সুস্থ থাকতে খাবার খাওয়ায় এই নিয়মগুলো মেনে চলুন

সাস্থ্যকথা/হেলথ-টিপস March 23, 2017 1,212
সুস্থ থাকতে খাবার খাওয়ায় এই নিয়মগুলো মেনে চলুন

অনেকেই মনে করেন যে কম খাওয়াটাই স্বাস্থ্যকর। আবার এমন ধরণাও আছে যে কার্বোহাইড্রেট না খেলে ওজন ঠিক থাকে, অনেক রোগও হয় না। আচ্ছা এই ধারণাগুলি কতটা ঠিক?


মজার বিষয় হল এই সব বাজার চলতি তথ্যগুলি ঠিক কিনা, তা না জেনেই অনেকে অন্ধের মতো এই সব নিয়ম মানতে শুরু করেন। ফলে শরীর তো ভাল হয়ই না, বরং উলটো ঘটনা ঘটতে শুরু করে। তাই তো নিজের ডায়েট সম্পর্কে জ্ঞান থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু বিপদ!


কী ধরনের খাবার তাহলে শরীরের পক্ষে ভাল? এই উত্তর জানতে গেলে যে চোখ রাখতে এই লেখায়। এই লেখায় খাবার সম্পর্কিত যে যে নিয়মগুলির উপর আলোকপাত করা হয়েছে, সেগুলি মেনে চললে কোনও দিন অপুষ্টির শিকার হবেন না। সেই সঙ্গে অনেক রোগের হাত থেকেও রক্ষা পাবেন।


রোগের সঙ্গে খাবারের কী সম্পর্ক? শরীর যখন তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না, তখন শরীর ভাঙতে শুরু করে। আর যখনই এমনটা হয়, তখন দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে অনেক রোগ এসে শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই তো ঠিক সময় ঠিক খাবারটা খাওয়া একান্ত প্রয়োজন।


এখন তাহলে প্রশ্ন, কী কী নিয়ম মেনে চললে শরীরের কখনও পুষ্টির অভাব হবে না? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।


১. কর্বোহাইড্রেট খাওয়া একেবারে ছেড়ে দেবেন না

আপনার প্রতিদিনের ডায়েট থেকে যদি কার্বোহাইড্রেটকে একেবারে ছেঁটে ফেলেন, তাহলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। কারণ এই উপাদানটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখার পাশপাশি এনার্জির যোগান দিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো প্রতিদিন অল্প করে হলেও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।


২. খিদে চেপে রাখবেন না

ভারি খাবার খাওয়ার মাঝে অল্প করে মাঝে মধ্যে ফল বা দই খেতে হবে। যেমন ধরুন দুপুরের খাবার খাওয়ার পর একেবারে রাতে গিয়ে খেলে চলবে না। মাঝে অল্প করে মুখ চালাতে হবে। কারণ অনেকক্ষণ খিদে চেপে থাকার পর খাবার খেলে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। আর এমনটা হলে ওজনও বাড়তে শুরু করে।


৩. মশলা দেওয়া খাবার খাবেন

শরীর গঠনে নানা ভাবে কাজে লাগে মশলা। একদিকে এরা যেমন হজম ক্ষমতা বাড়ায়, তেমনি রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে এবং খিদে কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর সব থেকে ভাল জিনিস হল মশলায় ক্যালোরি একেবারে থাকে না। ফলে মশলার কারণে মোটা হয়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। তবে বেশি মাত্রায় মশলা দেওয়া খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল নয়। তাই এদিকটায় খেয়াল রাখাটাও জরুরি।


৪. টিভি দেখতে দেখতে ভাজাভুজি খাওয়া একেবারে চলবে না

আমাদের মধ্যে অনেকেই টিভি দেখতে দেখতে পপকর্ন বা ঐ জাতীয় খাবার খেতে খুব পছন্দ করেন। এই অভ্যাস কিন্তু শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। কারণ ভাজাভুজি বা পপকর্ন জাতীয় খাবার যত খাবেন, তত কিন্তু ওজন বাড়বে। সেই সঙ্গে শরীরে জাঁকিয়ে বসবে নানাবিধ রোগ।


৫. পানি খাবেন পর্যাপ্ত পরিমাণে

কোনও সময় শরীরে যেন পানির ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। কারণ শরীর যদি ভিতর থেকে শুকিয়ে যায়, তাহলে ডিহাইড্রেশন হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর এমনটা হলেই একাধিক রোগ একে একে থাবা বসাতে শুরু করে। তাই দিনে কম করে ৩-৪ লিটার পানি খাওয়া একান্ত প্রয়োজন।


৬. ব্রেকফাস্টের সময় খালি পেটে থাকবেন না

দিনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল ব্রেকফাস্ট। তাই তো এই সময় পেটকে খালি রাখাটা মোটেও উচিত নয়। প্রসঙ্গত, ব্রেকফাস্টে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- ওটস, ফল প্রভৃতি বেশি করে খাবেন। তাতে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকবে, সেই সঙ্গে এনার্জিরও ঘাটতি হবে না।


৭. খাবার ভাল করে চিবিয়ে খাবেন

এমনটা করলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমবে। সেই সঙ্গে বদহজমের আশঙ্কাও হ্রাস পাবে। আসলে পাকস্থলির কিছুটা সময় লাগে ব্রেণকে জানাতে যে পেটটা ভরে গেছে। ভাল করে চিবিয়ে খেলে পাকস্থলি আর ব্রেনের মধ্যেকার এই কথোপকথন ঠিক মতো হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।


৮. লেবেলটা দেখে কিনুন

কিছু খাবার কেনার আগে লেবেলটা ভাল করে দেখে নিন। জেনে নিন কী কী উপাদান রয়েছে সেই খাবারে। কোনও খারাপ কিছু নেই তো! এইসব জানার পরই প্যাকেটজাত খাবার ক্রয় করুন। এই সাবধানতটা নিলে দেখবেন আপনার শরীরে কোনও খারাপ উপাদান প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে অসুস্থ হয়ে পরার আশঙ্কা কমবে।