পরিবেশ দূষণের হাত থেকে ত্বককে বাঁচানোর কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

রূপচর্চা/বিউটি-টিপস May 4, 2017 654
পরিবেশ দূষণের হাত থেকে ত্বককে বাঁচানোর কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

গত কয়েক দশকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে পরিবেশ দূষণের মাত্রা। থেমে থাকেনি সেই সম্পর্কিত রোগের প্রকোপও। পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন এশিয়া মহাদেশের মধ্যে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত মৃত্যুর বিচারে চিনকেও পিছনে ফলে দিয়ছে আমাদের দেশ ভারত। এখানেই শেষ নয়, ২০১৫ সালে পরিবেশ দূষণের জন্য মৃত্য়ু হয়েছে প্রায় ৩২৮৩ জনের। যেখানে চিনে এই সংখ্য়াটা ৩২৩৩ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশ করা এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালে দূষণের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা যেখানে ছিল প্রায় ২০০০ জন/প্রতিদিন। সেখানে এই সংখ্যাটা ২০১৫ সালে প্রায় দু গুণ বেড়ে গেছে।


আপনার কী মনে হয়, পরিবেশ দূষণের প্রভাবে শুধু শরীর অসুস্থ হয়, তা নয় কিন্তু! শরীরের পাশপাশি ত্বকের উপরও এর বিরূপ প্রভাব পরে। মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে একাধিক ত্বকের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে। যেমন- ত্বকের বয়স বেড়ে যায়, সেই সঙ্গে স্কিন অ্যালার্জি এমনকী স্কিন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই তো পরিবেশ দূষণের হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করা আমাদের সকলেরই প্রথম কাজ। আর এই কাজটি করবেন কীভাবে? আছে কোনও প্ল্যান? চিন্তা নেই, আজ বোল্ডস্কাই বাংলায় এমন কিছু নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা মেনে চললে দূষণের করাল প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে আপনার স্কিন।


কী সেই সব নিয়ম? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।


১. ভাল করে মুখ পরিষ্কার করতে হবে

ত্বকের উপরিঅংশে জমে থাকা দূষিত উপাদানের স্থরকে সরিয়ে ফেলতে দিনের শেষে ভাল করে মুখ পরিষ্কার করা একান্ত প্রয়োজন। আর যদি আপনি কোনও মেট্রোপলিটন সিটিতে বাস করেন তাহলে তো বারে বারে মুখ ধুতে হবে। কারণ এই সব দূষিত পদার্থগুলি স্কিনের জন্য একেবারেই ভাল নয়। প্রসঙ্গত, আপনি যে ভাল করে মুখ ধুয়েছেন তা বুঝবেন কীভাবে? খুব সহজ একটা পদ্ধতি রয়েছে। মুখ পরিষ্কার করার পর যদি দেখেন ত্বক অমসৃণ মতো হয়ে গেছে, তাহলে বুঝবেন তখনও ত্বকে ময়লা জমে আছে। সেক্ষেত্রে আরেকবার ক্লিন্সার দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিতে হবে।


২. স্কার্ব ব্যবহার জরুরি

প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে স্নান করেন নিশ্চয়। সে সময় ভাল করে স্কার্বার দিয়ে গা এবং মুখ পরিষ্কার করবেন। এমনটা করলে দূষিত কেমিকেল, অতিরিক্ত তেল এবং টক্সিক উপাদান সব ধুয়ে যাবে। ফলে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে আপনার স্কিন।


৩. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে

পরিবেশ উপস্থিত ফ্রি রেডিক্যালস বা ক্ষতিকর উপাদান তখনই আপনার শরীর এবং ত্বকের ক্ষতি করতে পারবে, যখন আপনি বেশি করে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাবেন না। আসেল এই উপাদানটি একাধিক রোগের প্রকোপ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই এই বিষ বাষ্পের মধ্যে সুস্থ এবং সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে হলে প্রতিদিন সবুজ শাক-সবজি এবং ফল বেশ করে খেতে হবে। প্রসঙ্গত, দূষণের হাত থেকে স্কিনকে বাঁচাতে ভিটামিন সি এবং ই খুব কাজে লাগে। তাই যে সব বিউটি প্রডাক্টে এই দুটি উপাদান রয়েছে, তেমন জিনিসের ব্যবহার বাড়াতে পারেন।


৪. ময়েসচারাইজারের ব্যবহার জরুরি

পরিবেশে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে ময়েসচারাইজারের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই বিশেষ ধরনের ক্রিমটি ত্বকের উপরিঅংশে একটা ঢাল তৈরি করে দেয়। ফলে ক্ষতিকর উপাদানেরা সেই ঢাল ভেদ করে আর ত্বক অব্দি পৌঁচাতে পারে না। সেই সঙ্গে ত্বককে আদ্র এবং তুলতুলে রাখতেও ময়েসচারাইজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।


৫. সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না

বাড়ি থেকে বেরনোর সময় সান স্ক্রিন লাগাতে কখন ভুলবেন না। কারণ সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে বাঁচাতে এই বিউটি প্রডাক্টটি বাস্তবিকই দারুন কাজে দেয়। প্রসঙ্গত, সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে নানা ধরনের ত্বকের রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা সান স্ক্রিন লাগালে একেবারে হয় না বললেই চলে।


৬. পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া জরুরি

ত্বককে যত আদ্র রাখবেন, তত পরিবেশ দূষণের প্রভাব কমবে। সেই সঙ্গে স্কিন আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। তাই তো দিনে কম করে ৩-৪ লিটার জল খাওয়া মাস্ট! প্রসঙ্গত, ত্বকের অন্দরে জলের মাত্র ঠিক রাখতে জলই যে একমাত্র কাজে আসে, এমন নয়। যে সব ফলে জলের মাত্রা বেশি থাকে, তেমন ফল খেলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।