গরমে ত্বকের বন্ধু ক্লে মাস্ক

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস May 31, 2017 1,250
গরমে ত্বকের বন্ধু ক্লে মাস্ক

যাদের ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত বা সহজেই অ্যাকনের সমস্যা দেখা দেয়, তারা গরমকালে বেজায় মুশকিলে পড়েন। রোদ, ঘাম, ময়লা, সব মিলিয়ে ত্বকের হাল খারাপ হয়ে যায়। এ সময় একটু বাড়তি যত্ন না নিলে ত্বকের আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে। রোজ দু’-তিন বার মুখ পরিষ্কার করা ছাড়াও সপ্তাহে অন্তত দু’দিন কোনও ফেস প্যাক ব্যবহার করা জরুরি। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য সেরা প্যাক যে কোনও ক্লে মাস্ক। কারণ ক্লে মাস্ক শুধু ত্বক থেকে ধুলো- ময়লাই টেনে বার করে না, বাড়তি তেল দূর করে। ত্বকের ম্যাড়ম্যাড়ে ভাব কমিয়ে জেল্লা বাড়ায়।


তাই জেনে নিন কত ধরনের ক্লে মাস্ক রয়েছে, বাজারের কোন ক্লে মাস্কগুলো সেরা আর বাড়িতে কীভাবে বানিয়ে ফেলা যায় এগুলো।


কত রকম ক্লে মাস্ক অনেক ধরনের হয়। সবুজ, কালো, লাল বা গোলাপি, সাদা, ধূসর বা বাদামি। একেক রকম সমস্যার জন্যে একেকটা ক্লে মাস্ক কার্যকরি।


সবুজ: যাঁদের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক বা অ্যাকনের সমস্যা যাঁদের বেশি তাঁদের জন্যে এই মাস্ক দারুণ। ত্বকের খোলা কোষের ভিতর থেকে ধুলো ময়লা টেনে বার করে ত্বক ঝকঝকে করে তোলে। ত্বকের বাড়তি তেল শুষে ফেলার জন্য সবুজ ক্লে মাস্ক সেরা। বাজার থেকে বেটোনাইট ক্লে কিনে তার সঙ্গে টি-ট্রি এসেনশিয়াল অয়েল আর ওট্‌স মিশিয়ে বানাতে পারেন এই ধরনের ক্লে। ফ্রেঞ্চ ক্লে থাকলে আরও ভাল। কিন্তু এগুলো পাওয়া মুশকিল। লরিয়েল’এর ইউক্যালিপটাস মাস্ক ভাল বিকল্প।


কালো: ধুলো, ময়লা সরিয়ে ত্বক পরিষ্কার করার ভাল উপায় কালো ক্লে মাস্ক। যাঁদের ত্বকে ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা ব্ল্যাকহেড্স হয়, তাঁরা এই ক্লে ব্যবহার করতে পারেন। চারকোল ক্লে মাস্ক খুব জনপ্রিয়। ফ্যাব ইন্ডিয়ার চারকোল মাস্ক কিনতে পারেন। তাছাড়াও বডিশপের হিমালয়ান চারকোল পিউরিফাইয়িং গ্লো মাস্ক ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে বডিশপেরটা কিনলে পকেটে একটু টান পড়তে পারে। আরেকটা উপায় অনলাইনে অ্যাক্টিভেটেড চারকোল পাউডার কিনে বাড়িতেই অন্য ফেস প্যাকের সঙ্গে মিশিয়ে কালো ক্লে মাস্ক তৈরি করে নেওয়া। নাইকা বা আমাজনের মতো সাইটে পেয়ে যাবেন।


লাল: পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করতে লাল বা গোলাপি ক্লে মাস্ক খুব কাজে দেয়। যাঁদের ত্বকে অনেক ওপেন পোর রয়েছে, তাঁদের জন্যেও এটা উপকারী। ন্যাচারাল বাথ অ্যান্ড বডি ফ্রেঞ্চ রেড ক্লে মাস্ক, ইনিসফ্রি সুপারভোলক্যানিক ক্লে মাস্ক বা ফ্যাব ইন্ডিয়ার হলদি-চন্দন ক্লে মাস্ক ব্যবহার করে দেখতে পারেন।


সাদা: ডিটক্স করার জন্য সাদা ক্লে মাস্ক খুব ভাল। আমাজন থেকে বেটোনাইট পাওডার কিনে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন। সঙ্গে এসেনশিয়াল অয়েল আর কিছু বাড়তি ভিটামিন যোগ করতে হবে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে মিশিয়ে ফেলতে পারেন। কিংবা বডিশপের সিউইড আইকনিক ক্লে মাস্কও লাগাতে পারেন।


বাদামি: মুলতানি মাটি, চন্দন আর গোলাপ জল দিয়ে ক্লে মাস্ক বানিয়ে বাঙালিরা অনেক কাল ধরেই রূপচর্চা করে আসছেন। তাই এই ধরনের মাস্কের উপকারিতা আলাদা করে বোঝাতে হবে না। কোনও অনুষ্ঠানের আগের রাতে এই মাস্কটা লাগিয়ে নিন। পরের দিন জেল্লা ফুটে উঠবে।


কখন লাগাবেন?

দিনের কিছুটা সময় শুধু নিজের জন্যে সরিয়ে রাখুন। মেকআপ করা থাকলে ভাল করে মেকআপ তুলে নেবেন। তারপর কোনও ফেশিয়াল ফোম দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। তারপর ক্লে মাস্ক লাগিয়ে রিল্যাক্স করুন। প্রিয় টিভি শো দেখতে দেখতে এক গ্লাস ওয়াইন খেতে পারেন। পছন্দের কোনও বই পড়তে পারেন। কিংবা বাড়িতে বাথটাব থাকলে নিজের জন্যে একটা রিল্যাক্সিং বাথ তৈরি করে মাস্ক লাগিয়ে আরাম করুন।


কতক্ষণ লাগাবেন?

অনেকে মনে করেন ক্লে মাস্ক একদম শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া অবধি লাগিয়ে রাখতে হয়। ধারণাটা ভুল। ক্লে মাস্ক শুকিয়ে ক্র্যাক করা শুরু করলে সেটা ত্বকের ক্ষতি করে বেশি। এতে ত্বক অত্যন্ত ড্রাই হয়ে যায়। স্পর্শকাতর ত্বক হলে লালচে ভাব বা র‌্যাশ দেখা দিতে পারে। অনেকের ত্বক বেশি সুড়সুড় করে অস্বস্তি হতে পারে। তাই মোটামুটি শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। অল্প করে জল দিয়ে মুখ ভিজিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে ক্লে মাস্ক তুলুন।