পরিবারের থেকে বন্ধুই যখন আসল!

লাইফ স্টাইল June 11, 2017 639
পরিবারের থেকে বন্ধুই যখন আসল!

‘যদি থাকে বন্ধুর মন গাং পাড় হইতে কতক্ষণ’- যে কথা জীবনানন্দ দাশ বহু আগেই বলেছেন, এই সময়ে এসে গবেষকরা সেটা পর্যালোচনা করে বের করছেন।


সিদ্ধান্তে আসছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে পরিবারের থেকে বন্ধুর প্রয়োজনীয়তা বাড়তে থাকে। বেশি নয়, অল্প কয়েকজন ভালো বন্ধু বদলে দিতে পারে আপনার আশপাশের পৃথিবী। রাখবে সুস্থ সবল।


যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি’র উইলিয়াম চোপিক, দুটি গবেষণায় প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষের উপর পর্যালোচনা চালিয়ে নিশ্চিত হন যে, এক জীবনে সুখী এবং সুস্থ থাকার জন্য বয়স হওয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বের প্রয়োজনীয়তা বাড়তে থাকে।


প্রথম গবেষণার জন্য, একশটি দেশের বিভিন্ন বয়সের প্রায় ২ লাখ ৭১ হাজার ৫৩ জন অংশগ্রহণকারীর সম্পর্কবিষয়ে এবং স্বাস্থ্য ও সুখী হওয়ার নিজস্ব পর্যবেক্ষণের তথ্য পর্যালোচনা করেন চোপিক।


দ্বিতীয় গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ৭ হাজার ৪শ’ ৮১ জন প্রাপ্তবয়স্কের উপর করা দীর্ঘস্থায়ী অসুখ ও নির্ভরতার মধ্যকার সম্পর্কবিষয়ক তথ্য পর্যালোচনা করা হয়।


প্রথম গবেষণায় দেখা গেছে, সার্বিকভাবে সুস্বাস্থ্য ও সুখী থাকার জন্য পরিবার এবং বন্ধুত্বের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। তবে বেশি বয়সে সুস্থ থাকতে ও সুখী হতে বন্ধুত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


দ্বিতীয় গবেষণায় দেখা গেছে, বন্ধুত্ব জীবনে আরও বেশি প্রভাব ফেলে। বন্ধু যখন চাপের কারণ তখন বেশি অসুস্থ থাকার এবং বন্ধু যখন ভরসার কারণ তখন অংশগ্রহণকারীরা বেশি সুখী থাকার কথা জানায়।


‘পার্সোনাল রিলেশনশিপস’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় জানানো হয়, এটা হতে পারে সম্পর্কের স্বাভাবিক প্রকৃতি। সময়ের সঙ্গে যারা আমাদের ভালো রাখে তাদেরকেই বন্ধু হিসেবে রাখি। বাকিদের বাদ করে দেই।


এমনকি যাদের জীবনসঙ্গী বা পরিবার নেই তাদের জন্যও বন্ধুরা ভালো সঙ্গী হতে পারেন।


অবসরগ্রহণের পর বয়স্কদের একাকিত্ববোধ ও বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা থেকে দূরে রাখতে পারে বন্ধুত্ব।


চোপাক বলেন, “পারিবারিক বন্ধনও আনন্দের। তবে কোনো কোনো সময় সেটা সাংঘাতিক নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি একঘেঁয়ে উঠতে পারে।”


তিনি আরও বলেন, “বয়স্কদের জন্য বন্ধুত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে বর্তমানে কমই গবেষণা আছে। তবে এসব গবেষণার সারকথা হচ্ছে- যতদিন বেঁচে থাকা হয় বিবাহিত ও পারিবারিক সম্পর্কের চাইতে বন্ধুত্ব বরং দিনের পর দিন সুখ বিলিয়ে যায়।”