সাধারণ শসার অসাধারণ গুণ

দেশে সহজে পাওয়া যায় এরকম সবজির মধ্যে অন্যতম শসা। সব ঋতুতে সব এলাকায় পাওয়া যায় এটি। শসার রয়েছে অনেক গুণ। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শসাকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিৎ।

• আসুন জেনে নেই শসার কিছু যাদুকরী গুণ সম্পর্কে. . .

অসীম শক্তির উৎস

প্রতিদিন আমাদের শরীরে যেসব ভিটামিনের দরকার হয়, এর বেশির ভাগই আছে শসার মধ্যে। ভিটামিন এ, বি ও সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বাড়ায়। সবুজ শাক ও গাজরের সঙ্গে সালাদ হিসেবে শসা দারুণ। শসা খেতে পারেন জুস বানিয়েও।

পানির অভাব পুরণ

ধরুন, আপনি এমন কোথাও আছেন, যেখানে হাতের কাছে পানি নেই; কিন্তু শসা আছে। বড়োসড়ো একটি শসা চিবিয়ে খেয়ে নিন। পিপাসা মিটে যাবে, কারণ শসার ৯০ শতাংশই পানি।

শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ

কখনও কখনও আপনি শরীরের ভেতরে-বাইরে প্রচণ্ড উত্তাপ অনুভব করেন। দেহে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এ অবস্থায় একটি শসা খেয়ে নিন, আরাম পাবেন। তাছাড়া সূর্যের তাপে ত্বকে জ্বালা অনুভব করলে শসা কেটে ত্বকে ঘষে নিন। নিশ্চিত ফল পাবেন।

কিডনীর পাথর গলায় শসা

শসার মধ্যে যে পানি থাকে তা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে অনেকটা যাদুর মতো কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথরও গলে যায়।

ত্বকের বিশেষ উপকারী

শসায় উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিকন আছে যা ত্বকের পরিচর্যায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। এজন্য ত্বকের পরিচর্যায় গোসলের সময় অনেকে শসা ব্যবহার করেন।

শসা ওজন কমায়

শসায় উচ্চমাত্রায় পানি ও ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে। ফলে যারা দেহের ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য শসা আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করবে। যারা ওজন কমাতে চান, তারা স্যুপ ও সালাদে বেশি বেশি শসা ব্যবহার করবেন। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

চোখের জন্য দরকারী

চোখের প্রদাহ প্রতিরোধক উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকায় ছানি পড়াসহ চোখের জন্য খুব দরকারী শসা।

রোগমুক্তি

শসায় সিকোইসোলারিসিরেসিনোল, ল্যারিসিরোসিনোল ও পিনোরেসিনোল-সহ বেশকিছু আয়ুর্বেদ উপাদান আছে। তাই শসা ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি দেয়, কোলেস্টেরল কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। শসায় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা আছে। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নেমে আসে। এতে গেঁটেবাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

জীবণুনাশক

দুর্গন্ধযুক্ত সংক্রমণ আক্রান্ত মাড়ির চিকিৎসায় শসা দারুণ কাজ করে। গোল করে কাটা এক স্লাইস শসা জিহ্বার ওপরে রেখে সেটি টাকরার সঙ্গে চাপ দিয়ে আধ মিনিট রাখুন। শনার সাইটোকেমিক্যাল এর মধ্যে বিশেষ বিক্রিয়া ঘটিয়ে আপনার মুখের জীবাণু ধ্বংস করবে। সজীব হয়ে উঠবে আপনার নিঃশ্বাস।

চুল ও নখের জন্য দরকারী

শসার মধ্যে যে খনিজ সিলিকা থাকে তা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়া শসার সালফার ও সিলিকা চুলের বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।

শারীরিক অস্বস্তিতে

ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকের মাথা ধরে। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে। শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার আছে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক টুকরো শসা খেয়ে নিলে ভোরে ঘুম থেকে উঠার পর এ সমস্যা থাকবে না।

প্রতি ১০০ গ্রাম শসায়

খাদ্যআঁশ আছে প্রায় ০.৬ গ্রাম, শর্করা ৩.৬১ গ্রাম এবং চিনি ১.৬৮ গ্রাম। এতে আরো রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, কিউকারবিটাকিন্স, লিগনান্স এবং ফ্লাভনয়েডসসহ অজস্র খাদ্য উপাদান।