হিন্দু প্রেমিকার সাথে চারবার মালা বদল করলেন এই মুসলিম যুবক!

সাধারন অন্যরকম খবর May 14, 2017 1,763
হিন্দু প্রেমিকার সাথে চারবার মালা বদল করলেন এই মুসলিম যুবক!

কথায় বলে সব ধর্মেই ভালবাসা আছে, কিন্তু ভালবাসার কোনও ধর্ম হয় না। জাতপাত-ধর্মের উর্ধ্বে সে। তেমনই এক জুটির খোঁজ মিলল যারা এই প্রবাদ বাক্যকেই ফের সত্যি প্রমাণ করল। অঙ্কিতা আগরওয়াল এবং ফৈজ রহমান।


একজন হিন্দু এবং অন্যজন মুসলিম। সম্পর্কের একাধিক জটিলতা ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে খুশির মুখ দেখেছে তাদের প্রেমকাহিনি।


কলেজে প্রথম দেখাতেই একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন অঙ্কিতা ও ফৈজ। তারপর এক-দু’বার নয় পাক্কা চারবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তারা। ভাবছেন তো, সে আবার কেমন করে সম্ভব? ধর্মের নামে যখন হিংসা আর বিদ্বেষের আগুন জ্বলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, তখন ভালবাসা দিয়ে সমস্ত জাতপাতের সীমানাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন এই যুবক-যুবতী। ধর্ম ও সমাজের কথা ভেবে প্রথমে পরস্পরের থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু বিচ্ছেদের পর বুঝলেন, পরস্পরের থেকে দূরে থাকার চেয়ে ধর্মকে দূরে ঠেলে দেওয়াটা অনেক বেশি সহজ কাজ হবে।


তবে বিয়ে মানে তো শুধু একটি মানুষ অন্যজনের সঙ্গে আবদ্ধ হন না, দুটি পরিবারও নয়া সম্পর্কে জুড়ে যায়। আর সেই কাজটাই ছিল অঙ্কিতা ও ফৈজের কাছে সবচেয়ে কঠিন। এই বিয়েতে একেবারেই মত ছিল না অঙ্কিতার পরিবারের। তাদের ভাবনা ছিল, ফৈজের পরিবার অঙ্কিতাকে জোর করে ধর্মান্তরিত করাতে পারে। তাছাড়া মুসলিম ধর্মমতে বিবাহিত ব্যক্তি চারবার বিয়েও করতে পারেন। আবার মুসলিম পরিবারে বিয়ের অর্থ আমিষ খাওয়া-দাওয়া বাধ্যতামূলক। অঙ্কিতার পক্ষে এতদিক মানিয়ে নেওয়া কঠিন হবে।


অঙ্কিতার বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা দূর করতে এক কাজ করলেন ফৈজ। আর তাতেই মুসলিম যুবককে জামাই হিসেবে পছন্দ হয়ে গেল অঙ্কিতার বাবা-মায়ের। অঙ্কিতাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেলে ফৈজ যে আর বিয়ে করবেন না, তা বিশ্বাস করানোর জন্য চারবার চারটি আলাদা অনুষ্ঠান করে অঙ্কিতাকেই বিয়ে করলেন তিনি। প্রথমে ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখ মহালক্ষ্মী মন্দিরে। তারপর আদালতে বিশেষ বিবাহ আইন অনুযায়ী।


যে আইন মুসলিমদের চারবার বিয়ের অনুমতি দেয় না। এবং শেষমেশ বন্ধু ও আত্মীয় স্বজন ডেকে ধুমধাম করে নিকা ও সাত পাকে বাঁধা পড়েন অঙ্কিতা ও ফৈজ। তাদের লাভস্টোরি যে ধর্মের সংকীর্ণতাকে অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছে, তা বলাইবাহুল্য।