দাঁত দিয়ে নখ কাটেন! তা হলে এই বিরল গুণ রয়েছে আপনার মধ্যে

লাইফ স্টাইল April 14, 2017 1,479
দাঁত দিয়ে নখ কাটেন! তা হলে এই বিরল গুণ রয়েছে আপনার মধ্যে

যাঁরা এই কাণ্ডটির মধ্যে থাকেন, তাঁদের খেয়ালই থাকে না বিষয়টা। তাঁরা আত্মমগ্ন হয়ে কেটেই চলেন নখ। কেবল এই কুট-কুট চালাতে চালাতে যখন নখের চামড়া উঠে যায়, তখন মালুম পান, ব্যাড হ্যাবিটের ঠেলা।


বদ অভ্যাসের তালিকার গোড়ার দিকেই রয়েছে দাঁত দিয় নখ কাটা। ইস্কুলে মাস্টারমশাই-দিদিমণিরা বকে বকে হেদিয়ে গিয়েছিলেন, মনে পড়ে? বাড়িতে মা প্রয়াশই চড়টা-চাপড়টা লাগাতেন। কিন্তু এসবে কোনও কাজ হয়নি। আজও সময় পেলেই হাত নিজে নিজেই চলে যায় দাঁতে। আর তার পরে কুট-কুট-কুট।


এই স্বভাবের জন্য কারোর কারোর প্রেমিকা পালিয়েছে, কেউ বয়ফ্রেন্ড পর্যন্ত গড়াতেই পারেনি। আপিস-কাছারিতে ‘নখ খাওয়া’ পাবলিকরা মার্কড হয়ে থাকেন। কিন্তু যাঁরা এই কাণ্ডটির মধ্যে থাকেন, তাঁদের খেয়ালই থাকে না বিষয়টা। তাঁরা আত্মমগ্ন হয়ে কেটেই চলেন নখ। কেবল এই কুট-কুট চালাতে চালাতে যখন নখের চামড়া উঠে যায়, তখন মালুম পান, ব্যাড হ্যাবিটের ঠেলা।


এত খারাপ দিক থাকা সত্ত্বেও, দাঁত দিয়ে নখ কাটার এক অতি সুলক্ষণকে ব্যক্ত করলেন মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল মনোবিজ্ঞানী। ‘জার্নাল অফ বিহেভিয়র থেরাপি অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল সাইকিয়াট্রি’-তে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে তাঁরা দেখিয়েছেন, এই বিশেষ স্বভাবটি যাঁরা বয়ে চলেছেন, তাঁরা এক বিরল গুণের অধিকারী। এতদিন পর্যন্ত মনোবিজ্ঞান এটাই জানিয়েছে যে, মূলত উদ্বেগজনিত কারণেই মানুষ দাঁত দিয়ে নখ কাটে।


কিন্তু মনোবিজ্ঞানী কিয়েরোন ও’কনর উপরোক্ত নিবন্ধে জানিয়েছেন, দাঁত দিয়ে নখ কাটার পিছনে রয়েছে আরও গভীর এক কারণ। তাঁর মতে, যেসব মানুষ অতিরিক্ত মাত্রায় খুঁতখুঁতে, তাঁরাই বেশি মাত্রায় এই কাণ্ডটি করে থাকেন। আর একটু তলিয়ে ভাবলে এক প্রকার অতৃপ্তিই দাঁত দিয়ে নখ কাটার পিছনে কাজ করে। আসলে এটা পার্ফেকশনিস্ট মানুষের লক্ষণ।


সৃজনশীল মানুষের মধ্যে দাঁত দিয়ে নখ কাটা, চুলে বার বার আঙুল চালানো, ভুরু অথবা চোখের পাতা ছেঁড়া ইত্যাদি মুদ্রাদোষ প্রায়শই দেখা যায়। সত্যজিৎ রায় দাঁত দিয়ে রুমাল কাটতেন।


দিনে একটা নতুন রুমাল লাগত তাঁর। একথা স্বয়ং বিজয়া রায় তাঁর স্মৃতিকাথায় জানিয়েছিলেন। পারফেকশনের জন্য খুঁতখুঁতেপনাই এক উদ্বেগের সৃষ্টি করে এবং তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় এই ধরনের মুদ্রাদোষের মধ্য দিয়ে, এমন কথাই জানিয়েছেন ও’কনর ও তাঁর সহগামী মনোবিজ্ঞানীরা।-এবেলা