনল দেহে মাত্রাতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণে বাধা দেয়। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে আসে। রক্তে গ্লুকোজের এলোমেলো উত্থান-পতন দূর করে স্থিতাবস্থা আনে এই ফল।


ফলে ডায়াবেটিস বিপজ্জনক পর্যায়ে যায় না। হজমপ্রক্রিয়ায়ও গ্লুকোজের উপস্থিতি হ্রাস করে পলিফেনল। এই উপাদানটি দেহে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে কোষে চিনি মজুদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও ইনসুলিন তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। দেহের প্রতিটি প্রত্যঙ্গের সুষ্ঠু কাজের জন্য তাই দরকার আপেল।