রমজান মাসের রহমতের প্রথম দশদিনের যত ফজিলত

ইসলামিক শিক্ষা June 3, 2017 926
রমজান মাসের রহমতের প্রথম দশদিনের যত ফজিলত

রমজান মাসের প্রথম দশদিন রহমতের। হাদিস শরীফে রাসুল (সাঃ) ঘোষণা করেছেন- ‘রমজানের ১ম দশ দিন রহমতের, মাঝের ১০ দিন মাগফিরাত বা ক্ষমা লাভের এবং শেষের ১০ দিন নাযাত বা জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের’।


হমতের ১ম দশ দিনকে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বান্দাদের প্রতি বিশেষ রহমত দান করে থাকেন। তাই আল্লাহ্ তায়ালার কাছে বেশি বেশি করে রহমত চাইতে হবে। জীবিত, মৃত সকলের জন্য রহমত কামনা করতে হবে। শুধু মুখে কামনা করা নয় আল্লাহর রহমত পাওয়ার জন্য ওসিলা গ্রহণ করতে হবে।


আর তা হলো নেক কাজ। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেন, অর্থ ‘নিশ্চয় আল্লাহর রহমত ওইসব লোকদের নিকটবর্তী যারা নেক কাজ করে’। (সূরা আ’রাফ : আয়াত- ৫৬)।


আল্লাহর রহমত পেতে হলে বেশি বেশি করে নেক আমল করতে হবে। রমজান মাসতো নেক আমল করারই মাস। এ মাসে আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে বেশি বেশি করে নেক কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। রহমত লাভের আরেকটি ওসিলা বা মাধ্যম হচ্ছে সৃষ্টজীবনের প্রতি দয়া করা।


হাদিস শরীফে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান- ‘তোমরা দুনিয়াবাসীদের প্রতি দয়া কর, তাহলে আসমানবাসী- আল্লাহ্ তায়ালাও তোমাদের প্রতি দয়া করবেন’। সুতরাং মানুষ এবং অন্যান্য সৃষ্টি জীবের প্রতি দয়া করাও আল্লাহর রহমত লাভ করার একটি বিশেষ উপায়। ইসলাম অবলা প্রাণীর প্রতিও দয়া করার বিধান রেখেছে। অবলা প্রাণীর উপর জুলুম করা এমনকি অনর্থক গাছের একটি পাতা ছিড়াও অপরাধ।


তাই সৃষ্টিকর্তার রহমত পেতে হলে সৃষ্টজীবের প্রতি দয়া প্রদর্শন করতে হবে।


মহান আল্লাহ্ তায়ালার রহমতের দরজা সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। রহমতের বারিধারা মুষলধারে বর্ষিত হচ্ছে। আল্লাহ পাক রহমত বর্ষণের বাহানা তালাশ করেন। ছোট ছোট নেক কাজসমূহকে আল্লাহ্ তায়ালা গুরুত্ব দিয়ে অনেক বড় করে দেখেন।


হাদিস শরীফে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান- ‘রমজান সবরের মাস, সহানুভূতির মাস। অর্থাৎ গরীব-মিসকীনদের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শনের মাস। আমরা নিজেদের ইফতারির জন্য দশ/বারো প্রকারের ইফতারি তৈরি করে থাকি। গরীবদের জন্য অন্তত দু’চার রকমের ইফতারি হওয়া উচিত। কাজেই যতটুকু সম্ভব নিজের সেহরি ও ইফতারে গরীবদেরও একটি অংশ অবশ্যই রাখা উচিত।


অধিনস্ত কর্মচারিদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন ও মহান রাব্বুল আলামীন এর রহমত লাভের একটি মাধ্যম। রাসুলে করিম (সাঃ) ইরশাদ করেন- ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে আপন (গোলাম ও কর্মচারি বা খাদেম) এর কাজের বোঝা হালকা করে দেয়, আল্লাহ্ তায়ালা তাহাকে মাফ করে দেন এবং জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি দান করেন। কাজেই কর্মচারিদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি প্রদর্শন করা উচিত।


রমজান মাসে দেশের জন্য, জনগণের জন্য, দেশ ও দশের সুখ-শান্তির জন্য আল্লাহ্ তায়ালার কাছে দোয়া প্রার্থনা করা।


সর্বোপরি বিশ্বের সকল মুসলমানদের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করা। বিশেষ করে মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, জীবিত, মৃত সকলের জন্য দোয়া করা। রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলের নামাজ, রোজা, তারাবিহ্, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি আমলসমূহ কবুল করুন। রহমতের বারিধারায় আমাদের দেহ-মন শীতল করুন।


আমীন!!