আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি-বিভ্রাটের কারণ

মোবাইল টিপস May 5, 2017 1,559
আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি-বিভ্রাটের কারণ

স্মার্টফোনের দৌলতে দিন দিন আমরা আরও স্মার্ট হয়ে যাচ্ছি। সত্যি বলতে কি, গোটা দুনিয়া এখন মুঠোফোনে বন্দি। কিন্তু এই স্মার্টফোনের ব্যাটারি নিয়ে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনা যায়। আপনি যতই দামী বা ব্র্যান্ডেড মোবাইল কিনুন না কেন, এই ব্যাটারি সমস্যার মুখে পড়তে হয় কম-বেশি প্রায় সকলকেই।


প্রতি বছর অত্যাধুনিক সব ব্যাটারিযুক্ত স্মার্টফোন বাজারে এলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই কয়েকটি চার্জ খাওয়া অ্যাপ এবং অন্যান্য কিছু কারণে ফোনের ব্যাটারি লাইফ নিয়ে বেশ সমস্যার মধ্যে পড়েন ইউজাররা।


কিন্তু কিছু সাধারণ কৌশল, অ্যাপ এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফ ধরে রাখা সম্ভব। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানাব কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে আপনি, আপনার ফোনের ব্যাটারি নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন।


আমরা অনেকেই আমাদের ফোনের ব্যাটারি নিয়ে নানা অভিযোগ করে থাকি। কিন্তু সত্যি কথা হল, ফোনের ব্যাটারি সমস্যার জন্য আমরা নিজেরাই অনেকাংশে দায়ী। আমরা না জেনে এমন অনেক কাজ করে থাকি, যারফলে ফোনের ব্যাটারি কমজোর হয়ে যায়৷ ব্যাটারি সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ হল অতিরিক্ত স্মার্টফোনের ব্যবহার।


আপনি যদি মাত্রাতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার ফোনের দ্রুত ফুরিয়ে যাবে। তবে যদি আপনি আপনার ফোনটি বেশি ব্যবহার না করেন এবং তা সত্ত্বেও ব্যাটারির সমস্যা হয়, তাহলে তার কারণ কী কী হতে পারে সেই নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে।


স্মার্টফোনের ব্যাটারি খারাপ হওয়ার বেশকিছু কারণ আমরা এখন তুলে ধরছি আপনাদের সামনে। দেখুন তো, এরমধ্যে ঠিক কোন কাজটি আপনি সচরাচর করে থাকেন। তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার ফোনের ব্যাটারি বিভ্রাটের কারণগুলো।


স্মার্টফোনের ব্যাটারি সমস্যার অন্যতম কারণ হল মোবাইল স্ক্রিনের অতিরিক্ত ব্রাইটনেস। যদি আপনি ফোনের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে রাখেন, তাহলে অজান্তেই আপনি আপনার ফোনের ব্যাটারির ক্ষতি করছেন। মোবাইলের স্ক্রিনের আলো কমিয়ে রাখলে তার ব্যাটারি অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকবে।


এরজন্য আপনাকে ফোনের ব্রাইটনেস লো বা অটোমেটিক মোডে সেট করে রাখতে হবে। মোবাইলের সেটিং অপশনে গিয়ে আলো কমানোর অপশনে ক্লিক করতে হবে আপনাকে। এছাড়া সব স্মার্টফোনই ডিসপ্লে টাইম আউটের সময় তা কাস্টোমাইজ করার সুযোগ দেয়। সেক্ষেত্রে ফোনের ব্যাটারি সাশ্রয় করতে টাইম আউট 30 সেকেন্ডে নামিয়ে আনতে পারেন আপনি।


ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করাই সবথেকে ভালো উপায়। এরফলে আপনার সাধের স্মার্টফোনের ওপর বেশি চাপ পড়েনা, সেইসঙ্গে মোবাইলের বিলও কম হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ওয়াই-ফাই তখনই অন রাখবেন যখন নেটওয়ার্ক থাকবে।


যদি নেটওয়ার্ক না থাকে, আর আপনি ওয়াই-ফাই অন করে রাখেন তাহলে আপনার স্মার্টফোনটি ক্রমাগত নেটওয়ার্ক সার্চ করতে থাকে। এরফলে ফোনের ব্যাটারির ক্ষতি হয়। তাই প্রয়োজন না থাকলে আপনার স্মার্টফোনের ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখুন। তাহলে আপনার মোবাইলের ব্যাটারি অনেকদিন টিকবে।


আপনি ফোনে যে অ্যাপগুলি ব্যবহার করেন, কাজ হয় গেলে সেই অ্যাপগুলো ভালভাবে বন্ধ করে দিন। নাহলে ব্যাকগ্রাউন্ডে যদি অ্যাপগুলি রান হতে থাকে তাহলে ফোনের ব্যাটারির অনেক ক্ষতি হয়। অ্যাপ বন্ধ হয়েছে কীনা তা সেটিংসে গিয়ে চেক করতে পারেন আপনি। অ্যাপগুলি চালু থাকলে আপনার ব্যাটারির ওপর খুবই চাপ পড়ে যায়।


ফোনের ব্যাটারি ম্যানেজ করার জন্য নানাধরণের অ্যাপ থাকে। আপনি হয়তো আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেই অ্যাপ আপনার ফোনে ডাউনলোড করলেন। কিন্তু অজান্তেই আপনার ফোনের অনেক ক্ষতি করে ফেললেন আপনি। কারণ এই ধরণের অ্যাপগুলি ব্যবহারের ফলে আপনার ফোনের ব্যাটারির ওপর চাপ পড়ে এবং তার ক্ষতি হয়।


আপনার ফোনের ব্যাটারি দ্রুত খারাপ হওয়ার আরেকটি কারণ হল অ্যাপগুলির অটোমেটিক সিঙ্কিং। আপনি হয়তো ফোনে অটোমেটিক ব্যাকআপ বা ছবি সিঙ্কিং সেট করে রেখেছেন। কিন্তু এতে শুধু যে আপনার ফোনের ব্যাটারির ক্ষতি হচ্ছে তাই নয়, ফোনের ডেটাও খরচ হয়।


স্মার্টফোনে সবসময় লেটেস্ট সব সফটওয়্যার আপডেট করতে হবে। মোবাইলের ব্যাটারির শক্তি বাড়াতে এটি অবশ্যই অনেক বেশি কার্যকরী। যদি আপনি ফোনে আউটডেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তাহলে ফোনের ব্যাটারির ওপর প্রবল চাপ পড়ে। ওপরের বিষয়গুলি খেয়াল রাখলে আপনার ফোনের ব্যাটারি অনেক কম ক্ষতি হবে। এছাড়া ফোনের ব্যাটারি বাঁচাতে গেলে আরও কয়েকটি বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।


কখনও আপনার ফোনটি ওভার-চার্জিং করবেন না, এতে ফোনের ব্যাটারির মারাত্মক ক্ষতি হয়। চার্জে থাকা অবস্থায় ফোন ব্যবহার করবেন না। এতে ফোন গরম হয়ে গিয়ে ব্যাটারির ক্ষতি হয়। অনেক সময় ফোনের ব্যাটারির চার্জ 10 শতাংশে নেমে গেলেও আমরা ফোন ব্যবহার করতে থাকি। এরফলে ফোনের ব্যাটারির ওপর চাপ পড়ে।