কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে এই রোগগুলি হবেই হবে!

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস April 15, 2017 1,307
কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে এই রোগগুলি হবেই হবে!

আমাদের না কিছু চারিত্রিক সমস্যা আছে। যেমন ধরুন, আমাদের যেটাই বারণ করা হয়, ৮-৮০ যেন সেই কাজটাই বেশি করে করেন। এতে বিপদ যে হয় না, তা নয়, তবু যেন মানসিকতার পরিবর্তন করতে কেউ-ই চান না। এত কথা এই কারণে বলছি, কারণ সেই কোন কাল থেকে চিকিৎসকেরা গলা ফাটিয়ে ফাটিয়ে বলে আসছেন যে কোল্ড ড্রিঙ্ক শরীরের পক্ষে ভাল নয়।


তবু কজন শুনছেন বলুন! পরিসংখ্যান বলছে সংখ্যাটা বেশ কম। এই তো গরম কাল চলছে। এখন দেখবেন কোল্ড ড্রিঙ্কের বিক্রি কেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। তাই তো এই প্রবন্ধে কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে কী কী বিপদ হতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল। এর পরেও যদি আপনাদের সিদ্ধান্ত না বদলায়, তাহলে বুঝতে হবে সারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই আত্মহত্যার ইচ্ছাতেই এমনটা করছেন।


এক বোতল কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে আমাদের শরীরে প্রায় ১৪০ গ্রাম ক্যালোরি প্রবেশ করে। এই পরিমাণ ক্যালোরিকে বার্ন করার জন্য যে মাত্রায় শরীরচর্চা করা উচিত, তা আমাদের মধ্যে কজনই বা করেন বলুন!


ফলে শরীরের জমতে থাকা এই ক্যালোরি এক সময়ে গিয়ে ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর ওজন বাড়লে কী হতে পারে তা নিশ্চয় সবারই জানা। প্রসঙ্গত, অনেকে বলেন ডায়েট সোডায় যেহেতু চিনি থাকে না। তাই এটি খেলে শরীরের কোনও ক্ষতিই হয় না। এই ধরণা কিন্তু একেবারে ভুল।


কারণ একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, ডায়েট সোডায় চিনি না থাকলেও এমন কিছু উপাদান থাকে, যা আমাদের শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। শুধু তাই নয়, মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ডায়েট সোডা খেলে শরীরের একাধিক অঙ্গের ক্ষতি হয়, ফলে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।


কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে কীভাবে আমাদের শরীরের ক্ষতি হয়, সেই বিষয়টির উপরই আলোকপাত করার চেষ্টা করা হল এই প্রবন্ধে।


▶বেশি মাত্রায় কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা খেলে কিডনি ফাংশন ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। আসলে এই ধরনের পানীয়, ইউরিনে অ্যাসিড এবং খনিজের ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। যে কারণে কিডনি স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।


▶প্রতিদিন ২ ক্যান কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় প্রায় ৫০ শতাংশ। তাহলে বুঝতেই পারছেন তো এমন ধরনের পানীয় হয়তো আপনাদের তেষ্টা মেটায়, মানসিক শান্তিও দেয়। কিন্তু বাস্তবে আপনাকে হার্টকে একেবারে অকেজ করে দেয়।


▶যেমনটা আগেও আলোচনা করেছি যে এই ধরনের পানীয়তে ক্যালোরি মাত্রা খুব বেশি থাকে। ফলে কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা বেশি মাত্রায় খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা বিগড়ে যাওয়ার কারণে আরও নানা ধরনের রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়।


▶প্রতিদিন কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে চোখে পরার মতো কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি ঘটে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ে। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে কোল্ড ডিঙ্ক খাওয়ার সঙ্গে স্ট্রোকেরও একটা যোগ রয়েছে। তাই সাবধান!


▶ঠান্ডা পানীয়= লাইফ স্টাইল ডিজিজ, এই ধারণাটি বাস্তবিকই সত্য। কারণ বেশ কিছু গবেষণা পত্র ইতিমধ্যেই একথা প্রমাণ করে ছেড়েছে যে, কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে শুধু কোলেস্টেরল বা হার্টে অ্যাটাকের সম্ভবনাই বাড়ে না, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাকাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আসলে কোল্ড ড্রিঙ্কে প্রচুর মাত্রায় আর্টিফিশিয়াল সুইটনার ব্যবহার করা হয়, যা নানা দিক থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে।


▶আমাদের মধ্যে অনেকেরই তেষ্টার সময় প্রথম পছন্দ হয় কোল্ড ড্রিঙ্ক। এমন অভ্যাস কিন্তু একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এই ধরনের পানীয়তে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মস্তিষ্কের কাছে সিগনাল যায় যে শরীরে জলের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে একের পর এক নানা ধরনের সমস্য়া দেখা দিতে শুরু করে।


▶ডায়েট সোডা এবং কোল্ড ড্রিঙ্কে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। তাই তো এমন ধরনের পানীয় বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা খুব বেড়ে যায়। ফলে ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই প্রেসারের রোগীদের কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।


▶কোল্ড ড্রিঙ্কের সঙ্গে অ্যালকোহল মিলিয়ে পান করলে শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব পরে। তাছাড়া ডায়েট সোডায় এসপার্থেম নামে একটি উপাদান থাকে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই এবার থেকে ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার আগে একবার ভাববেন, আপনি বিষ পান করছেন না তো!


▶ডায়েট সোডা এবং বেশিরভাগ কোল ড্রিঙ্কেই সোডিয়াম বেঞ্জোএট নামে একটি উপাদান থাকে, যা কোষের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।


▶ডায়েট সোডায় অ্যাসিডিক এলিমেন্ট খুব বেশি থাকে। যে কারণে এই ধরনের পানীয় খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নানাবিধ দাঁতের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।


সূত্রঃ বোল্ডস্কাই