শিয়া-সুন্নি বিয়ে কি ইসলামে জায়েজ?

ইসলামিক শিক্ষা March 25, 2017 2,557
শিয়া-সুন্নি বিয়ে কি ইসলামে জায়েজ?

প্রশ্ন : shia and sunni marriage, is it permissible in islam? (ইসলাম ধর্মে শিয়া ও সুন্নির মধ্যে বিয়ে কি জায়েজ?)


উত্তর : আপনি একটি কঠিন প্রশ্ন করেছেন। ইসলামের নামে একটি ফেরকা, যারা ইসলামের নাম দিয়ে ইসলামের যে স্বচ্ছ, স্পষ্ট ও সরল যে ধারা আছে, সেই ধারা থেকে বিচ্যুত হয়েছে, এই রকম একটি ফেরকার নাম হচ্ছে শিয়া। তারা মূলত রাফেদি। পরবর্তী সময়ে তারা নিজেদের শিয়া হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তারা নিজেদের শিয়াতু আলী বলে দাবি করে।


কিন্তু হজরত আলী (রা.)-এর সময়ে তাদের আবির্ভাব ঘটেনি। বরং আলী (রা.)-এর পরে হুসাইন ইবনে আলী (রা.) ৬১ হিজরি সনে যখন কারবালার ময়দানে শাহাদাত বরণ করেন, সেখান থেকেই একটা ধারা, এই বিচ্যুত চিন্তাধারা নিয়ে এগিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে সেটা একটা ফেরকায় পরিণত হয়। অবশ্য ফেরকাতে পরিণত হয়েছে আরো অনেক পরে।


তাদের চিন্তাধারায়, তাদের আকিদা বিশ্বাসে বড় ধরনের পরিবর্তন, যেটি নবী (সা.)-এর দেখানো যে দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, কর্মনীতি রয়েছে, নির্দেশনা রয়েছে, এগুলোর পরিপন্থী অনেক কিছু সেখানে একসাথ হয়ে গিয়েছে। এমন আকিদা সেখানে সংযোগ করা হয়েছে, যে আকিদা নবী (সা.) যে আকিদা আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, তার পরিপন্থী।


ফলে একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, তাদের সাথে যদি বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি হয়, তাহলে সেখানে বিভ্রান্তি বা বড় ধরনের পথভ্রষ্টতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ আশঙ্কা থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতার কারণে একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, তাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক হবে না। বৈবাহিক সম্পর্ক জায়েজ নেই তাদের সঙ্গে।


আবার আরেক দল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, যেহেতু তাদের আকিদা বিশ্বাসের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে, এবং অনেক আকিদা বিশ্বাসের মধ্যে কুফরি রয়েছে, ফলে তাদের সাথে যারা আহলে সুন্নতের জামাত, তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক এবং আত্মিক সম্পর্ক অথবা দ্বীনি সম্পর্ক হবে না, তাদের সাথে এতটুকুই সম্পর্ক হবে, যে তাদের সাথে সৌজন্য সম্পর্ক রক্ষা করা যাবে।


আমরা মনে করে থাকি এই, যেহেতু ইসলামের নামে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তি মুসলমানদের মধ্যে এসেছে, মুসলিম উম্মাহর আরো বিভ্রান্তির দিকে যাওয়ার আশঙ্কা যেখানে দেখা যাবে, সেখানে উচিত হচ্ছে যথা সম্ভব বিরত থাকা।


যদি কেউ যথাসম্ভব বিরত থাকেন, এটাই তার জন্য ভালো কাজ, কারণ অন্যথায় তিনি এই বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে নিজেও পথভ্রষ্ট হয়ে যেতে পারেন এবং তাদের যে আকিদা বিশ্বাস আছে, সে আকিদা বিশ্বাসে পথভ্রষ্ট হয়ে তিনি সুন্নাহ ও সহিহ আকিদা থেকে নিজেকে বিচ্যুত করে ফেলতে পারেন।


তাই ভ্রান্ত আকিদাতে নিজেকে লিপ্ত করার আগেই সঠিকভাবে চিন্তা করা দরকার যে আমি সেখানে অগ্রসর হব কি না। এ জন্য ওলামায়ে কেরাম এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলেছেন।