খেতে বসে যে বদভ্যাসের কারণে বদহজম হয়

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস April 6, 2017 799
খেতে বসে যে বদভ্যাসের কারণে বদহজম হয়

প্রায়ই বদহজম, পেটে অস্বস্তি, পেট ফাঁপার সমস্যা লেগেই রয়েছে। অথচ ভাবছেন, কী এমন খেলাম? প্রতিদিনতো তো বাড়ির খাবারই খাচ্ছি। পরিমাণেও বেশি খাচ্ছি না। তবে কেন এমনটা হয়? দেখুন তো এই ৩টি বদভ্যাস আপনার রয়েছে কিনা? থাকলে আজই বদলে ফেলুন। বদহজমের প্রধান কারণ এই তিন বদভ্যাস-


খেতে বসে প্রচুর পানি খাওয়া: খেতে বসে পানি না খাওয়াই ভাল। যদি পানি ছাড়া খেতে না পারেন তা হলে ছোট ছোট চুমুক দিন গ্লাসে। অল্প অল্প পানি খাদ্যানালীতে খাবারের চলমানতা ভাল রাখবে। কিন্তু অতিরিক্ত পানি খেলে খাওয়ার পর অস্বস্তি ও বদহজমের সমস্যা হতে পারে।


আবার খাওয়ার পর পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড নির্গত হয়। হজমের জন্য এই অ্যাসিড অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। খুব বেশি পানি খেলে এই অ্যাসিডের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে হজমে সমস্যা হয়। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে ও এক ঘণ্টা পর পানি খান। খেতে বসে প্রয়োজন হলে ছোট ছোট চুমুক দিন।


এক সঙ্গে প্রচুর স্টার্চ ও প্রোটিন খাওয়া: জমিয়ে রাঁধা মাংস দিয়ে পেট ভরে ভাত, বা স্টেকের সঙ্গে ম্যাশড পটেটো। এই ধরনের কম্বিনেশন মানেই সুস্বাদু। প্রচুর পরিমাণ স্টার্চ (ব্রেড, পাস্তা, ভাত বা আলু) ও প্রোটিন (মাছ, চিকেন, মাটন, বিফ বা ডিম) এক সঙ্গে খেলে বদহজম ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা হতে পারে।


তার কারণ, স্টার্চ খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়, কিন্তু প্রোটিনের পরিপাক ধীর গতিতে হয়। কিন্তু যেহেতু পাকস্থলীতে সব মিশে থাকে তাই যতক্ষণ না প্রোটিন পরিপাক সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততক্ষণ স্টার্চকেও অপেক্ষা করে থাকতে হয়। আর স্টার্চ বেশিক্ষণ থাকলে ফারমেন্ট করে যায় ও গ্যাস উৎপন্ন করে।


এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারলে স্টার্চ খেয়ে নিয়ে তারপর প্রোটিন খান। যদি মনে হয় মাংস বেশি খাবেন, তাহলে সে দিন ভাতের পরিমাণ একটু কমিয়ে দিন। মাংস প্রিয় বলে বেশি ভাত খেয়ে নিলেই সমস্যায় পড়বেন।


খাবারের সঙ্গে বরফ ঠান্ডা পানি খাওয়া: আবার সেই পানির প্রসঙ্গই ঘুরে এল। খেতে বসে পানি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ছোট ছোট চুমুকের কথা আগেই বলা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই আবার একদম ফ্রিজ থেকে বের করা ঠান্ডা পানি ছাড়া খেতে পারেন না। এতে কিন্তু সমস্যা বাড়ে। খেতে বসে পানি খেতে হলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি খান।


বেশি ঠান্ডা পানি খাবেন না। বরফ ঠান্ডা পানি রক্তনালী সংকোচন করে। ফলে খাবার হজম হতে ও খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ শোষণে দেরি হয়। সেই সঙ্গেই ঠান্ডা পানি খাবারের সঙ্গে খাওয়া যে কোনও ফ্যাট জমিয়ে দিতে পারে।


যার ফলে ফ্যাট হজম করা আরও কঠিন হয়। উপরন্তু, ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে শরীরের এনার্জি হজমের কাজে ব্যয় না হয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। ফলে খাওয়ার পর অস্বস্তি বাড়ে।