মন ভালো করার আজব সাতটি দাওয়াই!

লাইফ স্টাইল April 3, 2017 1,103
মন ভালো করার আজব সাতটি দাওয়াই!

২১ শতকের ইয়ং ব্লাডেরা বেড়ে উঠছে প্রতিযোগিতার মাঝে। সকালে চোখ খোলা থেকে রাতে শুতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত একটাই চিন্তা, ক্লাসে ফার্স্ট হব কী করে, অফিসে সেরার সেরা হওয়ার অন্য কোনও উপায় আছে কী! এই সবই নানান চিন্তা চলছে মাথায়। ফলে কোনও কোনও সময় মনের ক্লান্ত হয়ে পড়াটা মোটেও অবাক করার মতো ঘটনা নয়।


আর মন যখন ভাল থাকে না, তখন ঘুর পথে অবসাদন কখন যে আমাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে তা অনেক ক্ষেত্রে বোঝাই যায় না।


থ্রি ইডিয়েট সিনেমার একটা সিন মনে আছে। যেখানে লবো নামের এক ছাত্র জীবন সংগ্রমে লড়ে উঠতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কী হয়েছিল তার, মনে আছে আছে কি?


আমাদের সঙ্গে প্রায়শই যা ঘটনা ঘটে থাকে, তাই-ই হয়েছিল ২৩ বছর বয়সী ওই ছাত্রের সঙ্গেও। প্রথমে প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়া। তার পর নানা কারণে পিছিয়ে পড়া। মানসিক চাপ, সেখান থেকে অবসাদ এবং মৃত্যু। তাই তো নিজেদের মনকে আগলে রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু বিপদ!


মন খারাপ থেকে দূরে থাকাটা সম্ভব নয়। কিন্তু এমন কিছু সহজ পদ্ধতি আছে, যাদের সাহায্য নিলে খুব সহজেই মন খারাপ বা অবসাদের মতো বিষাক্ত সাপেদের মেরে ফেলা অনেকাংশেই সম্ভব হয়। কী এই সব সহজ পদ্ধতি? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।


প্রসঙ্গত, নানা কারণে অবসাদের শিকার হতে পারে কেউ। যেমন- জীবনযাত্রা, কাজের চাপ, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস, জেনেটিক কারণ এবং মস্তিষ্কে কেমিকেল ইমব্যালেন্স। এই লেখায় আলোচিত পদ্ধতিগুলি এইসব কারণগুলির প্রভাবকে কমিয়ে মনকে পুনরায় চাঙ্গা করে চুলতে দারুন কাজে আসে। তাই তো মন খারাপ নামক সেই বিষাক্ত সাপটি আপনাদের দোরগোড়ায় আসার আগেই এই লেখাটি পড়ে নিজেকে প্রস্তুত করে নিন। কে বলতে পারে কখন কী পরিস্থিতি এসে যায়!


ডিপ্রেশন বা মন খারাপের প্রকোপ কমাতে নানাবিধ আধুনিক চিকিৎসা আছে। তবে তার আগে এই লেখায় আলোচিত সহজ পদ্ধতিগুলি বাস্তবায়িত করে দেখতে পারেন। উপকার যে পাবেনই, সে কথা হলফ করে বলতে পারি।


১) মন খারাপ থাকবে যখন, তখন বেশি করে মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করবেন। তাতে দেখবেন মন ভাল হয়ে যাবে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে যে কাউকে সাহায্য করার সময় নানা কারণে আমাদের শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে মন একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।


২) মন খারাপ থাকলেই প্রথম যে কাজটি আমরা করি। তা হল সমাজের থেকে নিজেদের আলাদা করে নিই। ফলে মন খারাপ আরও বেড়ে গিয়ে এক সময়ে তীব্র ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই তো মন খারাপের সময় যত বেশি করে সম্ভব পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাবেন। এমনটা করলে দেখবেন মন ভাল হতে শুরু করে দেবে।


৩) মন ভাল না থাকলে অল্প সময় একটু রোদে হাঁটাহাঁটি করবেন। এমনটা করলে কি হবে জানেন? আমাদের শরীরে ভিটামিন-ডি এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে, যা মস্তিষ্কে ডোপামিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিয়ে মনকে একেবারে আনন্দে ভরিয়ে দেবে।


৪) মনের অবস্থা যখন একেবারে ঠিক নেই, তখন নিজের চারিপাশটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলে দেখবেন মন হালকা হতে শুরু করেছে। আসলে যত সুন্দর পরিবেশে থাকবেন, তত তার সুপ্রভাব পড়বে মনের ওপর। ফলে মন খারাপ হওয়ার কোনও সুযোগই থাকবে না।


৫) মিউজিক এবং আর্ট থেরাপির মাধ্যমে ডিপ্রেশন কমিয়ে ফেলে মনকে চাঙ্গা করে তোলা বাস্তবিকই সম্ভব। তাই তো মন খারাপের সময় গান শোনার পরামর্শ দেন মনোবিরা। এক্ষেত্রে নিজের পছন্দ মতো যে কোনও নতুন কিছু শিখতে শুরু করে দিন। ফল পাবেন একেবারে হাতেনাতে।


৬) পোষ্য জন্তু মনের ক্ষত ভরিয়ে দিতে দারুনভাবে সাহায্য করে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বাড়িতে পোষা জানোয়ার থাকলে তার খেয়াল রাখতে গিয়ে এতটাই সময় চলে যায় যে খারাপ চিন্তা করার অবকাশই পাওয়া যায় না। ফলে মন খারাপ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, একটি কেস স্টাডিতে একথাও প্রমাণিত হয়েছে যে, যাদের বাড়িতে পোষা মাছ রয়েছে তারা যদি মন খারাপের সময় তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তাহলে মানসিক অবসাদ অনেকাংশেই হ্রাস পায়।


৭) যতটা সম্ভব কফি এবং ঐ জাতীয় পানীয় কম খাবেন, যাতে ক্যাফেইনের মাত্রা বেশি রয়েছে। কারণ ক্যাফেইন মানসিক অবসাদকে আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।