ইফতারে জাম মন্দ নয়

ফলের যত গুন June 6, 2017 1,019
ইফতারে জাম মন্দ নয়

বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ছেই। তাই অনেকক্ষণ সংযমের পর এমন দিনে ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া না খাওয়াই ভালো। বরং বুদ্ধিমানের কাজ হবে ফলমূলে মনোযোগী হওয়া। তাই রমজানজুড়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন ফলের পুষ্টিগুণ। আজ থাকছে পরিচিত ফল জাম


পর্যাপ্ত পুষ্টি : এই ফলে আছে পর্যাপ্ত শর্করা, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন বি-১, রিবোফ্লাবিন বা ভিটামিন বি-২, ভিটামিন বি-৩, ভিটামিন বি-৫, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন সি, আমিষ ও উদ্ভিজ্জ ফ্যাট। এ ছাড়া আছে জিংক, কপার, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্যালিসাইলেট।


স্মৃতিশক্তি : জাম ‘ব্রেইন অ্যালার্ট’ হিসেবে কাজ করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এই ফলের বিভিন্ন উপাদান মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। জামে গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ রয়েছে, যা শরীরেও উদ্যম জোগায়।


ডায়াবেটিস : গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত জাম খাওয়ার ফলে ৬.৫ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিস কমে গেছে। এটি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জাম ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে শরীর সুস্থ রাখে। এক চা চামচ জামের বীজের গুঁড়া খালি পেটে প্রতিদিন সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।


হজমে সহায়ক : জাম খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়। এ ছাড়া এতে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, দাঁত ও মাড়ি শক্ত হয়। এ ছাড়া আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় জামের পাতা ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময়ে।


রক্তের স্বল্পতা : জামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এটি শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে। রক্তে যাদের আয়রনের ঘাটতি রয়েছে, তাদের বেশি করে জাম খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়।


হৃৎপিণ্ডের যত্নে : রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সহায়তা করে জাম। এ ছাড়া শরীরের দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। জামে এলাজিক এসিড বা এলাজিটেনিন্স, এন্থোসায়ানিন এবং এন্থোসায়ানিডিন্স থাকে, যা প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে। এই উপাদানগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে বলে কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে এবং হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাক গঠনে বাধা দেয়।


ক্যান্সার প্রতিরোধ : জাম খেলে মুখের লালাতে যে রঞ্জক পদার্থ উৎপাদিত হয়, তা থেকে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্ম নেয়। এই ব্যাকটেরিয়া ক্যান্সারে সহায়ক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করে।


রোগ প্রতিরোধ : জামে ফাইটোকেমিক্যালস আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। জামের বিভিন্ন উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সঙ্গে সর্দি-কাশি থেকেও রক্ষা করে। এটি ইনফেকশনের মতো সমস্যাও প্রতিরোধ করে।


ত্বকের জন্য : জামের বিভিন্ন উপাদান ত্বকের জন্য উপকারী। এই ফল ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বক ও চুল রক্ষা করে। এটি অ্যালার্জিক এসিড, ক্ষতিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে।


সূত্র : হেলদি ফোকাস ডটকম