অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসার নির্দেশ!

সাধারন অন্যরকম খবর May 8, 2017 2,095
অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসার নির্দেশ!

ডাক্তারি প্রবেশিকায় বসতে গিয়ে হেনস্থার শিকার পড়ুয়া। অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসতে নির্দেশ দিলেন নিরাপত্তারক্ষী।


জিনসের বোতাম খুলে হলে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয় আর এক ছাত্রীকে। স্নাতক স্তরের ডাক্তারি কোর্সে দেশের সরকারি এবং বেসরকারি কলেজে ভর্তির জন্য রবিবার দেশের ১০৪ শহরে পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১ লাখ।


পরীক্ষায় বসতে গিয়ে কেরলের কন্নুরে হেনস্থার শিকার হলেন বছর ১৮র এক ছাত্রী। হলে ঢোকার আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সমস্ত পরীক্ষার্থীর তল্লাশি নিচ্ছিলেন এক নিরাপত্তারক্ষী।


ওই ছাত্রীর অন্তর্বাসে ধাতব হুক লাগানো ছিল। মেটার ডিটেক্টরে তা ধরা পড়লে অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষায় বসতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে তাঁকে হলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে অন্তর্বাস খুলে রেখে পরীক্ষা দিতে বসেন তিনি। ঘটনার সময় পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তাঁর ছাত্রীর মা।


তিনি জানিয়েছেন, ‌পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে ঢোকার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে আসে মেয়ে। অন্তর্বাস খুলে আমার কাছে রাখতে দিয়ে যায়। গাঢ় রংয়ের জামা পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছিল। প্রায় আড়াই কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে কোনো রকমে একটা হাল্কা রংয়ের জামা কিনে আনি। তারপরই পরীক্ষায় বসতে পারে মেয়ে। ডাক বিভাগের কর্মী রাজেশ নমবিয়ারও একই অভিযোগ করেছেন।


তাঁর দাবি, ‌জিনস পরে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল মেয়ে। প্যান্টে ধাতব বোতাম লাগানো ছিল। পকেটের ওপরও একটা বোতাম লাগানো ছিল। যে কারণে তাকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। বোতাম খুলে রেখে এবং ব্লেড দিয়ে পকেটের ওপর বোতাম লাগানো অংশটুকু কেটে হলে ঢুকতে বলা হয় ওকে।


ব্লেড দিয়ে বোতাম কেটে যাহোক করে মেয়েকে পরীক্ষার হলে ঢুকিয়ে নিজে বেরিয়ে পড়ি। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে একটি জামা-কাপড়ের দোকান দেখি। কিন্তু তখন বন্ধ ছিল সেটি। খোঁজ-খবর নিয়ে ওই দোকানের মালিককে ডেকে এনে দোকান খোলাই। সেখান থেকে জামা কিনে মেয়ের কাছে পৌঁছে দিই। ‌


ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষার্থী এমন ঘটনার সম্মুখীন হন। ফুলহাতা জামা এবং হিল জুতো নিয়েও আপত্তি করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। অনেকে জামার হাতা কেটে পরীক্ষায় বসেন। দূর থেকে পরীক্ষা দিতে এসে এমন বায়নাক্কা দেখে বিপদে পড়েন বেশ কিছু পরীক্ষার্থী। পরীক্ষাকেন্দ্রের আশেপাশে যাঁদের বাড়ি ছিল তাঁরা সাহায্যে এগিয়ে আসেন।


নিয়ম, কানুনের নামে পড়ুয়াদের এভাবে হেনস্থা করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্য মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি বিন্দু কৃষ্ণা। তাঁর মতে, ‌নিয়ম, কানুনের দোহাই দিয়ে এমন হেনস্থার তীব্র নিন্দা করছি। পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে এভাবে হেনস্থা হয়ে আদৌ ঠিক করে পরীক্ষা দিতে পেরেছিলেন কী ছাত্রীরা? এতকিছুর পর নিশ্চিন্তে সব প্রশ্নের উত্তর লেখা যায় কী?‌ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানাবেন।